অভিবাসীদের জন্য গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বিভীষিকাময় বছর ছিল ২০২৩। এমনটাই জানিয়েছে জাতিসংঘ৷সংস্থাটি জানায়, গত বছর অভিবাসন রুটে বিশ্বব্যাপী কমপক্ষে আট হাজার ৫৬৫ জন মারা গেছে৷ অনিয়মিত পথে উত্তর-আফ্রিকা থেকে ইউরোপে আসা অভিবাসীদের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভূমধ্যসাগরীয় পথে গতবছর ২০২২ এর চেয়ে ২০% বেশি অভিবাসী প্রাণ হারিয়েছেন৷বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) বলেছে, এই বছর মৃত্যুর সংখ্যা ২০২২ সালের তুলনায় ২০ শতাংশ বেড়ে যাওয়া ভবিষ্যতে এমন মর্মান্তিক প্রাণহানির ঘটনা রোধে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে৷ সংস্থাটির মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রকল্পটি বিশ্বব্যাপী অভিবাসীদের মৃত্যু ও নিখোঁজ হওয়ার তথ্য সংগ্রহ করে থাকে৷
আইওএম-এর ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল উগোচি ড্যানিয়েলস বলেন, মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রকল্পের সংগৃহীত এই ভয়াবহ পরিসংখ্যান আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, সবার জন্য নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে আমাদের অবশ্যই আরও বড় পদক্ষেপের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে৷ যেন এখন থেকে ১০ বছর পর মানুষকে উন্নত জীবনের জন্য তাদের জীবনের ঝুঁকি নিতে না হয়৷ অভিবাসীরা বাধ্য হন ঝুঁকিপূর্ণ পথে বেছে নিতে ২০২৩ সালে অভিবাসীদের মৃত্যুর সংখ্যা ২০১৬ সালের রেকর্ড আট হাজার ৮৪কে ছাড়িয়ে গেছে৷
নিরাপদ, নিয়ন্ত্রিত পথের অভাবের কারণেই হাজার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী বিপজ্জনক পথ বেছে নিতে বাধ্য হয় বলে জানিয়েছে আইওএম৷ ভূমধ্যসাগর অভিবাসীদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক পথ হিসেবে বিবেচিত হওয়া সত্ত্বেও উত্তর আফ্রিকা থেকে ইউরোপে পৌঁছানোর সময় এ পথে ২০২৩ সালে কমপক্ষে তিন হাজার ১২৯ জন মারা গিয়েছিল৷ যা ২০১৭ সালের পর এই রুটে সর্বোচ্চ মৃত্যু৷
২০২৩ সালে আফ্রিকা (১,৮৬৬) ও এশিয়া (২,১৩৮) মহাদেশে জুড়ে বিপুল সংখ্যক অভিবাসী মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে৷ যার মাঝে অনেকেই আফ্রিকার সাহারা মরুভূমি ও স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের সমুদ্র পথে মারা গেছেন৷ বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা ও আফগান শরণার্থীও এশিয়ায় প্রাণ হারিয়েছে৷
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে মারা যাওয়া মোট অভিবাসীর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি প্রাণ হারিয়েছেন সমুদ্রে ডুবে৷ এছাড়াও গাড়ি দুর্ঘটনায় ৯% ও সহিংসতায় ৭% মারা গেছেন৷
২০২৪ সালের প্রথম দুমাসে এ পর্যন্ত ৫১২ জন অভিবাসী প্রাণ হারিয়েছেন৷
bdnewseu/7March/ZI/DW