• শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি
প্রিয় পাঠক আমাদের সাইটে আপনাকে স্বাগতম এই সাইটি নতুন ভাবে করা হয়েছে। তাই ১৫ই অক্টোবর ২০২০ সাল এর আগের নিউজ গুলো দেখতে ভিজিট করুন : old.bdnewseu24.com

ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ইউরো ফুটবলের চ্যাম্পিয়ন স্পেন

কবির আহমেদ কূটনৈতিক বিশ্লেষক আন্তর্জাতিক ডেক্স থেকে বিডিনিউজ ইউরোপ
আপডেট : মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০২৪

ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ইউরো ফুটবলের চ্যাম্পিয়ন স্পেন।ইউরো ২০২৪ এর শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনাল খেলায়ইংল্যা ন্ডকে ২-১ গোলে পরাজিত করে ১২ বছর পর পুনরায় শিরোপা ঘরে তুলল স্পেন। রবিবার (১৪ জুলাই) জার্মানির বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডি য়ামে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলের ফাইনাল খেলায় স্পেন জয়লাভ করার ফলে ৫৮ বছরেও কাটল না ইংল্যান্ডের ট্রফি খরা।ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়ন হল স্পেন।এ নিয়ে চার বার ইউরো জিতল তারা। আরও এক বার ফাইনালে উঠে হারল ইংল্যান্ড। গত বার হারতে হয়েছিল ইতালির কাছে। এ বার স্বপ্নভঙ্গ হল টিকিটাকার ফুটবলের নৈপূণ্যের দেশ স্পেনের কাছে।বার্লিনে ইউরো কাপের ফাইনালে ৪-২-৩-১ ছকে তাদের চিরাচরিত ছকে খেলতে নামে স্পেন।অন্যদিকে স্পেনের বিরুদ্ধে ৩-৪-২-১ ছকে নামে ইংল্যান্ড। তিন জন সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারে শুরু করলও কয়েক মিনিটের মধ্যে বদলে যায় ইংল্যান্ডের ছক। স্পেনের লাগাতার আক্রমণের চাপে ৪-৪-২ ছকে চলে যায় ইংল্যান্ড। অর্থাৎ, গোলরক্ষকের সামনে চার জন। তাদের সামনে আরও চার জন। স্পেন যখন আক্রমণে উঠছিল, তখন ইংল্যান্ডের আট জন রক্ষণে নেমে যাচ্ছি লেন। শুধুমাত্র হ্যারি কেন ও জুড বেলিং হ্যাম সামনেছিল।

ফাইনাল খেলার শুরু থেকেই স্পেনের পায়ে ছিল বল। নিজেদের মধ্যে ছোট ছোট পাস খেলে দুই প্রান্ত ধরে আক্রমণে উঠছিল তারা। বাঁ প্রান্তে উইলিয়ামস ও কুকুরেয়া এবং ডান প্রান্তে ড্যানি কার্ভাহাল ও ইয়ামাল আক্রমণ তুলে আনার দায়িত্বে ছিলেন। প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যে উইলিয়ামস দু’বার ইংল্যান্ডের বক্সে ঢুকে পড়েন। কিন্তু গোল করতে পারেননি। সেই সময় পুরো রক্ষণাত্মক হয়ে পড়েছিল ইংল্যান্ড। বেশির ভাগ সময়টাই খেলা হচ্ছিল ইংল্যান্ডের অর্ধে। স্পেনের সব আক্রমণ শুরু হচ্ছিল রদ্রি ও ফাবিয়ান রুইজ়ের পা থেকে।

খেলার ১৫ মিনিটে প্রথম আক্রমণ তুলে আনে ইংল্যান্ড। ডান প্রান্ত ধরে ওঠেন কাইল ওয়াকার। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। তবে কিছুটা হলেও খেলায় ফেরে ইংল্যান্ড। বেশি বল পেতে শুরু করেন বেলিংহ্যামেরা। তবে
বেশীক্ষণ অবশ্য সেই পরিস্থিতি থাকেনি। আবার আক্রমণ শুরু করে স্পেন। ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট রক্ষণাত্মক পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছিলেন। স্পেনের ফুটবলারদের পায়ে বল থাকলেও ডিফেন্স চেরা পাস দেওয়ার জায়গা দিচ্ছিল না ইংল্যান্ড। গোলের সামনে ফুটবলার বাড়িয়ে স্পেনকে আটকে রেখেছিল তারা। প্রথমার্ধে সেই পরিকল্পনা কাজেও লেগে যায়। ৪৫ মিনিটের মাথায় ভাল সুযোগ পায় ইংল্যান্ড। ডান প্রান্ত ধরে ডেকলান রাইসের ফ্রিকিক ধরে শট মারেন ফিল ফোডেন। প্রথম পোস্টে ঠিক জায়গায় ছিলেন স্পেনের গোলরক্ষক উনাই সিমোন। বল ধরে নেন তিনি। গোলশূন্য অবস্থায় বিরতিতে যায় দুই দল।

বিরতির পর খেলার দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে একটি বদল করেন স্পেনের কোচ লুই দে লা ফুয়েন্তে। রদ্রিকে তুলে নিয়ে মার্টিন জুবিমেন্ডিকে নামান তিনি। সেই পরিবর্তনে কিছুটা হলেও পরিকল্পনা গুলিয়ে যায় ইংল্যান্ডের। তার ফল পায় স্পেন। দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর ১ মিনিট ১১ সেকেন্ডের মাথায় গোল করে স্পেনকে এগিয়ে দেন উইলিয়ামস (১-০)। কার্ভাহাল বুটের ডগা দিয়ে বল বাড়ান ইয়ামালকে। ডান প্রান্তে বল ধরে ভিতরে ঢোকেন ইয়ামাল। তিনি বল বাড়ান অরক্ষিত অবস্থায় থাকা উইলিয়ামসকে। তাঁর বাঁ পায়ের শটে পরাস্ত হন ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক জর্ডন পিকফোর্ড। দুই তরুণ ফুটবলারেরা পায়ে ইউরোর ফাইনালে এগিয়ে যায় স্পেন। এই গোলের ক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের রক্ষণেরও দোষ ছিল। উইলিয়ামসকে কেউ লক্ষ্যই করেননি। ফাঁকায় বল পেয়ে গোল করেন তিনি।

পরের কয়েক মিনিট স্পেনের আক্রমণের গতি আরও বাড়ে। পর পর সুযোগ তৈরি করতে থাকে তারা। ৫০ মিনিটের মাথায় ড্যানি অলমোর শট পোস্টের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। ৫৫ মিনিটে গোল করার সহজ সুযোগ ফস্কান স্পেনের অধিনায়ক আলভারো মোরাতা। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করে ইংল্যান্ড। ৬০ মিনিটের মাথায় কেনকে তুলে নেন সাউথগেট। যত ক্ষণ মাঠে ছিলেন দেখাই যায়নি কেনকে। তাই তাঁর বদলে সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের নায়ক অলি ওয়াটকিন্সকে নামান তিনি। ৬৩ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ভাল শট মারেন বেলিংহ্যাম। কিন্তু বল গোলে রাখতে পারেননি তিনি।

এক গোলে এগিয়ে থাকলেও আক্রমণের ধার কমায়নি স্পেন। তারা জানত, বেশি রক্ষণাত্মক হয়ে পড়লে দল চাপে পড়ে যেতে পারে। ৬৭ মিনিটের মাথায় অলমোর পাস ধরে বক্সে ঢুকে দ্বিতীয় পোস্টে বল রাখার চেষ্টা করেন ইয়ামাল। ঝাঁপিয়ে বল বার করেন পিকফোর্ড। নইলে সেমিফাইনালের পরে ফাইনালেও গোল করে ফেলতেন ইয়ামাল।

দু’দলই গোল করার চেষ্টা করছিল। ইংল্যান্ডের লক্ষ্য ছিল সমতা ফেরানোর। স্পেন চেষ্টা করছিল ব্যবধান বাড়াতে। ফলে কিছুটা হলেও ওপেন হয়ে যায় খেলা। অনেক বেশি সুযোগ তৈরি হতে থাকে। ৭৩ মিনিটের মাথায় সমতা ফেরায় ইংল্যান্ড। আরও এক জন পরিবর্ত ফুটবলার হাসি ফোটান সমর্থকদের মুখে। ৭০ মিনিটের মাথায় নেমেছিলেন কোল পামার। বুকায়ো সাকা ও বেলিংহ্যামের পা হয়ে বল আসে তাঁর কাছে। বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের মাটি ঘেঁষা শটে সিমোনকে পরাস্ত করেন পামার (১-১)। গোল খেয়ে কিছুটা হলেও চাপে পড়ে স্পেন। তার সুযোগ তোলার চেষ্টা করে ইংল্যান্ড। প্রথমার্ধের রক্ষণাত্মক ফুটবল ছেড়ে পুরোপুরি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে তারা। গোল পরিশোধের পর ইংল্যান্ডের পরিবর্তন ফুটবলারেরা নজর কাড়ছিলেন।

খেলার ৮১ মিনিটের মাথায় আবার ইংল্যান্ডকে বাঁচান পিকফোর্ড। বক্সের মধ্যে থেকে শট মেরেছিলেন ইয়ামাল। কিন্তু পিকফোর্ডকে পরাস্ত করতে পারেননি তিনি। দু’দলই জানত, এই সময় গোল খেলে ফিরে আসা কঠিন হবে। তাই আক্রমণ করলেও রক্ষণ সামলে রেখেছিল তারা। খেলা ধীরে ধীরে অতিরিক্ত সময়ের দিকে এগোচ্ছিল।

সেই সময় খেলার ঠিক ৮৬ মিনিটের মাথায় স্পেনকে এগিয়ে দেন পরিবর্তন হিসাবে নামা মিকেল ওয়্যারজাবাল। বাঁ প্রান্ত ধরে ওঠেন কুকুরেয়া। তিনি বল বাড়ান বক্সে। ডিফেন্ডারের আগে বলে পা লাগান ওয়্য়ারজাবাল। পিকফোর্ডকে পরাস্ত করে গোল করেন তিনি (২-১)।

তারপর গোল পরিশোধ করে খেলায় সমতা আনার অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় ইংল্যান্ড। শেষ দিকে গোললাইন থেকে হেড দিয়ে গোল রক্ষা করেন স্পেনের অলমো। আর ফিরতে পারেনি ইংল্যান্ড। আরও এক বার হেরে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।

bdnewseu/16July/ZI/EuroCup


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ