সুপেয় পানির জন্য বসছে ২০ নলকূপ
ভোলার উপকূলীয় এলাকার সম্ভাবনাময় মহিষ খাতকে আরো এগিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলার ১২টি চরে বসানো হচ্ছে ২০টি গভীর নলকূল ও পানির হাউজ। লবণাক্ত পানির হাত থেকে মহিষ রক্ষায় এসব চরে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে মহিষের রোগ-বালাইর আক্রমণ কমে যাবে বলে মনে করছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
আগামী জুলাই মাসের মধ্যে এসব নলকূপ ও হাউজ নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। তারা জানায়, ভোলা সদর ও চরফ্যাশন উপজেলার ১২ চরে বসানো হবে নলকুপ ও পানির হাউজ। ভোলা সদরের টেঙ্গার চর, পাতার চর, বাঘমারা চর, ভেলুমিয়ার চর ও মাঝের চরে ১০টি এবং চরফ্যাশন উপজেলার চর হাসিনা, বয়রার চর, চর তাড়ুয়া, চর মোতাহার, চর ইস্টিম, সিকদার চর ও চর পাতিলায় ১০টিসহ মোট ২০ নলকূপ বসছে। এসব চরের চারণভূমিতে প্রায় ৪৫ হাজার মহিষ রয়েছে। প্রতিবছর এসব চরের মহিষ থেকে বিপুল পরিমাণ দুধ উৎপাদন হয়ে আসছে। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। কিন্তু এ চরগুলো ঝড়-জলোচ্ছ্বাস এবং জোয়ারে প্লাবিত হয়। লবণাক্ত পানির কারণে এ চরগুলোতে প্রতি বছর কয়েক হাজার মহিষ ডায়রিয়া, চর্মরোগ, লোম ঝড়ে পড়া, দুর্বল হয়ে পড়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়। এতে দুধের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে লবণাক্ত পানির কারণে রোগে আক্রান্ত হয়ে মহিষের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। এতে লোকসানের মুখে পড়তেন খামারি এবং মহিষ পালকরা। শুধু তাই নয়, গত ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণেও লবনাক্ত পানিতে আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৬৫৯টি মহিষ। প্রাণিসম্পদ বিভাগ এসব মহিষের চিকিৎসা দিচ্ছেন। মহিষ চারণ ভূমি উন্নয়ন এবং ভোলার চরাঞ্চলে লবণাক্ত পানির হাত থেকে মহিষ রক্ষায় মহিষের চারণভূমিতে সুপেয় বা স্বাদু পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহিষ উন্নয়ন প্রকল্প-২ আওতায় জেলার ১২টি চরে ২০টি নলকুল এবং পানির হাউজ স্থাপন করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ কুমার মণ্ডল জানান, লবণাক্ত পানির হাত থেকে মহিষ রক্ষায় ৭৩টি চরে সুপের পানির জন্য আমরা আবেদন করেছি, এরমধ্যে ১২টি ২০টি নলকূল স্থাপনের অনুমতি এসছে। যা জুলাই মাসের মধ্যে নলকুপ ও পানির হাউজ স্থাপনের কাজ শেষ হবে। তিনি বলেন, জেলায় এক লাখ ২৪ হাজার মহিষ রয়েছে। যা থেকে প্রতিদিন ১৬ থেকে ১৮ হাজার লিটার দুধ উৎপাদন হয়ে থাকে। এসব দুধ জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায় চলে যায়। মহিষের দুধ জেলায় অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখে। এছাড়াও এ জেলার দুধ থেকে দধি এবং মিষ্টি বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। তাই মহিষের উন্নয়নে কাজ করছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। চরাঞ্চলের মহিষ সুরক্ষায় জেলায় ৫০টি আধুনিক কিল্লা স্থাপনের জন্য আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিডিনিউজইউরোপটোয়েন্টিফোরডটকম/১৯জুন/জই