গ্রিসের অভিবাসন নীতি নিয়ে এক ডাচ সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে রেগে গেলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকস মিৎসোতাকিস৷ ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক ব়্যুটের এথেন্স সফর নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনা ঘটে৷
‘‘প্রধানমন্ত্রী মিৎসোতাকিস, আপনি পুশব্যাক নিয়ে মিথ্যা বলা, গ্রিসে শরণার্থীদের সঙ্গে যা ঘটছে তা নিয়ে মিথ্যা বলা কবে বন্ধ করবেন?’’ এথেন্সে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করেন ডাচ সাংবাদিক ইঙ্গেবর্খ বয়খল৷
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন অভিযোগ করে আসছে যে গ্রিস শরণার্থীদের অবৈধভাবে তুরস্কে ফেরত পাঠাচ্ছে৷ এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রিক প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্নটি করেন বয়খল৷
‘‘(এই অভিযোগের পক্ষে) যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে৷ কিন্তু আপনি তা অস্বীকার করে যাচ্ছেন এবং মিথ্যা বলছেন৷ এটা অনেকটা ‘নার্সিসিস্টিক এবিউজ’-এর মতো ব্যাপার৷ আপনি কেন সৎ নন? আপনি কেন বলছেন না যে ‘‘ব্রাসেলস আমাদের একা ফেলে রেখেছে, আমরা ছয় বছর অপেক্ষা করেছি এবং কেউ কিছু করেনি… এখন আমার কিছু বলার আছে৷ আর তাহচ্ছে, হ্যাঁ আমরা নিষ্ঠুর, বর্বরভাবে পুশব্যাক করি৷’’’’
মিৎসোতাকিস, যার মধ্যডানপন্থি নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি ২০১৯ সাল থেকে এথেন্সের ক্ষমতায় রয়েছে, ডাচ সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে নিজের সরকারের অভিবাসন নীতিকে ‘কঠিন কিন্তু বৈধ’ আখ্যা দিয়ে জানান যে ২০১৫ সালে ইউরোপে অভিবাসন সংকট শুরুর সময় শত শত মানুষকে সাগর থেকে উদ্ধার করেছিল তার দেশ৷
তিনি বলেন, ‘‘আমি জানি যে নেদারল্যান্ডসে সাংবাদিকদের মধ্যে রাজনীতিবিদদেরকে সরাসরি প্রশ্ন করার সংস্কৃতি রয়েছে, যা আমি পুরোপুরি শ্রদ্ধা করি৷ কিন্তু আমি যেটা গ্রহণ করবো না তা হচ্ছে এই অফিসে এসে আপনি প্রয়োজনীয় তথ্য সমর্থন করে না এমন বিষয় নিয়ে অভিযোগ তুলে আমাকে বা গ্রিক জনগণকে অপমান করবেন৷’’
মিৎসোতাকিস আরো জানান যে সমুদ্রপথে আসা মানুষদের ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়মনীতি মেনেই ‘বাধা দিচ্ছে’ তার দেশ এবং ৫০ হাজারের মতো মানুষকে ইতোমধ্যে আশ্রয় দেয়া হয়েছে৷ যাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে বেশ কয়েক হাজার আফগান রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন গ্রিক প্রধানমন্ত্রী৷
গ্রিক প্রধানমন্ত্রী কথা বলার সময় তাতে বাধা দিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলার জন্য তার প্রতি আহ্বান জানান বয়খল৷
তখন মিৎসোতাকিসকে দৃশ্যত রাগান্বিত মনে হচ্ছিল৷ তিনি বলেন, ‘‘দেখুন, আপনি এই ভবনে এসে আমাকে অপমান করতে পারেন না৷ আমি কি এই বিষয়টি পুরোপুরি পরিষ্কার করিনি?’’
সামোস দ্বীপে ইইউ এর অর্থায়নে নতুন এক শিবির নির্মাণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘এটা অনবদ্য… এর সঙ্গে অতীতে আমাদের যা ছিল তার সঙ্গে কোনো তুলনা চলে না৷’’
‘‘এটাই আমাদের নীতি, আমরা এই নীতিতে অটল থাকবো এবং এই সরকারের প্রতি কেউ আঙ্গুল তুললে বা অমানবিক আচরণের অভিযোগ তুললে তা মানবো না,’’ যোগ করেন গ্রিক প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকস মিৎসোতাকিস৷
সূত্র-ইনফু মাইগ্রেশন/(রয়টার্স)
বিডিনিউজ ইউরোপ২৪ডটকম/১৩ নভেম্বর/জই