কমিউনিস্ট লুটেরা মেননের ২৫ হাজার কোটি টাকার সম্পদ!
রাশেদ খান মেনন। তিনি ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি। তার সাধারণ সম্পাদকের নাম বা তার পার্টির অন্য কোনো নেতার নাম সাধারন মানুষ জানে না। তারপরও তিনি নেতা। ১৪ দলের অন্যতম নেতা। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান তার আপন বোন। তাই বিএনপি, আওয়ামীলীগ যেই ক্ষমতায় থাকুক সুবিধা আদায়ে তার বা তার পরিবার বরাবরই এগিয়ে আছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খয়ের খাঁ হিসেবে চিহ্নিত মেনন গত ১৬ বছরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে জানিয়েছে দুর্নীতি কমিশন। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, মাদক ব্যবসা, স্বর্ণ চোরাচালান, ক্যাসিনো ব্যবসার চাঁদা, ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে চাঁদা আদায়, নিয়োগ বাণিজ্য, ভর্তি বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য, বিমান ক্রয়ে দুর্নীতি ও অবৈধভাবে বরাদ্দ প্রদান এবং ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে মেনন দেশে এবং বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছেন হাজার হাজার কোটি টাকা।
অবৈধ সম্পদের মধ্যে রয়েছে রাশেদ খান মেননের নিজ নামে লন্ডনে ২৫টি বাড়ি (যার আনুমানিক মূল্য ৮ হাজার কোটি টাকা।), কানাডায় তার স্ত্রী লুৎফুন্নেসা খানের নামে ৫টি বাড়ি (যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১২০ কোটি টাকা) ও আমেরিকায় ২টি বাড়িসহ রয়েছে বেনামে বিভিন্ন ব্যবসায় হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ।
অন্যদিকে ঢাকার গুলশান-২, রোড-৫, বাড়ি নং-২৭ এ ৪টি ফ্ল্যাট (যার মূল্য ১৫ কোটি টাকা); বনানী রোড নং-৪, বাড়ি নং-১৬ তে ২টি ফ্ল্যাট (যার মূল্য ৯ কোটি টাকা); ঢাকার আশুলিয়া ও সাভারে ৪৫০ কোটি টাকার ১৬০ বিঘা জমি; পূর্বাচলে ১০ কাঠার ১টি ও ৫ কাঠার ৪টি ৪০ কোটি টাকার প্লট; ও কেরানিগঞ্জে ২৫০ কোটি টাকার ২০ বিঘা জমিসহ একটি বিশাল রিসোর্ট।
ঢাকার বাইরে বরিশাল জেলার উজিরপুর থানায় ৩০০ বিঘা জমি রয়েছে মেননের। এছাড়া নিজ নামে, স্ত্রীর নামে, ভাইদের নামে, সন্তানদের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআর রয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত পাওয়ায় অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
আওয়ামী সরকারের আমলে ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক ছিল ওয়ার্কার্স পার্টি। সে সুবাদে ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য হন মেনন। চাটুকারিতার পুরষ্কার হিসেবে হয়ে যান সমাজ কল্যাণমন্ত্রী এবং বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী। একই সময় পদাধিকার বলে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পেয়ে যান। উল্লেখিত সময়ে অবৈধভাবে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।
গত ২২ আগস্ট রাশেদ খান মেননকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কয়েকদফা রিমান্ড শেষে বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। অনেকেই ধারণা করছেন যেহেতু তার বোন সেলিমা রহমান বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দলের চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছের মানুষ তাই মেননকে বেশিদিন কারাগারে থাকতে হবে না। কোনো না কোনো উপায়ে তিনি বেরিয়ে আসবেন এবং মামলাগুলোও নিষ্পত্তি হয়ে যাবে খুব সহজে! সব সম্ভবের দেশ বাংলাদেশে এটা কি অসম্ভব কিছু?
bdnewseu/23october/ZI/feature