বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভার্চুয়াল সভা।
মহান ভাষা শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভাষা শহীদ, সালাম, বরকত রফিক ,জব্বার , শফিউল সহ সকল ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর চৌধুরী রতন এবং বেলজিয়াম আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা খোকন শরীফের যৌথ পরিচালনায় এই ভার্চুয়াল সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভি পি, ইঞ্জিনীয়ার আব্দুস সবুর, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন , সর্বইউরোপীয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি, বিশিষ্ঠ কলামিস্ট এবং মানবাধিকারকর্মী এম. নজরুল ইসলাম, বেলজিয়াম এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব মাহবুব হাসসান সালেহ, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সাবেক পর্তুগাল এম. পি এবং ব্রাসেলস সাউথ এশিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোরামের ডিরেক্টর পাওলো কাসাকা, ইউরোপীয় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জনাব মজিবুর রহমান , নোয়াখালী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ড : এম .ওয়াহিদুজ্জামান।
বক্তারা বলেন, ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারীতে মায়ের মুখের ভাষা বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতির দাবিতে পাকিস্তানি শাসকের ১৪৪ ধারা আইন ভঙ্গ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আনীত মিছিলে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর পুলিশ বাহিনী নির্মমভাবে গুলিতে শহীদ হন ভাষাসৈনিকরা। পাকিস্তানের দুই তৃতীয়াংশ বাঙালি জনগোষ্ঠীর মায়ের ভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রীয়ভাষা না করায় , ছাত্ররা এবং তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের জনসাধারণ বিক্ষোভে ফেটে পরে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলনের ছাত্রদের আন্দোলনে নেতৃত্ত দিচ্ছিলেন। প্রকৃতপক্ষে ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটে , ভাষার সংগ্রাম থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়। একুশ বাঙালি জাতীয়তাবাদ, বাঙালি সংস্কৃতি, এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অনুপ্রেরণার উৎস এবং সকল সাম্প্রদায়িকতা এবং স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এক প্রত্যয়ী প্রতিবাদ।
২১ শে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবসকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষণার দাবিতে কানাডার মন্ট্রি,য়াল প্রবাসীদের জাতিসংঘে আনীত প্রস্তাব এবং বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ১৯৯৮ সালে তৎকালীন এবং আজকের বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রস্তাব এবং সুপারিশ অনুযায়ী ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো এবং জাতিসংঘ সাধারন পরিষদ দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেন। মাতৃভাষার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিদানের জন্য জীবনদান পৃথিবীতে প্রথম। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারীর শহীদদের প্রতি সম্মানপ্রদর্শনপূর্বক , মাতৃভাষার প্রতি সম্মান এবং বিশ্বের বিলুপ্তপ্রায় ভাষাগুলো সংরক্ষণের আহবানে জাতিসংঘ এই প্রস্তাব পাশ করে। ২০০০ সাল থেকে সারা পৃথিবীতে ১৮৫ টি দেশে দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হচ্ছে। জাতিসংঘ, ইউরোপ, আমেরিকা ,ল্যাটিন আমেরিকা , এশিয়ায় দিনটিতে বাংলাদেশের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছে। বাংলাদেশে যেভাবে সরকারিভাবে দিনটি শোক দিবস হিসাবে পালিত হয়েছে , সারা বিশ্বে মাতৃভাষার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার জন্য ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারীকে পাকিস্তানি পুলিশের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত বাঙালি শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে। যেখানে ১৯৭৫ সালে ১৫ই আগস্ট , সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে , বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধীরা বিকৃত করেছে, আজ বঙ্গবন্ধুর রক্তের এবং আদর্শের উত্তরাধিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরে,জাতিসংঘে অমর একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতির মাধ্যমে দেশকে বিশ্বের দরবারে সম্মানিত করেছেন। ভাষা শহীদদের আদর্শের ভিত্তিতে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। ভাষা শহীদ দিবস আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এই কারণে ইউরোপের সব দেশে ইউরোপের সরকারগুলোর সাথে তাদের বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক হিসাবে সব দেশে শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। সভায় বক্তাগণ,সর্বস্তরে বাংলাভাষা বিশেষ করে, বিচার ব্যবস্থায় বাংলা ভাষা প্রচলনের জোর দাবি জানান।
সভার শুরুতে ১৯৭৫ সালে ১৫ই আগস্ট সপরিবারে নিহত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান , ভাষা শহীদ সালাম, বরকত , রফিক, জাব্বার , শফিউল সহ ২১সে ফেব্রুয়ারিতে নিহত শহীদদের আত্নার মাগফেরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
বক্তব্য রাখেন, ফ্রান্স আওয়ামী লীগ সভাপতি, জনাব এম. এ. কাশেম,জার্মান আওয়ামী লীগ সভাপতি বশিরুল আলম চৌধুরী সাবু, অস্ট্রিয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান,নেদারল্যান্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি শাহাদাত হোসেন তপন , পর্তুগাল আওয়ামী লীগ সভাপতি জহিরুল আলম জসিম, জার্মান আওয়ামী লীগ সিনিয়র সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম পুলক , সুইডেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ডাঃ ফরহাদ আলী খান, নেদারল্যান্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুরাদ খান, ডেনমার্ক আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, ফিনল্যাণ্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম, পর্তুগাল আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শওকত ওসমান, নরওয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, জার্মান আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান, ইতালির বোলজানো প্রভিন্সের আহবায়ক শওকত আলী।
উপস্থিত ছিলেন স্পেন আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক রিজভী আলম, ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার সেলিম শেলু ।
আরো বক্তব্য রাখেন ,বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ, ইউরোপের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হেদায়েতুল ইসলাম শেলী, সাংগঠনিক সম্পাদক এবং একুশের ভার্চুয়াল সভার সংগঠক ড: মিঠুন রায়.
উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রিয়ার আহ্বায়িকা নাহিদ সুলতানা এবং বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব ইতালির সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক কমরেড খন্দকার ।
বেলজিয়াম আওয়ামী লীগ থেকে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সহসভাপতি বিধান দেব, সহসভাপতি নিরঞ্জন রায়, সহসভাপতি হুমায়ুন মাকসুদ হিমু, উপদেষ্টা ড: ফারুক মির্জা, প্রচার সম্পাদক আখতারুজ্জামান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রানা মর্তুজা এবং সদস্যা দিলরুবা বেগম মিলি, ।
উপস্থিত ছিলেন, বেলজিয়াম আওয়ামী লীগ যুগ্ম সম্পাদক দাউদ খান সোহেল ,সিনিয়র নেতা রাফাত সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব বাদশা, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এম.এম. মোর্শেদ , যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ চৌধুরী মিঠু, শিক্ষা সম্পাদক নিয়াজ মোর্শেদ, সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা আয়েশা সরকার, বেলজিয়াম যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক খালেদ মিনহাজ, যুগ্ম সম্পাদক মুস্তাফিজ উল আলম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে একুশে ফেব্রুয়ারির প্রভাত ফেরির সংগীত, ” আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী , আমি কি ভুলিতে পারি, ” পরিবেশন করেন , বেলজিয়ামের সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ত শেলী জাহান, শহীদের স্মৃতি নিয়ে কবিতা আবৃত্তি করেন বেলজিয়ামের একাত্তর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদিকা আনার চৌধুরী।
বিডিনিউজ ইউরোপ /২৪ ফেব্রুয়ারী /জ ইসলাম