• রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
সিরিয়ার দীর্ঘ ৫৪ বছরের পতন আসাদের পলায়ন ভোলার স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান “পরিবর্তন যুব উন্নয়ন সংস্থার” সনদপত্র অর্জন ভিয়েনা বিশ্বের মানুষের বাসযোগ্য শ্রেষ্ঠ শহর থেকে একধাপ সরে এলো মারাত্মক বন্যার কবলে মালয়েশিয়া মধ্যপ্রাচ্যে অস্ট্রিয়ার মানবিক সহায়তা সাড়ে সাত মিলিয়ন ইউরো জার্মানির অভিবাসন নীতি বদলে ফেলার বিপক্ষে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস অভ্যুত্থান পরবর্তী লুটপাট বন্ধ হওয়ায় ভারত বাংলাদেশে আগ্রাসন চালাতে চায়:রিজভী ভোলার বীর সন্তান শহীদ শাকিল কে স্মরণীয় রাখতে ডিসি কে স্মারকলিপি প্রদান দেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে চাই:জামায়াত ঝালকাঠি তে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ক্যাবের মানববন্ধন

আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সুসম্পর্ক যে কারণে আবশ্যক

হাফিজ মাছুম আহমেদ দুধরচকী সিলেট থেকে বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও গবেষক এবং কলামিষ্ট
আপডেট : শুক্রবার, ১ নভেম্বর, ২০২৪

আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সুসম্পর্ক যে কারণে আবশ্যক!
সবচেয়ে বেশি সুসম্পর্ক হবে যার সঙ্গে তিনি হলেন মহান আল্লাহ তায়ালা। ‍যিনি মানুষকে মায়ের এক অন্ধকার গর্ভে দীর্ঘ সময়ে রহমতের চাদরে ঢেকে রেখে ধারাবাহিক কার্যপ্রণালীর মাধ্যমে দুনিয়াতে আসার সুযোগ করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, দুনিয়াতে আসার আগে মায়ের গর্ভে রক্তপিণ্ড থেকে শুরু করে মাংসপিণ্ডে হাড়ের সংযোজন পর্যন্ত যে ইহসান করেছেন, এ জন্য তার সঙ্গে সুসম্পর্ক ও আদব রক্ষা করা প্রত্যেক বান্দার জন্য আবশ্যক।

মহান আল্লাহ তায়ালার এসব রহমত ও ইহসান বান্দা বেমালুম ভুলে গিয়ে তার অবাধ্যতায় লিপ্ত। তার অবাধ্যতা সত্ত্বেও তিনি বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী সবাইকে রহমতের চাদরে আগরে রেখেছেন। যার বিচার-ফয়সালা হবে পরকালে। তার আগেই দুনিয়াতে আল্লাহর সঙ্গে সুসম্পর্ক ও আদব রক্ষা করে চলা মুমিন মুসলমানের জন্য একান্ত জরুরি।

আল্লাহর প্রশংসা ও শুকরিয়া:
বান্দার প্রতি মহান আল্লাহর এসব রহমত ও ইহসানের জন্য ঈমানের প্রথম দাবি হলো, বান্দা জবানে আল্লাহর অবিরাম প্রশংসা করবে আর অবনত মস্তকে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা তার আনুগত্য প্রকাশ করবে।

আল্লাহ কত বড় মেহেরবান যে, বান্দা যদি আল্লাহর প্রশংসা ও আনুগত্য করে আল্লাহও বান্দাকে সঙ্গে সঙ্গে স্মরণ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআন শরীফে আল্লাহ বলেন-
‘যদি তোমরা আমাকে স্মরণ কর তবে আমিও তোমাকে স্মরণ করব। আর আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার অবাধ্যতা করো না।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫২)

পাশাপাশি আল্লাহর কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসায় আল্লাহ তায়ালা বান্দার প্রতি তার নেয়ামত বাড়িয়ে দেয়ার ঘোষণা করেছেন। আর যদি এর ব্যতিক্রম হয় তবে তার জন্য কঠোর শাস্তির ঘোষণাও রয়েছে। আল্লাহ বলেন-
‘যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে (নেয়ামত) আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর। পবিত্র কোরআন শরীফে বলেন, (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৭)

মনে রাখতে হবে:
নেয়ামতের মালিক আল্লাহ। দুনিয়ার সব অনুগ্রহের মালিক আল্লাহ। সুতরাং মালিকের অনুগ্রহ স্বীকার করায় রয়েছে আনন্দ ও পুরস্কার। আর অনুগ্রহকে অস্বীকার করা বা অবজ্ঞা করা কোনো ভাবেই আদব ও কৃতজ্ঞতার মাঝে পড়ে না। আল্লাহ তাআলা মানুষকে নেয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন-
তোমরা যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা কর, তবে তার সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবে না। (সুরা নহল : আয়াত ১৮)
তোমাদের কাছে যেসব নেয়ামত রয়েছে, তা তো আল্লাহর কাছ থেকেই (এসেছে)। (সুরা নহল : আয়াত ৫৩)

সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব। আর তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও এবং অকৃতজ্ঞ হয়ো না। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৫২)

আল্লাহর প্রতি ভয়:
বান্দার যখন আল্লাহকে ভয় করেন তখনও তিনি বান্দার সব অবস্থা দেখেন এবং জানেন। এ কারণেই মুমিন বান্দার হৃদয়-মন আল্লাহর ভয় ও ভক্তি-শ্রদ্ধায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠে। মুমিন বান্দা যখনই কোনো অন্যায় বা অবাধ্য কাজ করে ফেলে তখনই আল্লাহর কাছে লজ্জিত হয়।

আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ ও আনুগত্যের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে যাওয়াটাকে রীতিমত অপমান মনে করে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর দিকে ফিরে আসে। এটাই আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সুসম্পর্ক ও আদবের লক্ষণ।

কেননা মুমিন বান্দা যখনই আল্লাহর কোনো অবাধ্যতায় জড়িয়ে যায়, তখনই তার মনে হতে থাকে যে, আল্লাহ তাআলা তাকে দেখছেন। আল্লাহর সেই ঘোষণার কথাও মুমিনের স্মরণ হয়ে যায়। বান্দাকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ বলেছেন-
তোমাদের কী হল যে, তোমরা আল্লাহ‌র শ্রেষ্ঠত্বের পরওয়া করছ না। অথচ তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন পর্যায়ক্রমে। (সুরা নুহ : আয়াত ১৩-১৪)
অন্যত্র তিনি আরও বলেছেন, ‘আর তিনি জানেন তোমরা যা গোপন কর এবং তোমরা যা প্রকাশ কর। (সুরা তাগাবুন : আয়াত ৪)

সুতরাং আল্লাহর অবধ্যতা নয় তার দিকে ফিরে আসাই বান্দার একমাত্র কাজ। তিনি বান্দার ওপর ক্ষমতাবান। বান্দা তাঁর অধীন। তার দিকে ফিরে যাওয়া ছাড়া বান্দার কোনো মুক্তির পথ বা উপায় খোলা নেই। আল্লাহ বলেন-
এমন কোন জীব-জন্তু নেই, যে তাঁর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। (সুরা হুদ : আয়াত ৫৬) এবং আল্লাহর উপরই তোমরা নির্ভর কর, যদি তোমরা মুমিন হও। (সুরা মায়েদা : আয়াত ২৩)
আল্লাহর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা যেমন জরুরি তেমনি সব অবাধ্যতা থেকে বিরত থাকাও জরুরি।

আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে তার নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করার এবং তার অবাধ্যতা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। অন্তরে তার রহমতের আশা এবং ভয় পোষণ করার তাওফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন ছুম্মা আমিন।

লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী, সাবেক ইমাম ও খতিব কদমতলী মাজার জামে মসজিদ সিলেট।

bdnewseu/1November/ZI/feature


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ