নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসক সংকটে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত।চিকিৎসক সংকটে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সার্জারি চিকিৎসক না থাকায় দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে অপারেশন কার্যক্রম। আধুনিক যন্ত্রপাতি গুলোও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।জানা যায়, ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার স্বাস্থ্য সেবায় প্রধান ভরসা নলছিটির উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু চিকিৎসক সংকটে হাসপাতালে মিলছে না কাঙ্খিত সেবা। সিজারিয়ানসহ অন্যান্য অপারেশনের জন্য রোগীদের ছুটতে হচ্ছে স্থানীয় ক্লিনিক অথবা ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাস পাতা লে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা এসব রোগীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ছেন। নলছিটি উপজেলার এটি ৫০ শয্যার হাসপাতাল। এ উপজেলা থেকে জেলা সদরে আসতে সুগন্ধা নদী পার হতে হয়।
দিনের বেলা ভোগান্তি নিয়ে রোগী আনা-নেওয়া করা হলেও রাতের বেলায় জেলা সদরে আসার কোনো ব্যবস্থা নেই। নলছিটি থেকে বরিশালের দূরত্ব বেশি হওয়ায় সেখানে যেতেও অনেক খরচ ও সময় লেগে যায়। এতে উপজেলার মানুষ চরম ঝুঁকিতে আছেন।
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনরা জানান, হাসপাতালে চিকিৎসক না থাকায় অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ক্লিনিক বা বরিশাল হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে। এতে বাড়তি অর্থ খরচ হচ্ছে। তাছাড়া হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এর দ্রুত সমাধান চেয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
নলছিটি শহরের খাসমহল এলাকার তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, আমার প্রতিবেশী একটি নারীর সন্তান প্রসব করানোর জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেলে কোন ব্যবস্থা না থাকায় স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। এতে প্রায় ২০ হাজার টাকা লেগেছে। অথচ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ব্যবস্থা থাকলে বিনামূল্যে অপারশেন করা যেতো।
পৌরসভার নাঙ্গুলী গ্রামের মারুফ হোসেন বলেন, আমার একটি টিউমার অপারেশনের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়েছিলাম, সেখানে কেউ অপারেশন করতে রাজি হননি। আমি পরে বরিশাল গিয়ে দশ হাজার টাকা খরচ করে অপারেশন করিয়েছি। এতে আমার অর্থ বেশি খরচ হয়েছে। উপজেলার তালতলা গ্রামের মনজু বেগম বলেন, আমার মেয়ের দীর্ঘদিন ধরে পেটে ব্যাথা। পরে জানতে পারলাম টিউমার হয়েছে, নলছিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পরে কেউ অপারেশন করেনি। পরে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে গিয়ে করাতে হয়েছে। এতে আমাদের থাকা খাওয়ায় অনেক কষ্ট হয়েছে।
নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শিউলি পারভীন বলেন, হাসপাতালে সবধরনের ভালো সেবা আছে। এসব ধরে রাখতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক দরকার। আর সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সার্জারি চিকিৎসক না থাকায় অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। মাত্র চার জন চিকিৎসক দিয়ে এতগুলো বিভাগ চালানো কষ্টকর। এ থেকেও তিন জন চলে যাবেন, তাহলে খুব সমস্যায় পড়তে হবে। আশাকরি দ্রুত এটার সমাধান হবে।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. এইচএম জহিরুল ইসলাম বলেন, নলছিটিতে স্বাস্থ্যসেবার মান ভলো আছে। শুধু গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন হচ্ছে না। চিকিৎসক সংকট রয়েছে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশাকরি শীগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
bdnewseu/29July/ZI/Zalokati