চীন আশা করছে শীঘ্রই বাংলাদেশে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে-শেখ হাসিনা এখনও ভারতে।শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে বেশ উত্তপ্ত হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। অবশেষে গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে তিনি ভারতে পালিয়ে যান।মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের কাছে চীন সরকারের প্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হয়।জবাবে তিনি বলেন, “একটি বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী এবং কৌশলগত সহযোগী হিসেবে চীন আশা করে বাংলাদেশে দ্রুত সময়ের মধ্যে সামাজিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।”
এদিকৈ ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন সেখানেই অবস্থান করছেন।দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন,শেখ হাসিনা তাদের কাছে ‘অল্প সময়ের মধ্যে’ জরুরিভিত্তিতে আশ্রয় চান। এ সময় হাসিনা আরও জানান, ভারতে অল্প সময়ের জন্য অবস্থান করবেন তিনি।ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর আরও বলেন, “খুবই অল্প সময়ের নোটিশে, অল্প সময় অবস্থানের জন্য হাসিনা ভারতে আসার অনুমতি চান।” ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটির সংসদে আরও জানিয়েছেন, তারা বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন। বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এমন আশাও ব্যক্ত করেন জয়শঙ্কর।
তিনি বলেন, “আমাদের প্রত্যাশা যে বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।”
জয়শঙ্কর আরও জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ২০ হাজার ভারতীয় নাগরিক ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্তত ৮ হাজার জন ফিরে এসেছেন। এছাড়া তাদের নজর সংখ্যালঘুদের উপর থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শেখ হাসিনা ভারত থেকে যুক্তরাজ্যে যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে যুক্তরাজ্য হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে।দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, তাদের যে অভিবাসন আইন রয়েছে; সেখানে কোনো ব্যক্তির যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ করে এসে রাজনৈতিক বা সাধারণ আশ্রয় নেওয়ার বিধান নেই।
এর বদলে শেখ হাসিনাকে এখন ভারতেই থাকতে বলেছেন তিনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, “যে ব্যক্তি রাজনৈতিক আশ্রয় চাইছেন; তিনি প্রথম নিরাপদ যে দেশে পৌঁছান সেখানেই চাওয়া উচিত।”তিনি আরও বলেছেন, “যাদের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা প্রয়োজন তারা প্রথম যে নিরাপদ দেশে যান সেখানেই এটি চাওয়া উচিত। এটি নিরাপত্তার সবচেয়ে ভালো পথ।”তবে যুক্তরাজ্যের অনীহা সত্ত্বেও শেখ হাসিনা দেশটির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার আবেদন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
উল্লেখ্য যে,কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে তীব্র চাপে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে সোমবার ভারতে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দিল্লিতে যাওয়ার পর দেশটির শীর্ষ পর্যায়ের মন্ত্রীরা দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ইস্যুতে দেশটিতে সর্বদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের চলমান অস্থিতিশীলতায় ভারতের অবস্থান ও পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এনডিটিভি বলছে, প্রতিবেশি দেশে চলমান সহিংসতার ঘটনায় সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি নাজুক হয়েছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ অবৈধ অনুপ্রবেশের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছে।
bdnewseu/10August/ZI/China