ধনবাড়ীতে প্রনোদনার টাকা নয়ছয় নিয়ে
খামারীদের মানববন্ধন ও পশুসম্পদ অফিস ঘেরাও
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী তে গুরু খামারিদের প্রণোদনা টাকা নয়ছয়ের কারনে
খামারীদের মানববন্ধন
প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের সুফলভোগী নির্বাচন ও প্রণোদনার টাকা বন্টনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১২ জুলাই) দুপুরে ধনবাড়ী উপজেলা বাসষ্ট্যান্ড চত্বরে কয়েক হাজার খামারী এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেন। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ধনবাড়ী উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিস ঘেরাও করেন। সেখানে উপজেলার কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান ও খামারী বক্তব্য রাখেন। বক্তৃতায় দুর্নীতির সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করা হয়।
জানা যায়, ধনবাড়ী উপজেলায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেড়হাজার ডেইরী ও পল্ট্রি খামারীর মধ্যে সরকার দুই দফায় এলডিডিপি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ১৬ কোটি টাকা বিতরণ করে।
ধনবাড়ী উপজেলার বলিভদ্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুরুজ্জামান মিন্টু জানান, উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস খামারী বাছাইয়ে ব্যাপক দুর্নীতির আশ্রয় নেয়। যাদের ডেইরী বা পল্ট্রিখামার নেই তাদেরকে তালিকাভূক্ত করে প্রণোদনার টাকা উঠিয়ে ভাগবন্টন করে নেয়। যারা পেশাদার খামারী তারা প্রণোদনা বঞ্চিত হন।
মিল্ক ভিটার রেজিষ্ট্রেশনপ্রাপ্ত মুশুদ্দী ইউনিয়ন দুগ্ধ উৎপাদন খামার সমিতির সভাপতি সোহরাব আলী অভিযোগ করেন, প্রাণী সম্পদ অফিস লাইভস্টক প্রভাইডার ও ফিল্ড সহকারিদের মাধ্যমে ভূয়া ডেয়রী ও পল্ট্রি ফার্ম দেখিয়ে প্রণোদনার টাকা ভাগবন্টন করে নিয়েছেন।
বীরতারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, জীবনে অনেক চুরিচামারী ও দুর্নীতি দেখেছি। কিন্তু এমন হরিলুট দেখিনি। অফিস স্টাফরা ভূয়া খামার মালিকের নামে মোবাইলের নতুন সীম কিনে এবং ব্যাঙ্ক হিসাব খুলে অভিনব কায়দায় প্রণোদনার টাকা ভাগবন্টন করে নিয়েছেন।
ধোপাখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকবর আলী জানান, উপজেলা পরিষদ এ দুর্নীতি বন্ধে মিটিং করে উপজেলা পশুসম্পদ কর্মকর্তাকে সতর্ক করেন। কিন্তু তিনি সেই সতর্কতা আমলে নেননি।
উপজেলা পশুসম্পদ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রণোদনার টাকা বিতরণে কোন অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়নি। ধনবাড়ী উপজেলায় ২৫ হাজার খামারী রয়েছেন। এ থেকে দেড়হাজার খামারী বাছাই খুবই কঠিন কাজ। উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সকল ইউপি চেয়ারম্যান পৃথকভাবে তালিকা দিয়েছিলেন। জনপ্রতিনিধিদের সেই তালিকাকে গুরুত্ব দিয়ে অনেককে বাছাই করা হয়েছে। এখন মানববন্ধন বা অফিস ঘেরাও জনপ্রতিনিধিদের স্ববিরোধী কাজ।
জেলা পশুসম্পদ অফিসার রানা আহমেদ জানান, এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ হীরা জানান, অখামারীকে খামারী দেখিয়ে বিশেষ কায়দায় কোটি কোটি টাকা ভাগবন্টন করে নিয়েছে প্রাণীসম্পদ অফিস। উপজেলা পরিষদের সতর্কতাকে তারা কানে তোলেনি। তিনি এর তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।
বিডিনিউজইউরোপটোয়েন্টিফোরডটকম/১২জুলাই/জই