১০৬ মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালনের জন্য প্রস্তুত দ্বীপজেলা ভোলা।কুইন আইল্যান্ড ভোলা জেলার ৭ উপজেলায় এ বছর ১০৬টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে। মণ্ডপগুলোতে প্রতিমা তৈরিতে কারি গরদের চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ডেকোরেটর, লাইটিংসহ চলছে সাজ সজ্জার সমূদয় কাজ। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে প্রত্যেকটি মণ্ডপকে। ইতোমধ্যে মণ্ডপগুলোতে সরকারি ভাবে বিতরণ করা হচ্ছে ৫০০ কেজি করে চাল।এদিকে, ভোলা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মণ্ডপগুলোর সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নেয়া হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রতিটি মণ্ডপকে নিয়ে আসা হয়েছে পুলিশের নজরদারির মধ্যে। জোরদার করা হয়েছে সাইবার পেট্রোলিং কার্যক্রম। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার সাহা জানান, এ বছর জেলায় ১০৬টি মণ্ডপের মধ্যে সদর উপজেলায় ২৭টি, বোর হানউদ্দিনের ২০টি, দৌলতখানে ৮টি, লালমোহন ১৬টি, তজুমদ্দিনের ১৫টি, চরফ্যাশনে ৯টি ও মনপু রায় ১১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ প্রশাসনের সাথে আমাদের মতবিনিময় সভা হয়েছে। শান্তিপূর্ণ ও উৎস বমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপনের জন্য তারা আমা দের আশ্বস্ত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটি মণ্ডপে একাধিক সিসি ক্যামেরা থাকবে। এছাড়া নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা কারী বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি প্রত্যেক মণ্ডপে ১০ জন করে সেচ্ছাসেবক কাজ করবে। বর্তমানে মণ্ডপগু লোতে প্রতিমায় রং তুলির আঁচড়, প্যান্ডেলের কাজ, ডেকোরেটর, লাইটিংসহ অন্যান্য সাজসজ্জার কাজ চলছে।
সরেজমিনে ভোলার লালমোহন শহরের ঐতিহ্যবাহী মদন মোহন ঠাকুর জিউ মন্দিরে গিয়ে দেখা যায় আয়োজকদের ব্যস্ততা। প্রতিমায় রং তুলির কাজ শেষ হয়েছে। অন্যান্য কাজে ব্যস্ত সবাই। মন্দির কমিটির প্রভাবশালী সদস্য বাবু নিরঞ্জন চন্দ সেন্টু বলেন, এখানে প্রতিমা তৈরীর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন মণ্ডপে অন্যান্য সাজসজ্জার কাজ চলছে। নিরাপত্তার ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। মণ্ডপে পুলিশের টহল ডিউটি অব্যাহত রয়েছে। আমরা আশাকরি এবার নতুন দিনের নতুন পরিবেশে একটি অবিস্মরণীয় শারদীয় দুর্গোৎসব এবার পালিত হবে । পুলিশ ও প্রশাসনের সর্বাত্মক সহযোগিতা আমাদের প্রাণিত করেছে। লালমোহন প্রেসক্লাবের সভাপতি বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সোহেল আজিজ শাহীন বলেন- আবহমান কাল ধরেই লালমোহনে সকল ধর্মের মানুষের সহাবস্থানে পালিত হয়ে আসছে সার্বজনীন শারদীয় দুর্গোৎসব। এবার উৎসবে নতুন দিনের নতুন মাত্রা যোগ হবে বলে আশা করছি । বদরপুর কলেজের জীববিজ্ঞান প্রভাষক রণিকা রাণী দাস বলেন- দুর্গোৎসব মানেই অর্জন ও বিসর্জনের মহামাত্রিক মিলনমেলা। এবারের উৎসব আমরা হৃদয়ের সমস্ত সুরভী ঢেলে উদযাপন করতে চাই । ধলীগৌরনগর কলেজের শিক্ষক লাবণী ঘোষ বলেন- দেবী দুর্গার চরণতলে এবার নিবেদন করতে চাই দেশপ্রেমের সর্বোচ্চ বারতাবাণী ।
ভোলা জেলার নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক বলেন- ইতোমধ্যে মণ্ডপগুলোতে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। আনন্দঘন পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপনে থাকছে জেলা পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স, মোবাইল ফোর্স, রিজার্ভ ফোর্স ও গোয়েন্দা তৎপরতাসহ চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।তিনি আরো বলেন- জেলার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপগুলোর জন্য চারজন পুলিশ ও ৮ জন আনসার সদস্য থাকবেন।
অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ডপের জন্য তিনজন পুলিশ, ৬ জন আনসার এবং সাধারণ মণ্ডপগুলোর জন্য দুইজন পুলিশ ও ৬ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। আমরা চাই অত্যন্ত প্রাণবন্ত ও আনন্দঘন পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপিত হোক। ভোলা জেলা পুলিশ এবিষয়ে সার্বক্ষণিক তৎপর ।
bdnewseu/8October/ZI/bhola