• মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ইতালির ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় বাংলাদেশী বড় ধাক্কা খেল ভোলার তুলাতুলি পার্কে বিনোদনের নামে প্রকাশ্যে চলছে অশ্লিলতা ভোলায় সাংবাদিক নাহিদের উপর হামলা কারীদের গ্রেফতারের জন্য মানববন্ধন ভোলার আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সহধর্মিণীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রতিবেশী দেশ সমূহের সাথে সম্পর্কোন্নয়নে ভারতের নতুন করে উদ্যোগ সাবেক সংসদ সদস্য সুমন গ্রেফতার উনাকে পল্লবী থানায় রেখেছেন ইউরোপিয়ান বাংলা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হেলাল, সম্পাদক সুমন, উপদেষ্টা মাহবুবুর রহমান নির্বাচিত নিরাপত্তার স্বার্থে সাকিব কে দেশে না ফেরার পরামর্শ: ক্রিড়া উপদেষ্টা আল্লাহ অহংকারীদের পছন্দ করেন না অস্ট্রিয়া তিন দলীয় কোয়ালিশন সরকারের পথে এগোচ্ছে
বিজ্ঞপ্তি
প্রিয় পাঠক আমাদের সাইটে আপনাকে স্বাগতম এই সাইটি নতুন ভাবে করা হয়েছে। তাই ১৫ই অক্টোবর ২০২০ সাল এর আগের নিউজ গুলো দেখতে ভিজিট করুন : old.bdnewseu24.com

মাহফুজুল আলম এর গল্প সংকলনঃ গল্পঃ ফ্যামিলি টুসকি

মাহফুজুল আলম ফ্লোরিডা (আমেরিকা)
আপডেট : মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২০

মাহফুজুল আলম এর “গল্প সংকলনঃ ১ (প্রকাশমান)” ।

গল্পঃ ছোট্ট হাতের অনামিকা
(অংশ বিশেষ)

পর্ব-১

( “গল্প সংকলন ১” নামে পুস্তক আকারে আগামী বই মেলায় প্রকাশের অপেক্ষায়)

এরপর আমি চোখ বন্ধ করে একা একা ক্রমাগত হাসতে শুরু করলাম। এমন কখনও হয়নি যে তা নয়। হয়েছে, তবে আজ খানিকটা ভিন্ন ছিল। দশ বছর আগে (আমার স্ত্রী) যেমন ছিলেন সেটা ভেবে আমি আজকের সাথে মিলিয়ে নিচ্ছি। সেটা নিতেই হাসির জোয়ার বাড়তে থাকলো। পাশে সহধর্মিণীর মৃদু জ্বালাতন তখন আরও বেশি মধুর হয়ে উঠেছে। সময় গড়ায় ও আরো বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠে। কিন্তু আমি আরও বেশি গভীরে চলে যাচ্ছি স্মৃতির হাত ধরে ধরে।
হঠাৎ আমার নাক টিপে ধরলো যেন নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় এবং আমি যেন ওর দিকে মনযোগ দেই। কি ভাবছি সেটা শোনার জন্য উদ্গ্রীব হয়ে আছে। হ্যাঁ, শেষ-মেষ ওর ঔষধে কাজ হলো। আমি জগতে ফেরত এলাম।
বললাম, — “আচ্ছা কি হয়েছে বলো।”
বললো, — “প্রিয় মিঃ বর, এতোক্ষণ ধরে যে ঘ্যানর ঘ্যানর করছি এবং বার বার জিজ্ঞেস করছি যে, আমাকে নিয়ে কি ভাবছো বলো – সেটা কি কানে যায় না?”
বললাম, –“যাবে না কেন? এতটাই বেশি যায় যে, তোমাকে নিয়ে ভাবতে গেছি সেখানেও তোমার আপত্তি? আমার পার্সোনাল ভাবনার জগতেও যে আমার কোন ঠাঁই নেই। নচেৎ সেখান হতে ফিরে আসতে হবে কেন? আচ্ছা ম্যাডাম, বলুন কি হয়েছে।”

— “তোমার আমাকে ছাড়া পার্সোনাল ভাবনা কি আছে শুনি?”
খানিকটা আদুরে কন্ঠে কিন্তু শাসনের সুরে বললো। কিন্তু তাতে আমার মুখে হাসির পরিমান আরও বেড়ে গেল। ফলে যা হয়, ও আরো ক্ষোভ প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছে।
বললাম,
–”আমি তো আমাকে নিয়ে ভাবছি না। তোমার কথাই ভাবতে পুরোনো দিনে চলে গিয়েছিলাম।”
এবার ও যেটা বললো তাতে অট্টহাসি না দিয়ে পারলাম না। বললো,
— “না, ওখানেও আমাকে ছাড়া একা যেতে পারবে না।”
আমি বললাম,
–“ল্যাও ঠেলা, নিজেকে নিয়ে নিজেই প্রতিদ্বন্দ্বী।” বললো,
–”কথা প্যাঁচাবে না। বলছি ভাবো, তবে আমাকে সাথে করে ভাবো। আমার সাথে তোমার ভাবনা গুলো সেয়ার করো। আমিও মজা পাই।”
ভাবলাম ঠিক বলছে। কিন্তু ওকে আরও একটু চেতিয়ে দিতে বললাম,
–”পাশে শুয়ে আছো, কিন্তু আমার চিন্তা চেতনাতেও সিকুরিটি গার্ড হয়ে সাথে থাকা চাই?”
এবার আর রক্ষা নেই। আমার উপর বেশ চড়াও হয়ে উঠে বললো,
–” হ্যাঁ, চাই। তোমার কোন সমস্যা আছে?” আমার স্ত্রীর কথা শুনে আমি ক্রমাগত হেসেই চলছি।

এবার বললো,
–”রাতে শোয়ার সময় এখনও চশমা পরে আছো কেন, চোখের চশমা খোলো।” বললাম,
— “ইদানিং স্বপ্ন গুলো একটু ঝাপসা দেখি। তাই কিছুটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতেই ঘুমোনোর সময় আজ চশমাটা চোখেই রাখবো ভাবছি।”

এবার সহধর্মিণী আমার দুষ্টুমি ধরে ফেললো। ভীষণ জোরে হাসা শুরু করলো । তাতে আমিও যোগ দিলাম। তারপর হঠাৎ থেমে গেল। আমার দিকে গভীর ভাবে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। চোখে খানিকটা না গড়ানো চিকচিকে জল, মুখে ভাবনাপ্লুত ভালোলাগার নিঃশব্দ হাসি এবং অতিব ভাবনায় ভরসার আশ্বস্ত এমন কিছু – যা ওকে কিছুটা সময় স্তব্ধ রাখলো। আমিও মনে মনে বুঝে নিলাম কিভাবে একটি মেয়ে ধীরে ধীরে তার স্বামীকে পেতে চায়। বাবার বাড়ি হতে বেরিয়ে কিভাবে একটি নারী নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে অন্য কাউকে আপন করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। তাই নিজেকে সেই প্রিয় স্বামীর কাছে পুরোটা সপে দিতে তার কোন দিধা নেই। এমনকি স্বামীর চিন্তা ধারায়ও নিজেকে সঙ্গী পেতে চায় সব সময়। এই যে আপ্রাণ সপে দেওয়া, এই যে আকুল নিবেদন, এই যে মন প্রাণ উজাড় করে ভালোবাসা – সেটা আমরা ক’জনে,কতটুকু সময় ভালোমত বুঝতে পারি?

১৮/২০ বছর ধরে বাবার আদরের পুত্তলিকা যে মেয়ে, মায়ের কলিজার মনিকা যে ছোট্ট আদর, সে এখন স্বামীর ঘর করে। তখন স্বামী হিসেবে আমি বা আমরা তাদের চিন্তাভাবনা বা মস্তিষ্কে ক’বার সাথে সাথে হাটবার চেষ্টা করি? উত্তরটা খুবই আপেক্ষিক। এখন আমার দুই ছেলে। যদি ভবিষ্যতে আমার যদি কোন মেয়ে নাও হয় তবুও ভাবছি পুত্রবধূরা কিভাবে আপ্রাণ চেষ্টা করবে আমার ছেলেদের সাথে একটু সুবিধার জায়গা করে নিতে।

এবার আমার প্রিয় স্ত্রীর দিকে তাকালাম। দু’জনের মুখে কোন হাসি নেই, কোন কথা নেই। পাশেই বাচ্চারা ঘুমোচ্ছে। একটি অপলক দীর্ঘ দৃষ্টিতে হাজারও কথা হয়ে যাচ্ছে। বিন্দু প্রতিম শব্দ নেই, শুধু তাকিয়ে থাকা। তারপর যা হলো, সেটা হয়তো আমি ওর স্নায়ুতন্ত্রে পৌঁছে যাবার আরও চেষ্টা করছি এবং সেও হয়তো তাই। কখনও কখনও দু’টি মস্তিষ্ক একই পথে বেশ খানিকটা পথ এভাবেই মাঝে মাঝে হেটে চলে। ।


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ