আইসিসি টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের অবিশ্বাস্য জয় ।আফগানিস্তান ক্রিকেট দল বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়াকে ২১ রানে হারিয়ে এক ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করেছে।শনিবার (২২ জুন) আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপের সুপার ৮ পর্বে আফগানিস্তান ক্রিকেট দল পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়াকে ২১ রানে হারিয়ে টুর্নামেন্টে এক ধরনের ভূমিকম্প ঘটিয়ে দেয়। আফগা নিস্তানের ৬ উইকেটে ১৪৮ রানের জবাবে অস্ট্রেলিয়া ৪ বল বাকি থাকতেই ১২৭ রানে সবাই আউট হয়ে যায়। সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড দ্য গ্রেনাডিন্স-এর আরনস ভেল মাঠে এই এই ঐতিহাসিক জয়ের ফলে আফগানিস্তানের সেমি ফাইনালে পৌঁছানোর রাস্তা যেমন খুলে গেল, তেমনি অস্ট্রেলিয়া বা ভারতের বাদ পড়ার সম্ভাবনার সৃষ্টি হল।সোমবার (২৪ জুন) সকালে অস্ট্রেলিয়া (যাদের আছে ২ পয়েন্ট) খেলবে ভারতের বিরুদ্ধে, যাদের হাতে ৪ পয়েন্ট। সেদিন সন্ধ্যায় আফগানিস্তানের শেষ ম্যাচ হবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। আফগানিস্তান সেই ম্যাচে জিতলে তাদের ৪ পয়েন্ট হবে। অর্থাৎ, শেষ দু ম্যাচের উপর নির্ভর করবে কারা সেমি ফাইনালে যাবে।
টসে জিতে অস্ট্রেলিয়া প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেয়, যা পর্যবেক্ষকদের অবাক করে দেয়। খেলা শুরু হবার আগে বিশ্লেষকরা মতামত দেন যে, আরনস ভেল মাঠে প্রথমে ব্যাট করা দল যদি ১৩০ এর বেশি রান করে, তাহলে দ্বিতীয় ব্যাটিং দলের জন্য জয় কঠিন হয়ে যাবে। অবশেষে ঘটনা তাই হল।
আফগানিস্তানের উদ্বোধনী জুটি ১৫.৫ ওভার ব্যাট করে ১১৮ রান গড়ে তোলেন। রহমানউল্লাহ গুরবায ৪৯ বলে ৬০ রান তোলেন, যার মধ্যে ছিল ৪টি ছয় এবং ৪টি চার। তার পার্টনার ইব্রাহিম জাদ্রান ৪৮ বলে ৫১ রান হাঁকান। অপরদিকে অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা প্রথম ১৫ ওভারে খেলা নিয়ন্ত্রণে আনতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হন, কিন্তু ১৬তম ওভারে মারকাস স্টইনিস গুরবাজের উইকেট নিলে আফগানিস্তানের ব্যাটিং এর ছন্দ ব্যাহত হয়।
অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্স, যিনি বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উইকেট হ্যাটট্রিক নেন, তিনি আবার পর পর তিন বলে তিনটি উইকেটের পতন ঘটান। কিন্তু কামিন্সের হ্যাটট্রিক আসে একটু বেশি দেরিতে, কারণ আফগানিস্তান তাদের ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়।
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং-এর জন্য এই টার্গেট নাগালের মধ্যে থাকার কথা, কিন্তু আফগানিস্তানের পেস বোলার নাভিন হক তার প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে অস্ট্রেলিয়ার মারমুখী ব্যাটারদের অন্যতম ট্রাভিস হেড-এর উইকেট ফেলে দেন।তৃতীয় ওভারে অধিনায়ক মিচেল মারশ যখন আউট হন তখন অস্ট্রেলিয়ার খাতায় মাত্র ১৬ রান। ষষ্ঠ ওভারে দলীয় ৩২ রানের মাথায় অভিজ্ঞ ওপেনার ডেভিড ওয়ারনার আউট হলে অস্ট্রেলিয়া পুরোপুরি বিপর্যয়ের মুখে পরে।
তবে অস্ট্রেলিয়াকে অতীতে এরকম বিপর্যয় থেকে উদ্ধার করেছেন যে প্লেয়ার, সেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আবার একই ঘটনা ঘটানোর আভাস দেয়া শুরু করেন। প্রথমে স্টইনিস, পরে টিম ডেভিডের সাথে তিনি ছোট খাটো পার্টনারশিপ গড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নি। পনেরোতম ওভারে ম্যাক্সওয়েল ব্যক্তিগত ৫৯ রানের মাথায় গুলবাদিন নাইবের বলে আউট হন। অস্ট্রেলিয়ার রান সংখ্যা তখন ৬ উইকেটে ১০৬, এবং পরাজয় ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র।
পুরো সময় আফগানিস্তানের বোলাররা আক্রমণাত্মক মনোভাব বজায় রাখেন, এবং তাদের ফিল্ডিং, বিশেষ করে ক্যাচিং ছিল অসাধারণ। নাইব মাত্র ২০ রানে ৪ উইকেট দখল করেন আর অস্ট্রেলিয়ার পতনের সূচনাকারী নাভিন হক ২০ রানে ৩ উইকেট তুলে নেন।
bdnewseu/25June/ZI/Sports