• শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
খন্ডকালীন সময়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্বে এস এম মুনীর সাম্প্রতিক সহিংসতায় হতাহতের পরিবারের দায়িত্ব নেবেন প্রধানমন্ত্রী: আ’লীগ প্যারিস অলিম্পিকে “উদ্বাস্তু দল” সৌন্দর্য বাড়িয়েছে বলে জানালেন আয়োজক কমিটি ইথিওপিয়ায় ভূমিধসে নিহত ২৫০ দেশের তরুণ প্রজন্মের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়ার এটাই উপযুক্ত সময়:জো বাইডেন শাফিন ভার্জিনিয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন বুলেট বা শ্রাপনেল ট্রাম্পের কানে আঘাত করেছে কিনা তা পরিষ্কার নয়:ওয়ে কক্সবাজারে আটকে পড়া পর্যটকরা ঢাকায় ফিরেছেন প্রমোদতরী দিয়ে মানব পাচার: বৃটিশ পুলিশ ইসলামে নারীর অধিকার সমুন্নত করা হয়েছে
বিজ্ঞপ্তি
প্রিয় পাঠক আমাদের সাইটে আপনাকে স্বাগতম এই সাইটি নতুন ভাবে করা হয়েছে। তাই ১৫ই অক্টোবর ২০২০ সাল এর আগের নিউজ গুলো দেখতে ভিজিট করুন : old.bdnewseu24.com

বাঙালির গৌরব গাঁতা ইতিহাসের মুখপাত্র বাংলাদেশ ছাত্রলীগ

এফ এম শরিফুল ইসলাম শরিফ সাবেক সভাপতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
আপডেট : সোমবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২১

বাঙালির গৌরব গাঁতা ইতিহাসের মুখপাত্র বাংলাদেশ ছাত্রলীগ

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। দীর্ঘ পথচলায় সংগঠনটির রয়েছে দেশ ও জাতির জন্য অসংখ্য গৌরবময় অর্জন। সেসব অর্জন জাতিকে দিয়েছে নতুন পথের দিশা। স্বাধীনতা শব্দটি এখন আমাদের—এই প্রাপ্তির পথে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অবদান ইতিহাসের পাতায় উজ্জ্বল হয়ে আছে। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন সময়ের দাবি ও প্রেক্ষাপটের আলোকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠিত করার দাবিতেই মূলত সাংগঠনিক প্রয়োজনীয়তা ও সংঘবদ্ধভাবে সফল আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন।

ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে এর সরব উপস্থিতি এবং তৎকালীন সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করে দাবি আদায়ে ছাত্রলীগের ভূমিকার কথা বঙ্গবন্ধু তাঁর লেখনীতে তুলে ধরেছেন। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে বঙ্গবন্ধু উল্লেখ করেন, ‘আওয়ামী লীগ গড়ে ওঠার পূর্ব পর্যন্ত একমাত্র ছাত্রলীগই সরকারের অত্যাচার-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করত এবং জনগণ ও ছাত্রদের দাবিদাওয়া তুলে ধরত। ছাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের নেতা ও কর্মীদের অনেক অসুবিধা ভোগ করতে হয়েছে। মুসলিম লীগ সরকার ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠানকে খতম করার জন্য চেষ্টার ত্রুটি করে নাই।’ বঙ্গবন্ধু কোনো কাজ করতে চাইলে বেশির ভাগ সময় ছাত্রলীগকে দিয়ে শুরু করতেন। বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকাকালে ছাত্রনেতাদের চিঠি লিখে আন্দোলনের গতিকে বেগবান করতে দিকনির্দেশনা দিতেন। বলা যায়, ছাত্রদের রাজনৈতিক সক্রিয়তা এবং তাদের সংগঠিত করার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে তিনি ছাত্রলীগকে প্রাধান্য দিতেন।
দেশের আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস বলছে, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও এতে ১৭ হাজার নেতাকর্মীর আত্মত্যাগ, ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, তথাকথিত ১/১১ সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন—ইতিহাসের সবখানেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। গর্বের সঙ্গে বলা যায়, যেকোনো সংকটে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রয়েছে অনন্য অবদান।

স্বৈরশাসক মেজর জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতিতে অস্ত্রের প্রবর্তন করেন। তিনি ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে এ দেশের মেধাবী শ্রেণিকে বিপথগামী করে তোলেন। সেখান থেকে ছাত্রবান্ধব নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালে ২৮ ডিসেম্বর মতিঝিল শাপলা চত্বরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পুনর্মিলনীতে তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতি এ কে এম এনামুল হক শামীম ও সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্নার হাতে বই, খাতা ও কলম তুলে দিয়ে আবারও ইতিবাচক ধারায় বাংলার ছাত্রসমাজকে ছাত্রলীগের পতাকাতলে নিয়ে আসেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নাম। জেল-জুলুম আর অত্যাচার-নির্যাতনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ছিল জর্জরিত, যার যৌবনের ১৩টি বছর কেটেছে পাকিস্তান কারাগারে। ১৯৬৯ সালে ২১ দফা আন্দোলনের ভিত্তিতে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ২২ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তি পান শেখ মুজিবুর রহমান। পরের দিন ২৩ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ জাতির পক্ষে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন। বঙ্গবন্ধু যেভাবে নিজ প্রচেষ্টায় ছাত্রলীগকে ছাত্রদের মধ্যে জনপ্রিয় সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, তেমনি তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাও দেশের ছাত্রসমাজের কাছে একটি জনপ্রিয় সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে শীর্ষস্থানে টিকিয়ে রেখেছেন। বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতির ইতিবাচক ধারণা বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে এসেছে। তিনি ছাত্রলীগের নেতৃত্বের বয়সসীমা ২৭ বছর নির্ধারণ করে দেন। তাঁর নির্দেশনায় এখন ছাত্রলীগ পরিচালিত হয়। ২০০১ সালের ১৭ মে পল্টন ময়দানে ছাত্র সংবর্ধনায় শেখ হাসিনাকে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ‘দেশরত্ন’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ছাত্রলীগ তার অভিভাবককে মূল্যায়ন করতে ভুল করেনি।
ইতিহাস বলে, প্রয়োজনে দেশের যেকোনো সংকটকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার সর্বোচ্চটা দিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষায় এগিয়ে এসেছে। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভূমিকা ছিল প্রধান। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিল। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ছাত্রদল ও শিবিরের অস্ত্রের ঝনঝনানিতে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। তখন সংগঠনটি অছাত্রদের সংগঠন ছাত্রদল ও রগকাটা বাহিনী ছাত্রশিবিরের হাত থেকে ক্যাম্পাসগুলোকে মুক্ত করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনে। তারা ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সেনা সমর্থিত অবৈধভাবে গঠিত সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে। এ সময় অসংখ্য নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হন। ২০০৭ সালের ২৭ জুলাই দিনটি ছিল বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের জন্য এক কালো দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে। নেত্রীর মুক্তির দাবি করে সর্বপ্রথম বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিছিল ও সমাবেশ করে। ছাত্রলীগের সেদিনের মিছিল আলোড়ন সৃষ্টি ও শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে ভীতি সঞ্চার করে। ফলে সরকার শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।

২০১৪ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম সারা দেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘সেভ ক্যাম্পাস ক্লিন ক্যাম্পাস’ কর্মসূচি ঘোষণা করে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ছাত্রলীগকে ইতিবাচক কর্মসূচিতে যুক্ত করেন জয়। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমান বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য ছাত্রলীগকে নিয়ে গেছেন সাধারণ মানুষের কাছে। বৈশ্বিক এই মহামারির সময়ে বর্তমান ছাত্রলীগের অসংখ্য নেতাকর্মী

২০১৪ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম সারা দেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘সেভ ক্যাম্পাস ক্লিন ক্যাম্পাস’ কর্মসূচি ঘোষণা করে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ছাত্রলীগকে ইতিবাচক কর্মসূচিতে যুক্ত করেন জয়। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমান বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য ছাত্রলীগকে নিয়ে গেছেন সাধারণ মানুষের কাছে। বৈশ্বিক এই মহামারির সময়ে বর্তমান ছাত্রলীগের অসংখ্য নেতাকর্মী হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেন। কর্মহীন দরিদ্র মানুষের কাছে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেন। শুধু ত্রাণ কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ নয়, করোনায় মৃতদের লাশ দাফনের মতো মহান কাজ করেছে ছাত্রলীগ।

সূর্যের আলোর মতো তেজোদীপ্ত হয়ে গণমানুষের অধিকার আদায়ে নিয়মিত রাজপথে সোচ্চার ছাত্রলীগ এখন ছাত্রসমাজের প্রতিনিধিত্ব করছে। জাতির পিতার নিজ হাতে গড়া ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জাতিকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাবে নিরন্তর। ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গৌরবময় ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ছাত্রলীগের শুভাকাঙ্ক্ষী এবং অসংখ্য নেতাকর্মীর প্রতি রইল সশ্রদ্ধ সালাম ও শুভেচ্ছা।

লেখক : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং সাবেক সভাপতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ
সূত্র – কালের কণ্ঠ
বিডিনিউজ ইউরোপ /৪ ডিসেম্বর / জই


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ