• বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৩ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি
প্রিয় পাঠক আমাদের সাইটে আপনাকে স্বাগতম এই সাইটি নতুন ভাবে করা হয়েছে। তাই ১৫ই অক্টোবর ২০২০ সাল এর আগের নিউজ গুলো দেখতে ভিজিট করুন : old.bdnewseu24.com

পাহাড়ে পাঁচ তারা হোটেল নির্মাণের প্রতিবাদে সংহতি সমাবেশ

গোলাম মোস্তফা চট্টগ্রাম (বাংলাদেশ)
আপডেট : শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২০

পাহাড়ে পাঁচ তারা হোটেল নির্মাণের প্রতিবাদে সংহতি সমাবেশ

বান্দরবানে ম্রোদের ১০০০ একর জায়গা বেদখল করে সিকদার গ্রুপ কর্তৃক পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ বন্ধের দাবিতে চট্টগ্রামে সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত
.
“উন্নয়নের নামে পাহাড়ে ভূমি বেদখল ও উচ্ছেদ বন্ধ কর” এই দাবিকে সামনে রেখে বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে ম্রো সম্প্রদায়ের ১০০০ একর জমি বেদখল করে সিকদার গ্রুপ কর্তৃক পাঁচ তারকা হোটেল ম্যারিয়ট ও এমিউজম্যান্ট পার্ক নির্মাণ উদ্যোগের প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে নির্মাণ কাজ বন্ধের দাবিতে চট্টগ্রামে সংহতি সমাবেশ করেছে চার পাহাড়ি সংগঠন।

আজ ১৩ নভেম্বর ২০২০ (শুক্রবার) বেলা সাড়ে ৩.০০টায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন যৌথভাবে নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে এ সংহতি সমাবেশ অায়োজন করে। সমাবেশের পূর্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে নেতাকর্মীরা ‘Stop evicting Mro community from their inherited ancestral jhum land in the name of constructing five star hotel by Sikder group”, “উন্নয়নের নামে পাহাড়ে ভূমি বেদখল ও উচ্ছেদ বন্ধ কর”, “Stop land grabbing in Banderban in the name of constructing 5 star hotel”, ” পাহাড়িদের প্রথাগত ভূমি অধিকার মেনে নাও” সহ বিভিন্ন দাবিনামা সম্বলিত প্লাকার্ড বহন করে।

যুব নেতা উচিংশৈ চাক(শুভ) সভাপতিত্বে পিসিপি’র নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক অমিত চাকমার সঞ্চালনায় মিছিল পরবর্তী অনুষ্ঠিত সংহতি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পিসিপি চবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মিটন চাকমা, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক ডাঃ মাহফুজুর রহমান, বাসদ মার্কসবাদী নেত্রী আসমা আক্তার, বাসদ(পাঠচক্র) নেতা অপুদাশ গুপ্ত, গণসংহতি আন্দোলন-এর সমন্বয়ক হাসান মারুফ রুমি,প্রগতিশীল চিকিৎসক ডাঃ সুশান্ত বড়ুয়া, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন-এর সাবেক কাউন্সিলর,জান্নাতুল ফেরদৌস পপি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল(পূর্ব -৩) চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি এডভোকেট ভূলন ভৌমিক।

এতে আরো সংহতি জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক, মাইদুল ইসলাম, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সুবর্ণা মজুমদার এবং বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক,হাফিজ রশিদ খান প্রমুখ।

বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক ডাঃ মাহফুজুর রহমান বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামে আদিবাসীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আদর্শকে সামনে রেখে পাহাড়িদের ভূমি দখল নয়, পাহাড়িদের নিজস্ব অধিকারের দিতে হবে এবং চিম্বুক পাহাড়ের অবিলম্বে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ ও ম্রো উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।

এ্যাডভোকেট ভুলন লাল ভৌমিক বলেন, বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম জনগণকে নিশ্চিহ্ন করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে অসামাজিক কার্যকলাপে পাহাড়ি নারীদেরকে পণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে বলে তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

গণসংহতি আন্দোলন চট্টগ্রাম জেলার আহ্বায়ক হাসান মারুফ রুমি বলেন, বর্তমান আমেরিকায় যেভাবে বসবাসরত স্থানীয় জনগোষ্ঠীদের উচ্ছেদ কর,শোষণ করে আধুনিক পূঁজিবাদী সমাজ গড়ে তোলা হয়েছে। ঠিক একইভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জাতিসত্তাদের নিজ ভূমি থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হচ্ছে।

প্রগতিশীল চিকিৎসক ডাঃ সুশান্ত বড়ুয়া বলেন, চিম্বুক পাহাড়ের ভূমিপুত্র হচ্ছে ম্রোরা এবং ম্রোরা চিম্বুক পাহাড় রক্ষার্থে যে আন্দোলন সূচনা করেছে সেই আন্দোলকে পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।
তিনি আরো হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, চিম্বুক পাহাড়ে ম্রোদের ভূমি যদি দখল করা হয় তাহলে ম্রো জনগোষ্ঠীসহ আমরা সমতলে সকল পেশাজীবি মানুষ জোরদার আন্দোলন গড়ে তুলব।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন-এর সাবেক কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস পপি বলেন, যে সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের দেশের প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা বিদেশে গিয়ে পরিবেশ রক্ষার শপথ নেয়,সেই সময়ে চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ কি রাষ্ট্রীয় সরকারের তালবাহানা নয়???তিনি অবিলম্বে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ ওএ্যামিউজমেন্ট পার্ক বন্ধ করার জোর দাবি জানিয়েছেন।

সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, দেশে-বিদেশে বিতর্কিত সিকদার গ্রুপ সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ম্রো সম্প্রদায়ের ১০০০ একর বংশপরম্পরায় ভোগ করে অাসা জমি বেদখল করে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পাঁচ তারকা হোটেল ম্যারিয়ট ও এ্যামিউজমেন্ট পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ঐ এলাকায় বিভিন্ন স্থানে সাইনবোর্ডও টাঙিয়ে দিয়েছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ।”
বিডিনিউজ ইউরোপ/১৩ নভেম্বর/বার্তা সম্পাদক


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ