মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দর আগামী বছরেই অপারেশনে যেতে প্রস্তুত
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে দেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা ছিল একটি গভীর সমুদ্র বন্দরের । তিনি ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তি তে গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপনের জন্যে বাস্তবিক অর্থে উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে আজ মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের রুপান্তরের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ।
২০২১ সাল থেকেই প্রাথমিক অপারেশনে যেতে চায় মহেশখালী মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর। আগামী মাসেই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য নির্মিত তিনটি জেটিসহ নতুনভাবে তৈরি করা ১৫ কিলোমিটারের চ্যানেল বুঝে পাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর। কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে করোনাকালীন স্থবিরতা কাটিয়ে আবারও পুরোদমে সচল হতে শুরু করেছে মহেশখালী মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের কার্যক্রম।
বদলে গেছে মহেশখালী মাতারবাড়ি এলাকার পুরো দৃশ্যপট। সাগরের বুকে তৈরি করা নতুন ভূমিতে কাজ করছে বড় বড় বুলডোজার, ক্রেনসহ ভারী ভারী সব যন্ত্রপাতি।
১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য তৈরি করা ৩টি জেটিসহ পুরো চ্যানেল বন্দরের কর্তৃপক্ষ বুঝে নেবে চলতি বছরই। ইতোমধ্যে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের পাশাপাশি দায়িত্ব বুঝে নিতে ১৬ নভেম্বর দেশে আসবেন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের বিদেশি বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশের পর্যটন রাজধানী খ্যাত কক্সবাজারের সুনাম ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে বিশাল একটি সম্ভাবনাময় অঞ্চলে পরিণত হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞ গণ মত দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য মোহাম্মদ জাফর আলম, পূর্ণাঙ্গভাবে পুরো চ্যানেলটি আমাদের হস্তান্তর করবে আগামী বছর মে মাসের মধ্যে। এরপর থেকেই পুরোদমে চ্যানেলের কার্যক্রম শুরু করব কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্ল্যান্ট শুরু করব। আর বন্দরের কার্যক্রম ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে সম্পন্ন করব।
ব্যবসায়ীদের মতে, এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীক কেন্দ্র হিসেবে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, মাদার ভেসেল (বড় বড় জাহাজ) এখান থেকে চীন, ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে সরাসরি চলাচল করতে পারবে। এতে নতুন ও উন্নত একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন হবে।
তবে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি না হলে কন্টেইনার পরিবহনের খরচ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা ব্যবসায়ীদের। অবশ্য বন্দর কেন্দ্রীক নতুন সড়ক নির্মাণের জন্য প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক আজমীর হোসেন চৌধুরী বলেন, এ বন্দর ও চ্যানেলের চাহিদা বাড়বে, পাশাপাশি চ্যালেঞ্জও থাকবে। শুধুই দূরত্বের কারণে। কারণ এটা নির্মাণ করা হচ্ছে দেশের একদম এক প্রান্তে। তাই পরিবহন খরচ বেড়ে যেতে পারে।
মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের ১৭ হাজার কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার যোগান দিচ্ছে জাইকা। ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ চূড়ান্ত অপারেশনে যাবে সমুদ্র বন্দরটি।
এই সমুদ্র বন্দরের রুপান্তরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অন্যান্য বন্দরে মালামাল লোডিং আনলোডিং এর ক্ষেত্রে ও খুব কম খরচে ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে সহজ হবে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট গণ জানান।
বিডিনিউজ ইউরোপ/১১ নভেম্বর / বার্তা সম্পাদক