• মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
বিজ্ঞপ্তি
প্রিয় পাঠক আমাদের সাইটে আপনাকে স্বাগতম এই সাইটি নতুন ভাবে করা হয়েছে। তাই ১৫ই অক্টোবর ২০২০ সাল এর আগের নিউজ গুলো দেখতে ভিজিট করুন : old.bdnewseu24.com

ক্রমশ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ‘রেমাল’ – জারি হতে পারে মহাবিপদ সংকেত

Kabir Ahmed National desk bdneu
আপডেট : শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪

ক্রমশ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ‘রেমাল’ – জারি হতে পারে মহাবিপদ সংকেত ।ঘূর্ণিঝড় রেমাল রবিবার (২৬ মে) বাংলাদেশের সাতক্ষীরা ও কক্সবাজারের মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে।শনিবার (২৫ মে) সচিবালয়ে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমালের পরিস্থিতি মোকাবেলার বিষয়ে প্রস্তুতি সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। রবিবার প্রথম প্রহরে মহাবিপদ সংকেত জারি হতে পারে বলে জানান তিনি।“বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশের আবহাওয়া দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আমরা বুঝতে পেরেছি, ঘূর্ণিঝড় আসন্ন;” বলেন প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান। তিনি জানান, সতর্ক সংকেত রাতে ৪-এর উপরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে সময় ঘূর্ণিঝড় বিপদের পর্যায়ে চলে যেতে পারে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস পর্যালোচনা করে প্রস্তুতি নেয়া শুরু হয়েছে।রাত ১টা নাগাদ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি হতে পারে বলে জানান তিনি। বলেন, “আমারা ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রেখেছি। সার্বিক প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। সেই অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছে।”মহিববুর রহমান আরো জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত কমবেশি এফেকটেড হতে পারে। ৭ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তখন প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। এজন্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস হতে পারে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

রবিবার (২৬ মে) সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, “উপকূলীয় জেলায় আমাদের প্রায় ৪ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র আছে। এগুলো আমরা প্রস্তুত রেখেছি।”
“এছাড়া, প্রত্যেকটি জেলায় পর্যাপ্ত শুকনো খাবারসহ যেসব জিনিস দরকার হবে, এগুলো মজুত রেখেছি। প্রয়োজনে ঢাকা থেকে যাতে আরো পণ্য সরবরাহ দিতে পারি এজন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি;” জানান প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান।

খুলনায় প্রস্তুতি:

ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে খুলনা জেলা প্রশাসন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৬০৪টি আশ্রয়কেন্দ্র, তিনটি মুজিব কিল্লা ও পাঁচ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে পারবেন ৩ লাখ ১৫ হাজার ১৮০ মানুষ। খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকার জন্য বলা হয়েছে। সতর্ক থাকার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিপদ সংকেত জারি হলে এলাকায় মাইকিং করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

শুকনো খাবার, ওষুধ, ঢেউটিন ও নগদ টাকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ৬০৪ সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাতে পরিস্থিতি অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ লোকজন সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন।

তিনি আরো বলেন, এসব সাইক্লোন শেল্টারে মোট ৩ লাখ ১৫ হাজার ১৮০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। এছাড়া তিনটি মুজিব কিল্লায় ৪৩০ জনকে আশ্রয় ও ৫৬০টি গবাদি পশু রাখা যাবে।এদিকে, কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলায় ৫ হাজার ২৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান খুলনা জেলা প্রশাসক।

আবহাওয়া পূর্বাভাস:

এর আগে, আবহাওয় বিভাগ জানিয়েছে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করা গভীর নিম্নচাপটি সামান্য উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।শনিবার (২৫ মে) সকালে এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিম্নচাপটি শনিবার (২৫ মে) সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৭০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিলো।

এটি, উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আরো ঘনীভূত হতে পারে বলে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। বলা হয়, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থান করা মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, তাদেরকে গভীর সাগরে চলাচল না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় রেমাল: যেসব রুটে বিমানের ফ্লাইট বাতিল:

এদিকে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দেশের জাতীয় সংবাদ মাধ্যম জানায়,বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় রেমালে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ফলে রোববার (২৬ মে) কক্সবাজার ও কলকাতা রুটের ফ্লাইট বাতিল করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস।

শনিবার (২৫) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোসরা ইসলাম এক বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।বোসরা ইসলাম জানান, রেমালের কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ২৬ মে কক্স বাজা রগামী সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া, আগামী ২৬ মে কলকাতাগামী বিজি-৩৯৫ ও ২৭ মে কলকাতা গামী বিজি-৩৯১ ফ্লাইটটিও বাতিল করা হয়েছে।তিনি জানান,অন্যান্য ফ্লাইটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত না আসাপর্যন্ত সেগুলো স্বাভাবিক থাকবে।

জাতীয় সংবাদ মাধ্যম সর্বশেষ বুলেটিনে আরও জানায়,শনিবার রাতে রেমালের প্রভাবে দেশের চারটি সমুদ্র বন্দরের ওপর সতর্ক সংকেত বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

bdnewseu/25May/ZI/weather


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ