• বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৭ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি
প্রিয় পাঠক আমাদের সাইটে আপনাকে স্বাগতম এই সাইটি নতুন ভাবে করা হয়েছে। তাই ১৫ই অক্টোবর ২০২০ সাল এর আগের নিউজ গুলো দেখতে ভিজিট করুন : old.bdnewseu24.com

কফি চাষ সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে চান টাঙ্গাইলের সানোয়ার

জহিরুল ইসলাম মিলন ( টাঙ্গাইল) ধনবাড়ি
আপডেট : শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০

কফি চাষ সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে চান টাঙ্গাইলের সানোয়ার

কফি বিদেশে চাষ হলেও বান্দরবানের পাহাড়ি অঞ্চলে কয়েক বছর আগে পরীক্ষামূলকভাবে কফির চাষ শুরু হয়। যদিও বর্তমানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এটি সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে ব্যক্তিগত উদ্যোগে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার মহিষমাড়া গ্রামে কফির চাষ শুরু করেছেন সানোয়ার হোসেন নামের এক উদ্যোক্তা। কফি চাষে তিনি স্বপ্ন দেখছেন সাফল্যের। পাশাপাশি বাংলাদেশে এটি চাষের বিরাট সম্ভাবনা আছে বলেও মনে করেন তিনি।

সানোয়ার হোসেন বলেন, বান্দরবানের রায়খালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্র থেকে ২০১৭ সালে ২০০ চারা কিনেছিলাম। দুই বছর পর গত বছর কিছু ফল আসে। আর এবার প্রচুর ফল এসেছে। প্রতি গাছে ২ কেজির মতো ফল এলেও শুকিয়ে প্রায় ২৫০ গ্রাম পাওয়া যায়। তবে কফির প্রক্রিয়াজাতকরণের যন্ত্র না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে প্রক্রিয়াকরণের কাজ।

তিনি আরো বলেন, কফি চাষ করে আমার ফলন খুবই ভালো হয়েছে। এই চাষাবাদে আমার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। কৃষি অফিস থেকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সানোয়ার হোসেনের বাগানে ৫০০টি কফি গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছের গোড়া থেকে প্রত্যেক শাখা-প্রশাখা ফলে ভরপুর। কিছু কিছু ফল পাকতেও শুরু করেছে। এছাড়াও তিনি নতুন করে আরেকজন কৃষকের জমিতে ২০০ কফির চারা রোপণ করেছেন। কফির পাশাপাশি সেই বাগানে বিভিন্ন ধরনের ফলের চাষাবাদও হচ্ছে।

স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, নিরাপদ ফল ও ফসল উৎপাদনে এলাকার মানুষের কাছে সানোয়ার হোসেন আদর্শ। অনেকেই প্রতিদিন আসেন কফি বাগান দেখতে। জীবনে প্রথম কফি গাছ ও বাগান দেখে তাঁরা অভিভুত। অনেকেই কফি বাগান করার জন্য সানোয়ার হোসেনের পরামর্শ নিচ্ছেন।

জানা জায়, সানোয়ারের কফি বাগান দেখে মুগ্ধ ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানত্বত্ত বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান। এটি দেশের জন্য সম্ভাবনাময় বলেও মনে করেন তিনি। টাঙ্গাইলের বাইরেও কিছু কিছু জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে কফি চাষ হচ্ছে। নীলফামারী ও বান্দরবানের বিভিন্ন স্থানে কেউ হাতেগোনা কয়েকটি চারাগাছ, কেউকা আবার এক বা দু্ইশ চারাগাছ লাগিয়েছেন।

মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, মধুপুরে দুই ব্যক্তি কফি করছেন। তার মধ্যে সানোয়ার হোসেনের বেশি কফি গাছ রয়েছে। নতুন ফসলে তাঁর অনেক আগ্রহ। গতবারও ভালো কফি এসেছিল। এ বছর প্রচুর পরিমাণে কফি এসেছে। কফির রোগবালাই বেশি হয়। কৃষকদের প্রযুক্তিগত সহায়তা দিলে কফির বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে আমাদের দেশে।

সারা বছর ফল চাষ প্রকল্পের পরিচালক মেহেদী মাসুদ বলেন, এটি ব্যাপক আকারে চাষ হয় না। কেউ কেউ বাড়িতে করছেন। হাতেগোনা কিছু চাষী একটু বেশি গাছ লাগিয়েছেন। নর্দান কফি হাউজ কৃষকদের কফি কিনছে। এখন পর্যন্ত ১ হাজার টন আমদানি করতে হচ্ছে। আর আমাদের দেশে ৫৫ হাজার কেজি হচ্ছে মাত্র। এটি বিরাট সম্ভাবনা আমাদের দেশের জন্য।

টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আহসানুল বাশার বলেন, জেলার মধুপুর ও সখীপুর উপজেলায় পাহাড়ি অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া কফি চাষের জন্য উপযোগী। কৃষকদের প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়া গেলে এই অঞ্চলে কফি চাষের ভালো বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে।

এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ইতোমধ্যে ‘নর্থ এন’ নামে একটি বেসরকারী প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠান হয়েছে। প্রসেসিংয়ে কোন সমস্যা নেই। প্রতিষ্ঠানটি চাষীদের কাছ থেকে সরাসরি কফি কিনছে। এছাড়া কফি কাঁচা হিসেবে বিদেশেও রফতানি করা যাবে। আমরা এজন্য আরো উদ্যোগ নিচ্ছি। দেশের সম্ভাবনাময় বিষয়গুলোকে আমরা সামনে আনতে চাই। অপ্রচলিত ফসল জনপ্রিয় করতে চাই।
বিডিনিউজ ইউরোপ /২৬ ডিসেম্বর / জই


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ