লালমোহনে পাঠক সৃস্টিতে ব্যাতিক্রম আয়োজন।
ভোলার লালমোহনে ব্যতিক্রমী এক বিজ্ঞাপন সাড়া জাগিয়েছে। ‘জরুরি ভিত্তিতে পাঠক প্রয়োজন’ এ শিরোনামে বিজ্ঞাপনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন কয়েকজন তরুণ শিক্ষার্থী। পাঠকের অভাবে লালমোহনের একমাত্র সরকারি পাবলিক লাইব্রেরিটি ধুঁকে ধুঁকে মরছে। বইগুলো সব ধুলোর আস্তরণে ঢেকে গেছে। লাইব্রেরির অভ্যন্তরে ময়লা আবর্জনার স্তূপ। এসব কিছু নজরে আসে তরুণ শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘রবিকর ফাউন্ডেশনের’।
তাদের উদ্যোগে লাইব্রেরিটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। বইগুলো যত্ন করে সেখানে একটা বই পড়ার পরিবেশ করেছে তারা। নিয়ে গেছে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল-নোমানকে। কিন্তু সব কিছু ঠিক করলেও সেখানে কোনো পাঠক বই পড়তে যায় না। তাই শিক্ষার্থীরা পাবলিক লাইব্রেরিতে ‘জরুরি ভিত্তিতে পাঠক প্রয়োজনের’ বিজ্ঞাপন দিয়েছে। লালমোহন থানা মোড়ের ঠিক পূর্বপাশে স্থাপিত দ্বিতল ভবনে পাবলিক লাইব্রেরি। প্রায় তিন দশক বয়ঃপ্রাপ্ত ভবনটি যেন বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে। লাইব্রেরিতে বইয়ের সংগ্রহ বেশ পুরনো হলেও মানের চিরায়ত সাহিত্যের বই সেগুলো। শরৎচন্দ্রের রচনা সমগ্র কিংবা রবীন্দ্রনাথের গল্পগুচ্ছ যেমন আছে তেমনই বিল ক্লিনটনের ‘মাই লাইফ’ বা বেনজির ভুট্টোর ‘ডটার অব ইস্ট’ এর মতো বইও খুঁজে পাওয়া যায়। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু নিয়ে রয়েছে অনেক বই। এত এত কিংবদন্তির সমাবেশ যেখানে সেখানে হাহাকার কেবল পাঠকের। তাইতো প্রয়োজন হলো পাঠক চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়ার।বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, লাইব্রেরির নীরব কান্না কি আমাদের কানে আসে না? সব পাঠকের প্রতি আহ্বান লাইব্রেরিতে এসে বই পড়ার জন্য। অন্যান্য চাকরির মতো এতে কোনো যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতা কিছুই লাগবে না, শুধু কিছু সময় লাগবে। অবশ্যই পাঠকদের কোনো বেতনও দিতে পারবে না লাইব্রেরি। তবে দিতে পারবে এক উন্নত চিন্তার পরিধি। লাইব্রেরিতে একজন সহকারী লাইব্রেরিয়ান রয়েছে পুরো লাইব্রেরি আর বইগুলোর দেখা শুনার জন্য। নিয়ম করেই তিনি প্রতিদিন আসেন। কিন্তু সেখানে কোনো পাঠক আসে না। বিদ্যুতের ব্যবস্থাও নেই সেখানে। ‘রবিকর ফাউন্ডেশনের’ স্বেচ্ছাসেবীরা নিজ শ্রমে নতুনভাবে লাইব্রেরিতে পাঠ উপযোগী পরিবেশ গড়ে তুলেছে। লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল-নোমান জানান, পাবলিক লাইব্রেরিটি ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করে তাদের বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করে তোলার জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। অবসরে যাতে শিক্ষার্থীরা জ্ঞানচর্চার সুযোগ পায় তার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিডিনিউজইউরোপটোয়েন্টিফোরডটকম/১১জুন/জই