মধ্য ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়া অব্যাহত করোনার সংক্রমণের অতি ঝুঁকিপূর্ণ লাল জোনে !
প্রায় ৮৯ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত মধ্য ইউরোপের অস্ট্রিয়ায় বর্তমানে করোনার ওমিক্রন ধরনের প্রাদুর্ভাব চলছে। বর্তমানে দেশটিতে করোনার দৈনিক গড় সংক্রমণ প্রায় ৩৩,০০০ হাজার। অস্ট্রিয়ান সংবাদ সংস্থা এপিএ জানিয়েছে,অস্ট্রিয়ার করোনার ট্রাফিক লাইট কমিশন তাদের নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠক দেশটিকে করোনার সংক্রমণ বিস্তারের অতি ঝুঁকিপূর্ণ লাল জোনেই রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।অন্যদিকে অস্ট্রিয়ার করোনার টাস্ক ফোর্স ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন যে,অস্ট্রিয়ায় বর্তমানে চলমান করোনার ওমিক্রন ধরন অনেকটাই সাধারণ সিজোনাল ইনফ্লুয়েঞ্জার আকার ধারণ করেছে। সংক্রমণের বিস্তার অস্বাভাবিক আকারে বিস্তার লাভ করলেও হাসপাতালেকরোনায় আক্রান্ত রোগীদের তেমন একটা ভর্তি হতে দেখা যাচ্ছে না। ফলে দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অত্যন্ত সুরক্ষিত আছে বলে জানিয়েছেন অস্ট্রিয়ার করোনার বিশেষ টাস্ক ফোর্স।
অস্ট্রিয়ার বিভিন্ন ফেডারেল রাজ্যের মধ্যে বর্তমানে রাজধানী ভিয়েনায় করোনার ওমিক্রনের সংক্রমণের বিস্তার সবচেয়ে বেশী। গত এক সপ্তাহে ভিয়েনার গড় দৈনিক সংক্রমণ প্রায় ৬,০০০ হাজার। ভিয়েনায় গত এক সপ্তাহে প্রতি এক লাখ জনপদে করোনায় সংক্রামিত শনাক্ত হয়েছেন প্রায় ১,১৪৪ জন। ইইউর মেডিক্যাল এজেন্সির নির্দেশনা অনুযায়ী কোন জনপদের প্রতি এক লাখে যদি ১০০ জন করোনায় আক্রান্ত হন,তখন সে জনপদ বা অঞ্চল করোনার সংক্রমণ বিস্তারের অতি ঝুঁকিপূর্ণ লাল জোন হিসাবে বিবেচিত হবেন।অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের পঞ্চম ওমিক্রন প্রাদুর্ভাব অনেকটাই হালকা ধরনের সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মত হওয়ায় হাসপাতালে তেমন একটা চাপ নেই। আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশ রোগীই নিজ বাড়িতেই দুই-তিন দিনেই আরোগ্য লাভ করছেন।
রাজধানী ভিয়েনার স্বাস্থ্য প্রশাসন জানিয়েছে, ফেডারেল রাজধানীতে শতকরা ৩৫ শতাংশ রোগীই উপসর্গবিহীন। আর সমগ্র দেশে এই উপসর্গবিহীন রোগীর সংখ্যা শতকরা ২৬ শতাংশ। করোনার বিভিন্ন বিধিনিষেধের ফলে লোকজন বাধ্যতামূলক পিসিআর পরীক্ষা করার ফলেই এই পজিটিভ শনাক্ত হচ্ছেন।
অস্ট্রিয়ান সরকার করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বিস্তারের ব্যাপক ঊর্ধ্বগতি সত্ত্বেও দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর তেমন চাপ না থাকায় আগামী২০ শে ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের করোনার বিধিনিষেধ
ক্রমান্বয়ে প্রত্যাহারের চিন্তা ভাবনা করছেন।অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের আরও জানিয়েছেন বর্তমানে দেশটিতে করোনায় মৃত্যুবরণকারীদের অধিকাংশই দেশটির বিভিন্ন বয়স্ক নার্সিং হোম এবং বৃদ্ধাশ্রমের সিনিয়র নাগরিকবৃন্দ।
অস্ট্রিয়ায় এই পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা
২২,১৭,৫৮৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১৪,৩৩৭ জন। করোনার থেকে এই পর্যন্ত আরোগ্য লাভ করেছেন ১৮,৬৩,০৬৭ জন। বর্তমানে করোনার সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩,৪০,১৮১ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে আছেন ১৮৮ জন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ২,০৭৪ জন। বাকীরা নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন।
বিডিনিউজ ইউরোপ২৪ডটকম/১২ফেব্রুয়ারি/ জই