শীর্ষ মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিক্ষোভ সামাল দিতে হিমশিম হচ্ছে/গাজায় ইসয়ারেলি আগ্রাসনের ২০০ দিন অতিক্রম হয়েছে। এর মধ্যে ইসয়ারেল ৩৪ হাজার ১৮৩ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। হামাস বলছে, ২০০ দিনে ইসয়ারেল ফিলিস্তিনিদের হত্যা ছাড়া আর কোনো সফলতা অর্জন করেনি। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকার হামাসকে ধ্বংস করতে চাইলেও এখনো হামাস টিকে রয়েছে বীরদর্পে। তবে ইসয়ারেল গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছে। ১৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখনো গাজার ধ্বংসস্তূপের মধ্যে হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। গাজার একটি হাসপাতালে ৩১০ জনের একটি গণকবর পাওয়া গেছে। জাতিসংঘ এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিভিন্ন হাসপাতাল ইসয়ারেলি বাহিনী সামরিক অভিযান চালিয়ে নির্বিচারে রোগী ও হাসপাতালে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের হত্যা করেছে বলে অভিযোগ। যদিও ইসয়ারেল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে গণকবর পাওয়ার মাধ্যমে সেই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেল। প্রায় ৮০ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে যাদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু।
বিক্ষোভ সামাল দিতে হিমশিম মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে। ক্রমবর্ধমান এই বিক্ষোভ সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্মকর্তারা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। বিক্ষোভ থামাতে সোমবার ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক ডজন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ইহুদিবিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সশরীরে ক্লাস নেওয়া আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলেসহ অন্যান্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও বিক্ষোভ-প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে, বিক্ষোভ বন্ধ করে ক্যাম্পাসকে শান্ত রাখার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তাদের ওপর দিনদিন চাপ বাড়ছে বলে জানা গেছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জের ধরে ইসয়ারেল-গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর থেকেই যুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে বিক্ষোভ এবং তর্কবিতর্কের চর্চা বাড়তে থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। উভয় পক্ষের শিক্ষার্থীরাই দাবি করেছেন যে, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষ এবং ইসলামভীতি দুটোই বেড়েছে।
বিক্ষোভ সামাল দিতে গত সপ্তাহে নিউ ইয়র্ক সিটি পুলিশকে ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি দেয় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেখানে গিয়ে বিক্ষোভকারী কয়েক ডজন শিক্ষার্থীকে পুলিশ গ্রেফতার করে, যা সারা বিশ্বেই বেশ আলোচিত হয়।
অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের গ্রেফতারের ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরো কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সোমবার ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভকারী প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়টির কয়েক শ শিক্ষার্থী গত কয়েক দিন ধরেই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চালিয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের আরো যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে :ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান, ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি এবং এমারসন কলেজ। —আলজাজিরা ও বিবিসি
bdnewseu/24April/ZI/USA