দেশের প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হলেন সৈয়দ রেফাত আহমেদ।বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি তাকে নিয়োগ দিয়েছেন।শনিবার (১০ আগস্ট)রাতে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তাকে নিয়োগ দিয়ে আইন মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান-এর ৯৫(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগদান করিয়াছেন। এই নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ হইতে কার্যকর হইবে।’
উল্লেখ্য যে, দেশে এই প্রথম হাইকোর্ট বিভাগের কোনো বিচারপতিকে সরাসরি প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিলেন রাষ্ট্রপতি।সৈয়দ রেফাত আহমেদ ২০০৩ সালে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০০৫ সালে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে স্থায়ী নিয়োগ পান।
এর আগে শনিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে পদত্যাগ করেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ ৬ জন বিচারপতি। প্রধান বিচারপতি পদত্যাগ করার পর সুপ্রিম কোর্ট থেকে জানানো হয়েছিল ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে মো. আশফাকুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এটা নিয়ে আপত্তি জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। একই সঙ্গে সৈয়দ রেফাত আহমেদকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান তারা। তাদের প্রতিবাদের মুখে আইন মন্ত্রণলায় থেকে দাবি করা হয়, ‘এখনও ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়নি!’
পরে রাত ৯টার দিকে সৈয়দ রেফাত আহমেদকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানায় আইন মন্ত্রণালয়। আপিল বিভাগের যে ৫ বিচারপতি পদত্যাগ করেছেন তারা হলেন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন।
বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ১৯৫৮ সালের
২৮ ডিসেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ ছিলেন বাংলাদেশের একজন অ্যাটর্নি জেনারেল। তার মা সুফিয়া আহমেদ ছিলেন বাংলাদেশের একজন জাতীয় অধ্যাপক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির অধ্যাপক।
বিচারপতি আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি আইনশাস্ত্রে স্নাতক এবং ১৯৮৩ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াদহাম কলেজে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি টাফ্টস ইউনিভার্সিটির দ্য ফ্লেচার স্কুল অফ ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি-তে মাস্টার্স এবং পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন।
তারপর তিনি ১৯৮৪ সালে জেলা আদালতের আইনজীবী হন। তিনি ১৯৮৬ সালে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হন। তিনি হংকং ও ওয়াশিংটন, ডি.সি.-এ জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারে কাজ করেছেন। বিচারপতি আহমেদ ২০০২ সালে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হন।
তারপর তিনি ২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল বাংলাদেশ হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি নিযুক্ত হন। ২০০৫
সালের ২৭ এপ্রিল তিনি হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া পান।
bdnewseu/10August/ZI/bd