রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে যেভাবে পাক বাহিনী দের পরাজিত করা হয়েছে, তেমনিভাবে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতাকারীদের পরাজিত করা হবে। কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক
টাঙ্গাইলে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে যেমন ধ্বংস করা যাবে না, তেমনি কেউ যদি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে বা ভাঙে তাহলে তাদের একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মতো মোকাবেলা করে আবার পরাজিত করবো। তাদের আবার আমাদের পায়ের নিচে পড়ে ক্ষমা চাইতে হবে।
আজ শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) টাঙ্গাইলের পৌর পার্কে টাঙাইল পৌরসভা আয়োজিত টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য যারা ভেঙেছে তাদের কী বিচার হবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী তাদের এই কাজ রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। এই আইনেই তাদের বিচার হবে। তাদের অবশ্যই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরে বিএনপি জড়িত ও তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে কিনা – এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি তাদের সাথে জোট করে ক্ষমতায় এসেছিল। ভাঙচুরে অবশ্যই তাদের যোগসাজশ আছে। কিন্তু বিচার করতে গেলে প্রমাণ লাগে। প্রমাণ সাপেক্ষে অবশ্যই তাদের বিচার হবে। তারা যদি অর্থ দিয়ে থাকে বা অন্যভাবে সহযোগিতা করে থাকে, তবে অবশ্যই তাদের বিচার হবে। যারা যারা অপরাধ করেছে, তারা কেউই রেহাই পাবে না।
কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু এ দেশকে শুধু স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে চাননি, তিনি এটিকে বলেছিলেন মুক্তির সংগ্রাম। দেশকে তিনি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ সব দিক দিয়ে স্বাধীন করতে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং ন্যায় ও সমতার ভিত্তিতে একটি অসাম্প্রদায়িক এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ঘাতক চক্র ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। তারপর থেকে ২১ বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। যার ধারাবাহিকতা হলো বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা ও ভাঙচুর।
ড. রাজ্জাক আরও বলেন, ভাস্কর্য ও মূর্তি এক নয়। ভাস্কর্যের একটা নান্দনিক দিক রয়েছে, এটি একটি শিল্প। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হচ্ছে যাতে করে তাঁর আদর্শ ও চেতনাকে আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা যায়। ভাস্কর্য হচ্ছে স্মৃতিচিহ্ন বা স্মারক। এর মাধ্যমে ভবিষ্যত প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুব্ধ হবে।
আজ টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বরে মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে টাঙ্গাইলকে মুক্ত করেন। ১১ ডিসেম্বর সকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও বর্তমানে আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বিরাট বাহিনী নিয়ে টাঙ্গাইল পুরোনো শহরে প্রবেশ করেন এবং থানা চত্বরে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।
টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরনের সভাপতিত্বে সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন, তানভীর হাসান ছোট মনির এতে বক্তব্য রাখেন।
বিডিনিউজ ইউরোপ /১১ ডিসেম্বর / জই