• শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ধারাভাষ্যে সাকিব কে নিয়ে তামিমের যত কথা ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা; পাঁচ শিক্ষার্থী গ্রেফতার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দুই মাসের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যৌথ-বাহিনীর অভিযানে কল্লাকাটা মিজান’সহ ৭ সন্ত্রাসী আটক পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দু’জনকে কুপিয়ে জখম, দুই পক্ষের ৪ জন হাসপাতালে ভর্তি অস্ট্রিয়ায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ অস্ট্রিয়াসহ পূর্ব ইউরোপের কয়েকটি দেশ প্রচণ্ড বৈরী আবহাওয়ার কবলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে বছরে লোকসান ৬৬ কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে মার্কিন প্রতি‌নি‌ধিদলের সাথে আলোচনা গ্রিসের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার বন্ধ ঘোষণা
বিজ্ঞপ্তি
প্রিয় পাঠক আমাদের সাইটে আপনাকে স্বাগতম এই সাইটি নতুন ভাবে করা হয়েছে। তাই ১৫ই অক্টোবর ২০২০ সাল এর আগের নিউজ গুলো দেখতে ভিজিট করুন : old.bdnewseu24.com

অবিভক্ত ভারত ভাগ,কারা দায়ী, ইতিহাসে ফিরে দেখা

আক্তার হোসেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট অষ্ট্রীয়া
আপডেট : শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০

অবিভক্ত ভারত ভাগ,কারা দায়ী, ইতিহাসে ফিরে দেখা

অবিভক্ত ভারত ভেংগে পাকিস্তান,পরবর্তীতে বাংলাদেশ, কারা কতটুকু দায়ী ?
(প্রথম পর্ব)
ভারত ভাগের জন্য বর্নবাদী হিন্দু কংগ্রেসরা সবসময়ই মুসলমানদের দায়ী করে। অথচ মুসলিমরা কখনোই দেশ ভাংগার পক্ষে ছিলেন না। ইতিহাস বলে ভারত ভেংগে ছিল বর্নবাদী হিন্দু কংগ্রেসের দল। বৃটিশ ভারতের বর্নবাদী হিন্দুরা রাজনৈতিক নেতারা কখনোই মুসলিম জনগোষ্ঠীকে ভালো চোখে দেখে নি । এখনো দেখেন না। ভারতবর্ষের মুসলিম জনগোষ্ঠী হিন্দু জনগোষ্ঠীর নেতাদের নিকট যুগ যুগ ধরে ধরেই অবহেলিত অত্যাচারিত হয়ে আসতে ছিল। বর্তমানে ও ভারতে অবস্থানরত মুসলিম জনগোষ্ঠী একই ভাবে অত্যাচারিত হচ্ছে । যেন নিজ দেশেই প্রবাসী। ইতিহাস বলে ভারতবর্ষের মুসলিম নেতারা যখনই তাদের জনগনের ন্যায্য অধিকার চেয়েছেন কখনোই পান নি। না পেয়ে অধিকার আদায়ের আন্দলন করেছেন বর্নবাদ হিন্দু পরিচালিত কংগ্রেস সব সময়ই তাদের সাম্প্রদায়িক একনায়ক তান্ত্রিক আচরণে তার বিরোধিতা করেছিল। সেই কারণে ভারতের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ যেমন বাংলাদেশ পাঞ্জাব সিন্ধু ও সীমান্ত প্রদেশের নেতারা ভাবলেন এ ভাবে চলতে দেয়া যায় না, স্বায়ত্তশাসিত হলে তাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ হিসেবে শাসন চালাতে পারে এবং এতে অসাম্প্রদায়িক সম্পৃতিতে হিন্দু মুসলিমরা সহ অবস্থান করতে পারবেন এবং ভারতবর্ষের ঐক্যবদ্ধতা ও বজায় থাকবে । সেই জন্য তাঁরা সরকারের কাছে আমেরিকার মতো ফেডারেল ধরনের শাসন দাবির চিন্তা করেছিলেন। ১৯২১ সালে মুসলিম লীগের সভাপতি মাওলানা হযরত মোহানী ঘোষণা করলেন ” The fear of Hindu majority can be removed. If an Indian Republic was established on federal basis. Similar to that of United states of America. ”
ইউনাইটেড স্টেটস অব ইন্ডিয়া হলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম প্রদেশে মুসলিমরা শাসন করবে, সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু প্রদেশে হিন্দুরা শাসন করবে। এতে সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। সামাজিক ও রাজনৈতিক সম্পৃতি বাড়বে, ঐ বৎসরে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে সুন্দর একটা শান্তি চুক্তি প্রচেষ্টা ও ভালোভাবে চলেছিল। কিন্তু বর্নবাদী কংগ্রেস রাজী না হওয়ায় তা আর হতে পারে নি। ১৯২৪ সালে মি,জিন্নার সভাপতিত্বে লাহোরে মুসলিম লীগের সভায় মুসলমানদের পক্ষ থেকে পূর্বের প্রস্তাবের কিছু টা পরিবর্তন করে ফেডারেল ধরনের শাসন দাবি প্রস্তাব পাস করা হয়। এই প্রস্তাবে ও কংগ্রেস রাজী হলো না। তাল বাহানা করে উড়িয়ে দিয়ে কংগ্রেস উল্টো মিথ্যা প্রচারণা চালাতে লাগলো যে, মুসলিমরা স্বাধীনতা চায় ভারত ভাংতে চায়। এই চক্রান্তকারীদের মধ্যে কিছু সুবিধাভোগী মুসলিম তেলবাজ নেতা ও হিন্দুদের পক্ষ নেয়। ভারতবর্ষের কংগ্রেস আসলে কখনোই সমাধান চায় নি বরং সাম্প্রদায়িকতাকে জিয়িয়ে রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলো । দেশ ভাংগার মিথ্যা অপবাদ মুসলমানদের দেয়ার অপচেষ্টা করেই যেতো।
১৯২৮ সালে সর্বদলীয় কনফারেন্সে মতিলাল নেহেরু কে দায়িত্ব দেয়া হয় হিন্দু মুসলিম সমস্যা সমাধান কল্পে একটি তদন্ত রিপোর্ট দেয়ার জন্য । এতে সমাধান তো দুরের কথা বরং বিভেদ আরো বেশি সৃষ্টি করা হয়েছিল। এর পর সর্বদলীয় সম্মেলন ডাকা হয় কোলকাতায় , নেহরুর রিপোর্টের ভিত্তিতে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য। সেই সম্মেলনে মি, জিন্না নেহরুর রিপোর্টের আলোচনায় সময় উপযোগী বেশকিছু সংশোধনী প্রস্তাব উপস্থাপন করেন এবং সুনির্দিষ্ট ভাবে পৃথিবীর বহু দেশের শাসন তন্ত্রের উদাহরণ দিয়ে সংশোধনী প্রস্তাব পাসের আবেদন জানান । কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে সেইদিন তাঁর একটি প্রস্তাব ও গ্রহণ করা হয় নি। তখন মি, জিন্না চোখের পানি ফেলে কনফারেন্স থেকে বের হয়ে আসেন। সেই থেকে মি,জিন্না কে,” হিন্দু মুসলিম মিলনের দৃত” বলা হতো । এর পর দলাদলি আরো বেড়ে গেল । কিছু দিন পর ঐ বৎসরেই স্যার মুহাম্মদ সফি ও জিন্নার দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে অল ইন্ডিয়া মুসলিম কনফারেন্সে ডাকলেন দিল্লিতে। এই কনফারেন্সে তাদের সেই পুরানো ফেডারেল সরকারের প্রস্তাব নিয়ে আসলেন এবং তার সাথে ভবিষ্যতে মুসলমানদের দাবি কি কি হবে তা নির্ধারণ করলেন এবং পূর্ন স্বায়ত্তশাসনের প্রস্তাব গ্রহণ করলেন। জিন্না সাহেব এর পরেই ১৪ দফা দাবি করলেন। এতে ছিল, ” It pointed out that no constitution would be acceptable to muslims unless and until it is based on federal principles with residuary powers vested in the province “।
মুসলিম জনগোষ্ঠীর নেতাদের আন্দলন চলতেই থাকলো। ১৯৩০-৩১ সালে যে রাউন্ড টেবিল কনফারেন্স লন্ডনে হয় তাতে ভারতের মুসলমানদের পক্ষ থেকে একই দাবি পুনরায় স্যার সফি করেছিলেন। এমনকি মাওলানা মোহাম্মদ আলী ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী রেমজে ম্যাকডোনাল্ডের কাছে ১৯৩১ সালে এক চিঠিতে লিখে জানিয়েছিলেন যে ভারতের ” মুসলমানদের এক মাত্র গ্রহণযোগ্য দাবি ফেডারেল শাসন তন্ত্র- যেখানে প্রদেশ গুলো পাবে পূর্ন স্বায়ত্তশাসন”। ১৯৩৭ সালে কংগ্রেস শাসিত সরকারে মুসলমানুষদের উপর সাম্প্রদায়িক অত্যাচার অবিচার আরো বেড়ে যায় । আলোচনা করে মুসলিমদের অধিকার আদায় ও অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির লক্ষ্যে নেতারা প্রস্তাব দিলো প্রদেশে কংগ্রেসের সাথে মুসলিম লীগের কোয়ালিশন সরকার গঠন করার । এতেও কংগ্রেস রাজী হলো না। অবশেষে ১৯৪০ সালে ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব মুসলিম লীগ গ্রহণ করে। আন্দলন চলতে থাকলো দুর্বার গতিতে। অবশেষে , ১৯৪৭ সালের এপ্রিল মাসে কংগ্রেস নেতারা কোলকাতার শিংহী পার্কের অধিবেশনে প্রস্তাব উপস্থাপন করলেন দেশটাকে ভাগ করা দরকার। অতঃপর এই অধিবেশনে সিদ্ধান্ত হলো দেশ ভাগ করার। মাউন্টব্যাটেনের নিকট প্রস্তাব প্রেরণ হলো দেশ ভাগের। মুসলিম লীগের নেতারা এ খবর জেনে মাউন্টব্যাটেনের নিকট গিয়ে বললেন দেশ যদি ভাগ হয় তাহলে মুসলমানদের স্বতন্ত্র দেশ চাই (এটাই ছিল মুসলিম লীগের প্রথম দেশ ভাগের প্রস্তাব)। ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে মুসলমানদের দেশ পাকিস্তান ও ভারত (হিন্দুস্তান) স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। তথ্য – বংঙ্গবন্ধুর জীবনী থেকে ।
মোঃ আকতার হোসেন, লেখক,সাংবাদিক, কলামিস্ট ।
ভিয়েনা, অষ্ট্রিয়া ।
পরবর্তী পর্বের জন্য চোখ রাখুন পত্রিকার পাতায়
বিডিনিউজ ইউরোপ /১৮ ডিসেম্বর / জই


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ