দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রস্তুত চীন।অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।রবিবার (২৫ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস ইউং থেকে এক তথ্য বিবরণীতে বলা হয়,চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে আরও ঘনিষ্ঠভাবে আজ করতে আগ্রহী। তথ্য বিবরণীতে আরও বলা হয়, এসময় দু’দেশের পারস্পরিক দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে বিশেষ আলোচনা হয়।
এসময় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস আরও কয়েকটি সোলার প্যানেল কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর
করার জন্য চীনকে আহ্বান জানান। তাছাড়াও প্রধান উপদেষ্টা বেইজিং ও ঢাকার মধ্যে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেন এবং চীনা বিনিয়োগ কারীদের বাংলাদেশে তাদের কারখানা স্থানান্তর করতে বলেন।
তিনি আরও বলেন, চীন বর্তমান বিশ্বেনসৌর প্যানেলের অন্যতম বৃহৎ নির্মাতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে কিন্তু দেশটি রপ্তানি বাজারে ক্রমবর্ধমান নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছে। উল্লেখ্য যে,চীন সরকার দেশের চলমান বন্যাদুর্গতদের জন্য ২০ হাজার মার্কিন ডলার দিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস ইউং এর তথ্য বিবরণীতে আরও
বলা হয়,ড. ইউনূস বলেন, চীনা নির্মাতারা বাংলাদেশে সৌর প্যানেল কারখানাগুলোকে স্থানান্তরিত করতে পারে, যা বাংলাদেশের রপ্তানি বহুমুখী করতে এবং একটি সবুজ অর্থনীতিতে রূপান্তর করতে সহায়তা করবে।
তিনি দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়াসে চীনে বাংলাদেশি পণ্য আমদানি বাড়ানোরও আহ্বান জানান। তিনি প্রযুক্তিগত স্থানান্তর এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা এবং কৃষিতে সহযোগিতা বৃদ্ধির কথা বলেন।
চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চীনা নেতৃত্ব এবং এর জনগণের শুভেচ্ছা জানান। রাষ্ট্রদূত বলেন, বেইজিং ঢাকার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত এবং আশা প্রকাশ করে যে তিনি দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশের প্রত্যাশা পূরণ করবেন।
তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আরও সুন্দর ও উজ্জ্বল হবে। রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন ও বাংলাদেশ সম্প্রতি তাদের সম্পর্ক একটি ‘বিস্তৃত কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বে’ উন্নীত করেছে এবং উভয় দেশ আগামী বছর কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বছর উদযাপন করবে।
ইয়াও ওয়েন বলেন, মিয়ানমারের সহিংসতা-বিধ্বস্ত রাখাইন রাজ্যে যুদ্ধবিরতিসহ রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান খুঁজতে চীন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে। ড. ইউনূস আশা প্রকাশ করেন যে, চীন বাংলাদেশে বসবাসকারী ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে রাজনৈতিক, আর্থিক ও মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে।
প্রধান উপদেষ্টা চীনে তার স্মৃতির কথাও স্মরণ করেন, যেখানে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনূস সেন্টার স্থাপন করেছে এবং অনেক তরুণ থ্রি জিরো ক্লাব গঠন করেছে, যার সদস্যরা জলবায়ু পরিবর্তনে শূন্য অবদান, শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ এবং শূন্য বেকারত্বের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি দুই দেশের মধ্যে যুব থেকে যুব সহযোগিতা এবং জনগণের সঙ্গে মানুষের সংযোগের ওপর জোর দেন।
বৈঠকে চীনা রাষ্ট্রদূত প্রফেসর ইউনূসকে তার সুবিধাজনক সময়ে চীন সফরের জন্য চীনা নেতৃত্বের আমন্ত্রণ জানান।
bdnewseu/26August/ZI/politics