বাংলাদেশে প্রতিবছর ক্যান্সারে আক্রান্ত আড়াই লাখ মানুষ।ঢাকায় অষ্টম বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ক্যান্সার কংগ্রেস-২০২৩ কনফারেন্সের প্রথম দিন বিশেষজ্ঞরা এই তথ্য জানান।বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানী ঢাকার র্যাডিসন ব্লু হোটেলে ‘অষ্টম বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ক্যান্সার কংগ্রেস-২০২৩’ এর দুই দিনব্যাপী সম্মেলন শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনকোলজি ক্লাব বাংলাদেশ ও ক্যান্সার কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এম এ হাই বলেন, বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল বিশ্বে ক্যান্সার রোগীর ক্রমবর্ধমান সংখ্যা আশঙ্কাজনক। দেশে বর্তমানে বিপুল জনগোষ্ঠী এই রোগে আক্রান্ত, যার অধিকাংশই চিকিৎসার আওতার বাইরে।এদিকে প্রতি জেলায় ক্যান্সার ইউনিট গড়ে তোলার সরকারি সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসাও করেন সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা। তরুণ চিকিৎসকদের এ চিকিৎসায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বিশেষজ্ঞরা।বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, খাদ্যাভ্যাস আর অনিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপনের জন্য দেশে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশে প্রতিবছর আড়াই লাখ মানুষ নতুন করে এই মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এর পেছনে খাদ্যে ভেজাল আর বায়ু দুষনের কথা বললেন দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য ক্যান্সার বিশেষজ্ঞারা।
দেশে ক্যান্সার চিকিৎসার আধুনিকায়নে মানসম্পন্ন ও দক্ষ জনবল তৈরি করাই ক্লাবের মূল উদ্দেশ্য জানিয়ে ডা. হাই বলেন, ক্যান্সার জয় করতে এবং দেশের ক্রমবর্ধমান ক্যান্সার রোগী ও তাদের পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। অনুষ্ঠানে ক্যান্সার কংগ্রেসের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ হাই বলেন, অনকোলজি ক্লাব, বাংলাদেশে, আধুনিক বিশ্ব ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যাপক উন্নতি সাধন করেছে। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ ক্যান্সার চিকিৎসার আধুনিকায়নে মানসম্পন্ন দক্ষ বিশেষজ্ঞদের সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেস।
আয়োজনের প্রথম দিন ক্যান্সার রোগের ওপর চারটি বৈজ্ঞানিক সেশন ও প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করা হয়। প্রথম দিন স্তন, বক্ষ, মস্তিষ্ক ও গলার ক্যান্সার বিষয়ের ওপর আলোচনা ও প্রবন্ধ উপস্থাপনা করা হয়। দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ শুক্রবার তিনটি বৈজ্ঞানিক সেশন অনুষ্ঠিত হবে। এদিন চিকিৎসক, রেডিয়েশন থেরাপি টেকনোলজিস্ট, ক্যান্সার রোগী একে অপরের অভিজ্ঞতা বিনিময় করবেন।
এ আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের একাডেমিক পার্টনার হিসেবে যুক্ত আছে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল, ইতালির বলোনিয়া ইউনিভার্সিটি, ন্যাশনাল ক্যান্সার সেন্টার সিঙ্গাপুর, ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হসপিটাল ও রাজীব গান্ধী ক্যান্সার ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার।
এ ছাড়াও এতে উপস্থিত থাকবেন যুক্তরাজ্যের বয়েল মার্সডেন হাসপাতাল, সেন্ট বার্থোলোমেয়া হাসপাতাল, কেএইচসিসি এডুকেশন ও ট্রেনিং একাডেমি, হুইপস ক্রস ইউনিভার্সিটি, নেপালের ন্যাশনাল হসপিটাল এন্ড ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টার, ভারতের অ্যাপোলো হসপিটাল, পুষ্পাগাতি সিংথানিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট, যুক্তরাষ্ট্রের ইউপিএমসি হিলম্যান ক্যান্সার সেন্টার এন্ড ইউনিভার্সিটি অব পিটসবার্গ স্কুল অব মেডিসিন, পেনসেলভেনিয়া ইউনিভার্সিটি, মহাত্মা গান্ধী- মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালসহ আরো অনেক বিশ্বখ্যাত ক্যান্সার হাসপাতালের ক্যান্সার চিকিৎসক ও গবেষকরা।
কনফারেন্সে বিশ্বের ১১টি দেশের মোট ৪৭ জন বিখ্যাত ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ যোগ দিয়েছেন। উপস্থিত হয়েছেন বিশ্বের মোট ১০০ জন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও গবেষক।
বিডিনিউজ ইউরোপ/১৪সেপ্টেম্বর/জই/ক্যান্সার