সবুজ পৃথিবী গড়তে কাজ করছে হাতীবান্ধার বৃক্ষপ্রেমী রাজ্জাক
বৃক্ষপ্রেমী মিজানুর রহমান রাজ্জাক নিজেই একজন আলোকিত মানুষ। তার এই বৃক্ষপ্রেমী দেশের উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলার মানুষের মধ্যে বিশেষ প্রভাব ফেলেছে। গাছের প্রতি মানুষের মমত্ববোধকে তিনি জাগিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি মিজানুর রহমান রাজ্জাক বেশ আলোচনা, প্রশংসার পাত্র হয়ে ওঠেছেন। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ সিন্দুর্না গ্রামের তিস্তাঘাট রোড থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন জাতের ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের সারি। ১৫ বছর বয়সী এসব গাছে বিভিন্ন মৌসুমে ফুল ও ফল ধরে। গাছের নিচ দিয়ে পথচলার সময় কানে ভেসে আসে পাখির ডাক।
২০০৬ সালে এ সড়কে গাছগুলো লাগিয়েছিলেন সিন্দুর্না গ্রামের মিজানুর রহমান রাজ্জাক (৩৮)। ১৫ বছর ধরে তিনি বিভিন্ন স্থানে গাছ রোপণ করে স্থানীয় মানুষের কাছে গাছবন্ধু হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। বৃক্ষপ্রেমী মিজানুর রহমান রাজ্জাকের দাবি, তাঁর রোপণ করা গাছের সংখ্যা ১ লাখ ২৫ হাজার।বিএ পাস করে মিজানুর রহমান রাজ্জাক পেশায় কৃষক। দুই সন্তানের জনক তিনি। বাবা নুরুল হক গাছের চারা বিতরণ ও রোপণের কাজে তাঁকে উৎসাহ দিয়েছিলেন।
সিন্দুর্না গ্রামে নিজ বাড়িতে সাত শতক জমির ওপর ‘সবুজ পৃথিবী বাঁচাও’ নামে একটি নার্সারি আছে মিজানুর রাজ্জাকের। তাঁর এমন কাজের স্বীকৃতি হিসেবে গত বছর প্রথম আলোর ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে মিজানুর রহমান রাজ্জাকে সম্মাননা দেয় বন্ধুসভা।
মিজানুর রাজ্জাক বলেন, ২০০৬ সাল থেকে নিজ খরচে গাছের চারা রোপণ ও বিতরণ শুরু করেন। মানুষ তাঁকে দেখলে গাছবন্ধু বলে ডাকেন। এটাই সম্মান ও স্বীকৃতি। ২০০৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত হাতীবান্ধা উপজেলার সিংঙ্গিমারী, সিন্দুর্না, টংভাঙা, পাটিকাপাড়া, ভেলাগুড়ি, গোতামারী ও গড্ডিমারী, কালীগঞ্জের দলগ্রাম, পাটগ্রামের দহগ্রাম–আঙ্গরপোতায় গাছের চারা রোপণ করেছেন মিজানুর রহমান রাজ্জাক। এ ছাড়া পাশের জেলা নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের রাস্তাঘাট, হাটবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের চত্বরেও তিনি গাছ লাগিয়েছেন।
মিজানুর রহমান রাজ্জাক আরও বলেন, নিজের আয় ও টিউশনির টাকার একাংশ দিয়ে তিনি গাছ কেনেন। কখনো কখনো কাছের আত্মীয়স্বজনও গাছের চারা দিয়ে সহযোগিতা করেন। মিজানুর রহমান রাজ্জাকের স্ত্রী জিন্নাত রোকসানা বলেন, সবুজ পৃথিবী গড়তে তার সঙ্গে আমরাও জড়িয়ে গেছি।
বিডিনিউজ ইউরোপ২৪ডটকম/২২ জানুয়ারি/জই