নরেন্দ্র মোদীর মনোনয়নপত্র জমা ।ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাধারণ নির্বাচনে তৃতীয় মেয়াদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।মঙ্গলবার (১৪ মে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তর প্রদেশের বারাণসীতে দেশের সাধারণ নির্বাচনে তৃতীয় মেয়াদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।উত্তর প্রদেশে হিন্দুদের এই পবিত্র শহরকে নিজের নির্বাচনী এলাকা বানিয়ে ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে মোদী জয় লাভ করেছিলেন। এই আসন থেকেই টানা তৃতীয় মেয়াদে জয়ের আশা করছেন নরেন্দ্র মোদী।
ভারতের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে,এই নির্বাচন মোদী এবং তার ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-কে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বে কিছু ক্ষমতাশালী আঞ্চলিক দল সহ দুই ডজনেরও বেশি বিরোধী দলের জোটের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছে। তবে বিভিন্ন জরিপ অনুযায়ী, সংসদের নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন মোদী ও তার বিজেপি।
বিরোধী দলের জোট এখনো তাদের প্রধানমন্ত্রীর প্রার্থী ঘোষণা করেনি। উল্লেখ্য যে, প্রায় ১৭ লাখ ভোটার সহ বারাণসীর নির্বাচনী এলাকায় ১ জুন ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে।মোদী বারাণসীতে অজয় রাই-এর বিরুদ্ধে আসন ধরে রাখতে পারবেন বলে আশা করছেন, যিনি বিজেপি বিরোধী কংগ্রেসের সাথে জোটবদ্ধ আঞ্চলিক সমাজবাদী পার্টির হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন।
এছাড়াও বারাণসীর নির্বাচনী মঞ্চে রয়েছেন বহুজন সমাজ পার্টির আতহার জামাল লরি। এই পবিত্র শহরটি গঙ্গার তীরে অবস্থিত এবং প্রায় ২০০ মিলিয়ন জনসংখ্যা সহ ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশের অংশ। উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের দিক থেকে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য, কারণ এটি সংসদে সর্বাধিক সংখ্যক সাংসদ সদস্য পাঠায়। এছাড়াও, গত দুটি নির্বাচনে মোদী এবং বিজেপির জয়ের পিছনে এই রাজ্যের একটি বড় ভূমিকা ছিল।
হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে বিজেপির হিন্দু জাতীয়তাবাদী এজেন্ডা মোদী এবং দলের পক্ষে বিপুল সমর্থন এনে দিয়েছে। গত ১০ বছরে, ক্ষমতায় থাকাকালীন মোদী যে এজেন্ডাগুলো পূরণ করেছেন, তার মধ্যে রয়েছে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করা এবং একটি নাগরিকত্ব আইন প্রণয়ন, যা প্রতিবেশী দেশ থেকে পালিয়ে আসা হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু ধর্মালম্বীদের নাগরিকত্ব দেয় কিন্তু মুসলমানদের জন্য তা প্রযোজ্য নয়।
সমালোচকরা এবং বিরোধী দলগুলি অভিযোগ করে আসছে, মোদীর দেশের ধর্মনিরপেক্ষ নীতি ক্ষুণ্ণ করেছেন। অধিকার গোষ্ঠীগুলির দাবী, তার এক দশকের দীর্ঘ শাসনামলে মুসলমানদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে এবং তারা হয়রানির শিকার হচ্ছে। বিজেপি দৃঢ়ভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে। তাদের দাবী, কল্যাণমূলক কর্মসূচি যেমন বিনামূল্যে রেশন, বাড়ি এবং টয়লেট তৈরিতে সহায়তা ইত্যাদি সব সম্প্রদায়কে অন্তর্ভুক্ত করে এবং সরকারের নীতির ফলে সকল ভারতীয় সমানভাবে উপকৃত হচ্ছে।
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের ভোটাররা ১৯ এপ্রিল একটি সাত ধাপের নির্বাচনে ভোট দেওয়া শুরু করে, যেখানে প্রায় একশ কোটি মানুষ ভোট দেওয়ার যোগ্য।
ভোটগ্রহণের সমাপ্তি হবে ১ জুন, এবং ভোট গণনা হবে ৪ জুন।
bdnewseu/15May/ZI/India