বজ্রপাত থেকে বাচঁতে জনগণের যা করা দরকার এবং কোনটি করা যাবে নাঃফায়ার সার্ভিস
বর্ষা আসন্ন। আষাঢ় মাস শুরু হওয়ার আগেই শুরু হয়ে গেছে ঝড় বৃষ্টি। বর্ষায় বজ্রপাত দেখা যায় প্রায়ই। এতে অনেকে মারাও যান।
বজ্রপাতের ভয়ংকর শব্দে ভয় পাওয়া বা চমকে যাওয়াও অস্বাভাবিক নয়। কিন্ত এসময়ে করণীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে জানা থাকলে নির্ভয়ে থাকা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঝড়-বৃষ্টিতে বাইরে না থেকে ঘরে থাকার বিকল্প নেই।
এসময় যা করণীয়
১. ফোন, কম্পিউটারসহ অন্যান্য বৈদ্যুতিক ডিভাইস থেকে দূরে থাকতে হবে।
২. রান্নাঘর বা বাথটাবে থাকার সময় ধাতব পদার্থ থেকে দূরে থাকতে হবে।
৩. যেকোনো বৈদ্যুতিক তার, ধাতব পদার্থ বা সংশ্লিষ্ট বস্তু থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ, ধাতব পদার্থ দ্বারা বজ্রপাত অনেকদূর পর্যন্ত চলাচল করতে পারে।
৪. এসময় পুকুর, নদী বা যেকোন খাল-বিলে মাছ ধরা বা নৌকা ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে হবে।
৫. অনেক মানুষ একসঙ্গে না থেকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে হবে।
বজ্রপাতে বর্জনীয়
১. বজ্রপাতের সময়ে কোন ভাবেই কংক্রিটের কোনো কিছুর ওপরে শোয়া বা দেয়ালের সঙ্গে হেলান দিয়ে থাকা যাবে না।
২. উঁচু কোন খোলা স্থানে এবং নদী, পুকুর, খাল-বিলের আশপাশে থাকা যাবে না।
৩. এসময় নিচে বা মাটিতে শোয়া যাবেনা এবং বিচ্ছিন্ন কোনও বড় গাছের নিচে দাঁড়ানো যাবে না।
৪. ইস্পাত,লোহা বা কোন ধাতব জাতীয় জিনিস হাতে নিয়ে রাখা যাবে না।
এছাড়াও সরকার কর্তৃক প্রকাশিত বিধি নিষেধ সমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হয়েছেঃ
বজ্রপাত থেকে বাঁচতে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর থেকে ২০টি জরুরি নির্দেশনা।
নির্দেশনাগুলো হলো-
১. বজ্রপাতের ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির ধাতব রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না।
২. প্রতিটি বিল্ডিংয়ে বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন নিশ্চিত করুন।
৩. খোলাস্থানে অনেকে একত্রে থাকাকালীন বজ্রপাত শুরু হলে প্রত্যেকে ৫০ থেকে ১০০ ফুট দূরে দূরে সরে যান।
৪. কোনো বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকে তাহলে সবাই এক কক্ষে না থেকে আলাদা আলাদা কক্ষে যান।
৫. খোলা জায়গায় কোনো বড় গাছের নিচে আশ্রয় নেয়া যাবে না। গাছ থেকে চার মিটার দূরে থাকতে হবে।
৬. ছেঁড়া বৈদ্যুতিক তার থেকে দূরে থাকতে হবে। বৈদ্যুতিক তারের নিচ থেকে নিরাপদ দূতত্বে থাকতে হবে।
৭. ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির প্লাগগুলো লাইন থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে হবে।
৮. বজ্রপাতে আহতদের বৈদ্যুতিক শকে মতো করেই চিকিৎসা দিতে হবে।
৯. এপ্রিল-জুন মাসে বজ্রপাত বেশি হয়। এই সময়ে আকাশে মেঘ দেখা গেলে ঘরে অবস্থান করুন।
১০. যত দ্রুত সম্ভব দালান বা কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন।
১১. বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি বা বারান্দায় থাকবেন না এবং ঘরের ভেতরে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম থেকে দূরে থাকুন।
১২. ঘন-কালো মেঘ দেখা গেলে অতি জরুরি প্রয়োজনে রাবারের জুতা পরে বাইরে বের হতে পারেন।
১৩. উঁচু গাছপালা, বৈদ্যুতিক খুঁটি, তার, ধাতব খুঁটি ও মোবাইল টাওয়ার ইত্যাদি থেকে দূরে থাকুন।
১৪. বজ্রপাতের সময় জরুরি প্রয়োজনে প্লাস্টিক বা কাঠের হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করুন।
১৫. বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গা, মাঠ বা উঁচু স্থানে থাকবেন না।
১৬. কালো মেঘ দেখা দিলে নদী, পুকুর, ডোবা, জলাশয় থেকে দূরে থাকুন।
১৭. বজ্রপাতের সময় শিশুদের খোলা মাঠে খেলাধুলা থেকে বিরত রাখুন এবং নিজেরাও বিরত থাকুন।
১৮. বজ্রপাতের সময় খোলা মাঠে থাকলে পায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে এবং কানে আঙুল দিয়ে মাথা নিচু করে বসে পড়ুন।
১৯. বজ্রপাতের সময় গাড়ির মধ্যে অবস্থান করলে, গাড়ির থাতব অংশের সঙ্গে শরীরের সংযোগ ঘটাবেন না। সম্ভব হলে গাড়িটিকে নিয়ে কোনো কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন।
২০. বজ্রপাতের সময় মাছ ধরা বন্ধ রেখে নৌকার ছাউনির নিচে অবস্থান করুন।
বিডিনিউজইউরোপটোয়েন্টিফোরডটকম/৮জুন/জই