• শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
সিরিয়ার দীর্ঘ ৫৪ বছরের পতন আসাদের পলায়ন ভোলার স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান “পরিবর্তন যুব উন্নয়ন সংস্থার” সনদপত্র অর্জন ভিয়েনা বিশ্বের মানুষের বাসযোগ্য শ্রেষ্ঠ শহর থেকে একধাপ সরে এলো মারাত্মক বন্যার কবলে মালয়েশিয়া মধ্যপ্রাচ্যে অস্ট্রিয়ার মানবিক সহায়তা সাড়ে সাত মিলিয়ন ইউরো জার্মানির অভিবাসন নীতি বদলে ফেলার বিপক্ষে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস অভ্যুত্থান পরবর্তী লুটপাট বন্ধ হওয়ায় ভারত বাংলাদেশে আগ্রাসন চালাতে চায়:রিজভী ভোলার বীর সন্তান শহীদ শাকিল কে স্মরণীয় রাখতে ডিসি কে স্মারকলিপি প্রদান দেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে চাই:জামায়াত ঝালকাঠি তে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ক্যাবের মানববন্ধন

ভোলায় এইচপিভি টিকা নেওয়ার পর অর্ধশত স্কুলশিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন

তানজিল হোসেন, ভোলা
আপডেট : বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৪

ভোলায় এইচপিভি টিকা নেওয়ার পর অর্ধশত স্কুলশিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন।ভোলার বোরহান উদ্দিনে জ্ঞানদা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সরকারি ভাবে রায়ুমুখে ক্যান্সার প্রতিরোধী হিউম্যান প্যাপি লোমা ভাইরাসের (এইচপিভি) টিকা প্রয়োগের পর প্রায় অর্ধশত স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে পড়েন। তাদেরকে উদ্ধার করে বোরহানউদ্দিন উপ জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়েছে। অদ্য ২৯ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বেলা ১১টার দিকে জ্ঞানদা বালি কা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর জেলা প্রশাসক মোঃ আজাদ জাহান এবং সিভিল সার্জনসহ স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম অসুস্থ শিক্ষার্থীদের দেখতে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়েছেন।

অসুস্থ শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা জানান, জরায়ু মুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে আজকে সকালে ওই স্কুলের প্রায় ১৬২ জন ছাত্রীকে বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা দেওয়া হয়েছে। ছাত্রীদের শরীরে টিকা প্রয়োগ করার কয়েক মিনিটের মধ্যে একজন শিক্ষার্থী মাথা ঘুরে শ্রেণিকক্ষে পড়ে যায়। এরপর তাকে উদ্ধার করে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর আরও এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর একের পর এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে শ্রেণিকক্ষে লুটিয়ে পড়লে চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের অভিভাবক এবং নিকটাত্মীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

অসুস্থ শিক্ষার্থীদের মধ্যে কারও হাত-পা জ্বালা-পোড়া করে, কেউ বমি করে, কারও মাথা ব্যথা করছে, কেউ মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছে এমন সমস্যা দেখা গেছে। অসুস্থ শিক্ষার্থীরা ৫ম, ৬ষ্ঠ, ৭ম এবং ৯ম শ্রেণীর পড়ুয়া শিক্ষার্থী।

অভিভাবকরা গণমাধ্যমকে জানান, দুপুর দেড়টার দিকে তারা খবর পান, যে তাদের মেয়েরা শ্রেণীকক্ষে মাথা ঘুরে পড়ে আছেন। এরপর তারা স্কুলে গিয়ে দেখেন, তাদের মেয়েসহ আরও অনেক শিক্ষার্থী একই সমস্যায় ভুগছেন।

জহিরুল ইসলাম কামাল নামের আরেক অভিভাবক বলেন, তার মেয়ে আঁখি আক্তার ঝুমুরকে টিকা দেওয়া হয়নি। এরপরও ঝুমুর একই সমস্যায় ভুগছেন। তাই তিনি মনে করছেন, এই রোগ টিকা থেকে হয়নি। বাতাসের সঙ্গে জ্বীন-ভূত এসে শিক্ষার্থীদের শরীরে লেগেছে, তাই তিনি তার মেয়েকে কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নিরূপমা সরকার সোহাগ গণমাধ্যমকে বলেন, এটি জটিল কোনো রোগ না। এটি ‘মাস সাইকোলজিক্যাল ইলনেস’। যদি টিকা থেকে এই রোগ হতো, তাহলে যে সকল শিক্ষার্থীরা টিকা নেয়নি, তারাও কেনো আক্রান্ত হলো?

আহত শিক্ষার্থীরা ‘মাস সাইকোলজিক্যাল ইলনেস’ রোগে আক্রান্ত হয়েছে উল্লেখ করে ভোলা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোঃ আজাদ জাহান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিদর্শন করে বলেন, এটি তেমন গুরুতর কোনো রোগ না। এতে আতঙ্ক হওয়ার কিছু নেই। আহত শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে। ভয়ে তারা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। এ নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। আশা করি, সবাই সুস্থ হয়ে যাবে।’ এ সময় জেলা প্রশাসক সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার পরামর্শ দেন।

তিনি আর-ও বলেন, জ্ঞানদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সকাল ৮টা থেকে ১৬২ জন শিক্ষার্থীকে এইচপিভি টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হঠাৎ করে এক ছাত্রী মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে যায়। এরপরে একের পর এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৬০ থেকে ৬৫ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়েছে। এরমধ্যে কয়েকজনকে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নেওয়ার পর সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তের পর তাদের অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এখানে এমন শিক্ষার্থীও অসুস্থ হয়ে পড়েছে, যাকে টিকা দেওয়া হয়নি। সুতরাং এ জন্য আমরা বলছি, এটি মাস সাইকোলজিক্যাল ইলনেস রোগ। তাতে ভয়ের কোনো কারণ নেই। আমরা হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসক রেখেছি। এবং আপাতত টিকা দেওয়ার কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

উল্লেখ, ভোলায় ১ লাখ ২১ হাজার ৫৮০ জন কিশোরীকে প্রথমবারের মতো বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা প্রদান করা হবে। এ কর্মসূচিতে সহযোগিতা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

bdnewseu/30october/ZI/bhola


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ