প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী নির্বাচনে সরে দাঁড়াবেন না।৮১ বছর বয়স্ক বাইডেনের বয়স এবং তার পক্ষেদেশ দেশ পরিচালনার সক্ষমতা নিয়ে নানা মহলে গুঞ্জনের জবাব দিয়েছেন তিনি।শনিবার (৬ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম ভয়েস অফ আমেরিকা জানায়,এবিসি নিউজের সাথে এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, তার দেশ পরিচালনার মতো মানসিক তীক্ষ্ণতা ও শারীরিক সক্ষমতা উভয়ই রয়েছে।ভোয়া আরও জানায়, প্রেসিডেন্ট বাইডেন শুক্রবার জাতীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে তার পাঁচ দশকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে উপজীব্য করে এবং আসন্ন পুননির্বাচনের প্রচারণাকে সামনে রেখে দাবি করেছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনে জিতে আরও চার বছর দেশ পরিচালনার মতো মানসিক তীক্ষ্ণতা ও শারীরিক সক্ষমতা উভয়ই রয়েছে তার।
এবিসি নিউজের সঞ্চালক জর্জ স্টেফানোপোলোসকে দেওয়া ২২ মিনিটের সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, “(প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের জন্য) আমিই সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি এবং আমি জানি (মানুষের কাছ থেকে) কীভাবে কাজ আদায় করে নিতে হয়।” এর আগে, শুক্রবার তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য-পশ্চিম অঞ্চলের রাজনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে সমবেত হওয়া প্রায় ৩০০ সমর্থককে আশ্বস্ত করে বলেন, “আমি নির্বাচনী দৌড়ে থাকছি।”
ওয়াশিংটনের কিছু ডেমোক্র্যাটিক আইনপ্রণেতা পরবর্তী চার মাস পেরিয়ে আগামী ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়ে জয়ী হওয়ার মতো মানসিক ও শারীরিক সক্ষমতা ৮১ বছর বয়সী বাইডেনের আছে কী না, তা নিয়ে একান্তে এবং ক্রমশই প্রকাশ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। পরবর্তী চার বছর ধরে দেশ শাসন করাতো দূরের কথা!
কিন্তু স্টেফানোপোলোসকে বাইডেন বলেন, “যদি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর পৃথিবীতে নেমে এসে আমাকে বলেন, ‘হে জো, (নির্বাচনী) দৌড় থেকে সরে যাও’, শুধুমাত্র সে ক্ষেত্রেই আমি নিজেকে সরিয়ে নেব। কিন্তু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর পৃথিবীতে নেমে আসছেন না।”
এক সপ্তাহ আগে ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে বাইডেনকে দ্বিধান্বিত মনে হয়েছিল এবং তিনি বারবার কথার খেই হারিয়ে ফেলছিলেন। কখনো কখনো তিনি এক প্রসঙ্গ থেকে অন্য প্রসঙ্গে চলে যাচ্ছিলেন, এবং সব মিলিয়ে, সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয় নিয়ে ট্রাম্পকে আক্রমণ করতে পারেননি এবং তার নিজের সাড়ে তিন বছরের শাসনামলের সমালোচনারও উপযুক্ত জবাব দিতে পারেননি। যার ফলে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে আশঙ্কা দেখা দেয়, বাইডেনের ক্ষমতায় থাকার সময় ফুরিয়ে এসেছে।
বিতর্কের সন্ধ্যা নিয়ে মন্তব্য করেন বাইডেন, “আমি অত্যন্ত ক্লান্ত ছিলাম”, । “আমার খুবই খারাপ লাগছিল…আমার অনেক ঠাণ্ডা লেগেছিল।” তিনি (ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিতর্কে) তার দুর্বল পারফরম্যান্স প্রসঙ্গে বলে, “এটা শুধু আমার নিজের ত্রুটি, অন্য কারো নয়। সময়টা আমার জন্য খারাপ গেছে।” তবে শুক্রবার বাইডেন অত্যন্ত সজাগ ছিলেন এবং তেমন কোনো জড়তা ছাড়াই স্টেফানোপোলোসের সব প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কথা বলতে উদগ্রীব ছিলেন।
সংবাদ উপস্থাপক স্টেফানোপোলোস যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির সাংবাদিকদের অন্যতম। তিনি বাইডেনকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি কখনো কোনো মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে গেছেন কী না। জবাবে বাইডেন বলেন, “আমি আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোর মোকাবিলায় প্রতিদিনই পূর্ণাঙ্গ মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাই।” কখনো কোনো বুদ্ধিবৃত্তি যাচাইয়ের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন কী না, এ প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, “আমাকে কেউ কখনো বলেনি যে এটার প্রয়োজন আছে।”
উইসকনসিনের ম্যাডিসনে সমর্থকদের আশ্বস্ত করে বাইডেন বলেন, “আমি লড়ছি, এবং আমি আবারও জয়লাভ করব।” বলিষ্ঠকন্ঠে বাইডেন বলেন, “আমি একবার ডনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়েছি”। উপস্থিত জনতা চিৎকার করে ও প্রচারণামূলক সাইনবোর্ড উঁচিয়ে উল্লাস প্রকাশ করে। এ সময় বাইডেন বলেন, “আমি আবারও তাকে হারাব।”
bdnewseu/7July/ZI/usa