পাটকল-চিনিকল নয়, ধর্ষক ও গুণ্ডা তৈরির কল বন্ধ কর।
সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বেঈমানি করে চলছে। বর্তমান সরকার দেশকে গুণ্ডাতন্ত্রে পরিণত করেছে। পাটকল কিংবা চিনিকল নয়, ধর্ষক ও গুন্ডা তৈরীর কল বন্ধ করতে হবে।
আজ ৫ ডিসেম্বর (শনিবার) বরিশালের অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে “ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ”, বরিশাল এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক বিভাগীয় সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা গোলাম মোস্তফা এসব কথা বলেন।
গোলাম মোস্তফা আরো বলেন, এই সরকার গুণ্ডাতন্ত্রের মাফিয়া। চলমান স্বৈরাচার দুঃশাসনের বিপরীতে নারী পুরুষ শিশু সহ সর্বস্তরের মানুষের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ, ধর্ষণ ও বিচারহীনতা মুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সারাদেশের ছাত্র-তরুণ ও সর্বস্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বরিশাল জেলার সভাপতি রাহুল দাসের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন বরিশাল জেলা সম্পাদক সাকিবুল ইসলাম শাফিনের সঞ্চালনায়
“ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ” এর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্য বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল কাদেরী জয়, ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার, ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরমের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রকৌশলী শম্পা বসু।
জেলা নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বরিশাল জেলার নেতা হাসিব আহমেদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, মহানগর শাখার প্রচার সম্পাদক বিজয় শিকদার, পাঠচক্র ফোরাম, বরিশাল জেলার সংগঠক সুজয় শুভ, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম, বরিশাল জেলা সদস্য শানু বেগমসহ নেতৃবৃন্দ।
ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সারাদেশে ৯ দফা দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছে। ৯ দফা-
১। সারাদেশে অব্যাহতভাবে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতার সাথে যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষণ, নিপীড়ণ বন্ধ ও বিচারে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।
২। পাহাড়-সমতলে আদিবাসী নারীদের ওপর সামরিক-বেসামরিক সকল প্রকার যৌন ও সামাজিক নিপীড়ণ বন্ধ করতে হবে।
৩। হাইকোর্টের নির্দেশানুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি, বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতন বিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে। সিডো সনদে বাংলাদেশকে স্বাক্ষর ও তার পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক সকল আইন ও প্রথা বিলোপ করতে হবে।
৪। ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন ১৮৭২-১৫৫(৪) ধারাকে বিলোপ করতে হবে এবং মামলার ডিএনএ আইনকে সাক্ষ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে কার্যকর করতে হবে।
৫। অপরাধ বিজ্ঞান ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। ট্রাইবুনালের সংখ্যা বাড়িয়ে অনিষ্পন্ন সকল মামলা দ্রুত নিষ্পন্ন করতে হবে।
৬। তদন্তকালীন সময়ে ভিকটিকমে মানসিক নিপীড়ন-হয়রানি বন্ধ করতে হবে। ভিকটিমের আইনগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৭। ধর্মীয়সহ সকল ধরণের সভা-সমাবেশে নারী বিরোধী বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে। সাহিত্য, নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য হিসেবে উপ্সথাপন বন্ধ করতে হবে। পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণে বিটিসিএল এর কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। সুস্থ ধারার সাংস্কৃতিক চর্চ্চায় সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।
৮। পাঠ্যপুস্তকে নারীর প্রতি অবমাননা ও বৈষম্যমূলক যে কোন প্রবন্ধ, নিবন্ধ, পরিচ্ছদ, ছবি, নির্দেশনা ও শব্দ চয়ন পরিহার করা।
৯। গ্রামীন সালিশের মাধ্যমে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।
বার্তা প্রেরক-
হাসিব আহমেদ
সদস্য বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন
বরিশাল জেলা।
বিডিনিউজ ইউরোপ /৫ ডিসেম্বর / জই