• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ধারাভাষ্যে সাকিব কে নিয়ে তামিমের যত কথা ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা; পাঁচ শিক্ষার্থী গ্রেফতার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দুই মাসের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যৌথ-বাহিনীর অভিযানে কল্লাকাটা মিজান’সহ ৭ সন্ত্রাসী আটক পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দু’জনকে কুপিয়ে জখম, দুই পক্ষের ৪ জন হাসপাতালে ভর্তি অস্ট্রিয়ায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ অস্ট্রিয়াসহ পূর্ব ইউরোপের কয়েকটি দেশ প্রচণ্ড বৈরী আবহাওয়ার কবলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে বছরে লোকসান ৬৬ কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে মার্কিন প্রতি‌নি‌ধিদলের সাথে আলোচনা গ্রিসের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার বন্ধ ঘোষণা
বিজ্ঞপ্তি
প্রিয় পাঠক আমাদের সাইটে আপনাকে স্বাগতম এই সাইটি নতুন ভাবে করা হয়েছে। তাই ১৫ই অক্টোবর ২০২০ সাল এর আগের নিউজ গুলো দেখতে ভিজিট করুন : old.bdnewseu24.com

ফুটবলে সাড়া জাগানো কিংবদন্তি ফুটবলার মোনেম মুন্নার মৃত্যুবার্ষিকী আজ

জহিরুল ইসলাম মিলন স্পোর্টস প্রতিবেদক
আপডেট : শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

ফুটবলে সাড়া জাগানো কিংবদন্তি ফুটবলার মোনেম মুন্নার মৃত্যুবার্ষিকী আজ

সেকালে ফুটবল মানেই ছিল আবেগ,ভালবাসার এক অন্যতম উদাহরণ । আর সেই আবেগ,ভালবাসার জায়গা থেকে ফুটবল প্রেমীরা মাঠে এসে গ্যালারি ভর্তি করে রাখতো। স্বাধীনতার পূর্বে বা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের ফুটবলে তারকার অভাব ছিল না। তখনকার সাথে বর্তমান চিত্রের তুলনা করতে গেলে বর্তমান চিত্রে হাহাকার দেখা যাবে। তখনকার ফুটবল যতটা জনপ্রিয় ছিল হালের ক্রিকেট তার ধারে কাছেও পৌছাতে পারেনি।

কখনো কি ভেবে দেখেছিলেন, নব্বইয়ের দশকেও বাংলার একজন ফুটবলারকে নিয়ে টিভির পর্দায় বিজ্ঞাপন তৈরি করা হবে? কিন্তু আমাদের সব ভাবনাকে স্তব্দ করে দিয়ে সে সময় বিজ্ঞাপনে কাজ করেছিলেন একজন ফুটবলার। শুধু বিজ্ঞাপনেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না তিনি। দেশের সীমানা পেড়িয়ে বাইরের দেশের হয়েও খেলেছিলেন সেই ফুটবলার। কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ইস্ট বেংগলের হয়ে দুই সিজন মাঠ মাতিয়েছিলেন এই কিংবদন্তি ফুটবলার। তবে এবার নিশ্চিত বুঝে গেছেন কার কথা বলছি, হ্যা তিনি আর কেউ নন, বাংলাদেশের ফুটবলের কিংবদন্তি রাইট ব্যাক মোনেম মুন্না।

দেশের ফুটবলের সীমানা পেড়িয়ে প্রথম বারের মত বাইরে দেশের খেলতে গিয়েছিলেন বর্তমান বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন। হংকংয়ের ক্লাবে খেলা কাজী সালাউদ্দিনের চেয়েও বেশি আলোচিত হয়েছিলো কোলকাতার ইস্ট বেঙ্গলের হয়ে খেলতে যাওয়া মোনেম মুন্না। সেখানে মাত্র দুই সিজন খেলেছিলেন কিন্তু আজও কোলকাতার মানুষের কাছে মোনেম মুন্না মানেই এক খন্ড বাংলাদেশ।

ইস্ট বেঙ্গলের আগে মোনেম মুন্নার ঢাকার ফুটবলে অভিষেক হয় ১৯৮৪ সালে। প্রথম দুই সিজন খেলেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়াচক্রে হয়ে। এরপরে এক মৌসুম গোপীবাগের ক্লাব ব্রাদার্স ইউনিয়নে। এর পরের ১১ বছর আবাহনীতে তবে মাঝের দুই বছর খেলেছিলেন ভারতের ইস্ট বেঙ্গলের হয়ে। আবাহনীর হয়েই ঢাকার ফুটবলে মুন্নার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। আবাহনীর হয়ে দুর্দান্ত পার্ফরমেন্স করেই ঢাকার ফুটবলে মুন্না হয়ে ওঠেন সবার চোখের মণি। কিন্তু সে সময় দেশের আরেক ক্লাব মুক্তিযোদ্ধা কাড়ি কাড়ি টাকা ঢেলে শক্তিশালী স্কোয়াড গড়ে যেখানে মোনেম মুন্নাকেও তারা চেয়েছিলো কিন্তু নিজের সাবেক ক্লাবে না গিয়ে আবাহনীর প্রতি ভালবাসা বজায় রেখে থেকে যান আকাশী-নীল জার্সি গায়ে চেপেই। বনে যান আবাহনীর দুর্দান্ত একজন অধিনায়ক।

এর ঠিক পরের মৌসুমেই ঘটে আশ্চর্যজনক ঘটনা। নব্বইয়ের দশকেও একজন ফুটবলারকে দলে ভেড়াতে ২০ লাখ টাকা খরচ করতে হবে এটা আমি বা আপনি কখনো চিন্তাতেও আনতে পারবো না। কিন্তু সে সময় ঠিক এমন ঘটনাই ঘটেছিলো। মোনেম মুন্নাকে ২০ লাখ টাকা দিয়েই আবাহনী সাইন করেছিলো।

লাল-সবুজের জার্সি গায়েও অদম্য ছিলেন এই রাইট ব্যাক। ১৯৮৬ সালে প্রথমবারের মত লাল-সবুজের জার্সি গায়ে চাপান এই কিংবদন্তি। ১৯৯৫ সালে মায়ানমার এ আয়োজিত হয় চার জাতির আমন্ত্রনমূলক টুর্নামেন্ট মারদেকা কাপ। এই টুর্নামেন্টে মুন্নার নেতৃত্ত্বে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রায় ২৫ বছরের ফুটবল ইতিহাসে সেটাই প্রথম আন্তর্জাতিক ট্রফি। ১৯৯৫-১৯৯৭ সালে বাংলাদেশের কোচ ছিলে অটো ফিস্টার। মুন্নার খেলার প্রেমে মগ্ন হয়ে এই কোচ তো অকপটে বলেই ফেলেছিলেন,
“He was mistakenly born in Bangladesh”
তার এই একটি মন্তব্যই বুঝিয়ে দেয়, মোনেম মুন্না কত বড় মাপের ফুটবলার ছিলেন।

১৯৯৭ সালের ফুটবলকে বিদায় বলে দেওয়ার পর স্বাধীন বাংলার আলো-বাতাসের সাথে পরিচয় ছিল মাত্র আট বছরের মত। ১৯৯৯ সালে মুন্না অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর বিভিন্ন ভাবে চিকিৎসা করানো হলেও সেড়ে উঠতে পারেননি। অবশেষে ২০০৫ সালের ১২ ই ফেব্রুয়ারী মোনেম মুন্না মাত্র ৩৮ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

আসলেই কি মোনেম মুন্না সেদিন না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন?
না, মোনেম মুন্নার মত কিংবদন্তিরা কখনো মরতে পারে না। মোনেম মুন্নারা হাজার হাজার বছর ধরে বেঁচে থাকবে মানুষের হৃদয়ে। বাংলাদেশের মাটিতে সারা জীবন উচ্চ কণ্ঠে উচ্চারিত হবে ” আমাদের একজন কিংবদন্তি মোনেম মুন্না ছিলেন আছে থাকবেই।
বিডিনিউজ ইউরোপ /১৩ ফেব্রুয়ারী / জই


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ