• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম
সিরিয়ার দীর্ঘ ৫৪ বছরের পতন আসাদের পলায়ন ভোলার স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান “পরিবর্তন যুব উন্নয়ন সংস্থার” সনদপত্র অর্জন ভিয়েনা বিশ্বের মানুষের বাসযোগ্য শ্রেষ্ঠ শহর থেকে একধাপ সরে এলো মারাত্মক বন্যার কবলে মালয়েশিয়া মধ্যপ্রাচ্যে অস্ট্রিয়ার মানবিক সহায়তা সাড়ে সাত মিলিয়ন ইউরো জার্মানির অভিবাসন নীতি বদলে ফেলার বিপক্ষে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস অভ্যুত্থান পরবর্তী লুটপাট বন্ধ হওয়ায় ভারত বাংলাদেশে আগ্রাসন চালাতে চায়:রিজভী ভোলার বীর সন্তান শহীদ শাকিল কে স্মরণীয় রাখতে ডিসি কে স্মারকলিপি প্রদান দেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে চাই:জামায়াত ঝালকাঠি তে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ক্যাবের মানববন্ধন

ভারতের দুইটি ভয়ঙ্কর ভ্যারিয়ান্ট ভাইরাস সম্পর্কে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সতর্কতা

ঢাকা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক হাফিজা লাকি
আপডেট : সোমবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২১

ভারতের দুইটি ভয়ঙ্কর ভ্যারিয়ান্ট ভাইরাস সম্পর্কে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সতর্কতা
বাংলাদেশ দুই সপ্তাহের জন্য ভারতের সাথে তার সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে,ভারতের বেঙ্গল ভ্যারিয়েন্ট’ প্রতিরোধে সতর্ক হতে হবে: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে অত্যন্ত মারাত্মকভাবে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। আমাদের সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গে নতুন বেঙ্গল ভ্যারিয়েন্ট ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। এই ভ্যারিয়েন্ট অত্যন্ত মারাত্মক এবং চারদিকে সংক্রমণ করার ক্ষেত্রে তিন শত (৩০০) গুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন। ফলে এটি প্রতিরোধে এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।
রবিবার ২৫ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ বুলেটিনে এ তথ্য জানান তিনি। ডা.রোবেদ আমিন বলেন,আমাদের দেশে বর্তমানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হার কিছুটা নিম্নমুখী কিন্ত মৃত্যুর হার এখনও ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ফলে এই অবস্থার আরও উন্নতির জন্য সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারতে অসম্ভব রকমের করোনার সংক্রমণের বিস্তার লাভ করছে। ফলে সেখানে প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। ভারতে যে দুটো ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে- যা ডাবল বা ত্রিপল মিউটেশন ভাইরাস। করোনার এই নতুন রূপ দেখে সারাবিশ্বের সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। ভারতের এই ডাবল কিংবা ত্রিপল মিউটেশন ভাইরাস যেন কোনোভাবেই বাংলাদেশে আসতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে বলে জানিয়েছেন ডা.রোবেদ আমিন।
তিনি বলেন,আমরা যদি বাংলাদেশে এই ডাবল বা ট্রিপল মিউটেশন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে পড়ে যাই তাহলে আমাদের অবস্থা কী পরিমাণ ভয়ঙ্কর হবে সেটা চিন্তা করার জন্যও সাধারণ মানুষকে আহবান জানান তিনি।
ডা.রোবেদ আমিন বলেন, আমাদের অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে স্বাস্থ্যবিধি পালন করতে হবে। আর যদি সেটা না হয় তাহলে কিন্তু আমাদের চিত্র আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশের মতো হয়ে যেতে পারে।


বুলেটিনে তিনি বলেন, কোনও মানুষের কোয়ারেন্টিন করতে হলে সেটা হতে হবে ১৪ দিন। ১৪ দিনের নিচে কোয়ারেন্টিন সম্ভব নয়। কিন্তু শুধু কোয়ারেন্টিন পালন করানোর জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর একমাত্র অধিদপ্তর নয়, এখানে আরও অনেক অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, যদি আমরা বৈজ্ঞানিকভাবে বিষয়টিকে দেখতে চাই, তাহলে আমাদের উচিত হবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন যেন নিশ্চিত হয়। আর এটা যদি কোনও প্রতিষ্ঠানে হয় তাহলে সবচেয়ে ভালো। সেটা যদি সম্ভব না হয় তাহলে প্রাতিষ্ঠানিক বা হোম কোয়ারেন্টিন যেন সবাই কঠোরভাবে পালন করে সে বিষয়ে সকলকে আহ্বান করা হচ্ছে।
আমরা এখন করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ পার করছি জানিয়ে রোবেদ আমিন বলেন, সরকার ঘোষিত লকডাউন আগামী ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত চলছে। কিন্তু আজ সীমিত পরিসরে শপিং মল এবং দোকানপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী লকডাউন কোনও পরিপূর্ণ সমাধান নয়। একইসঙ্গে এতে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই জনগণকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে এবং শারীরিক দূরত্ব মেনে চলার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। প্রয়োজনে মাঠ পর্যায়ে যারা স্বাস্থ্যবিধি মানানোর দায়িত্বে রয়েছেন তাদের কঠোর হয়ে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানানোর প্রয়োজন হতে পারে।
এদিকে ভারতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ অত্যন্ত আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ সরকার ভারতের সাথে দুই সপ্তাহের জন্য সীমান্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দেশের প্রধান সংবাদ মাধ্যম সমূহ জানিয়েছেন, ভারতে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতির ক্রমাবনতি হওয়ায় দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সব সীমান্ত বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ সোমবার ২৬ এপ্রিল থেকে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।
রবিবার ২৫ এপ্রিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এ কথা জানান। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভারতের সীমান্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। এটা বন্ধ হয়ে যাবে। তবে যারা আসবেন তাদের সীমান্তে ১৪ দিন বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে, ভারত সীমান্ত দিয়ে জনচলাচল বন্ধ হয়ে গেলেও পণ্য আমদানি-রফতানি চলবে। আগে থেকেই ভারতের সঙ্গে আকাশপথে চলাচল বন্ধ রয়েছে। রবিবারের এই সিদ্ধান্তের ফলে তাদের সঙ্গে স্থলপথে চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, দেশটিতে প্রতিদিনই করোনা সনাক্ত ও সংক্রমণের রেকর্ড হচ্ছে। দেশটিতে রবিবার প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। অপরদিকে মারা গেছেন আড়াই হাজারের বেশি মানুষ।
প্রসঙ্গত, ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার ১৭২ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ১ লাখ ৯২ হাজার ৩১১। তবে ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে এক কোটি ৪০ লাখ ৮৫ হাজার ১১০ জন। বর্তমানে ভারতে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখের কাছাকাছি। এর মধ্যে ক্রিটিক্যাল অবস্থার মধ্যে আছেন প্রায় ৯ হাজার মানুষ।

বিডিনিউজইউরোপটোয়েন্টিফোরডটকম/২৬এপ্রিল/জই

 


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ