রাষ্ট্রের ব্যবস্থাগত সংকট নিরসনে ছাত্র ফেডারেশন ০৯দফা।মতাদর্শিক পার্থক্য সত্ত্বেও জাতীয় স্বার্থে যার যার অবস্থানে ছাড় দিয়ে ঐক্যের পথকে সুগম করে আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে, ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নেতৃবৃন্দ মনে করেন ভোটাধিকার ও সন্ত্রাস-দখলমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠায় নূন্যতম কর্মসূচির ভিত্তিতে বৃহত্তর আন্দোলনের প্রয়োজন।
প্রস্তাবিত ৯ দফা হচ্ছে :-
১. ক) বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারকে পদত্যাগ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
খ) সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্যসহ রাষ্ট্র পরিচালনার সকল ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
গ) জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গীয় পরিচয় ও শ্রেণি নির্বিশেষে সকল নাগরিকের অধিকার ও মর্যাদার সাংবিধানিক নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।
২. ক) জাতীয় আয়ের ৫-ভাগ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ করতে হবে। শিক্ষা জাতীয় করন করে শিক্ষাক্রম-২০২০ বাস্তবায়নের উপযোগি কাঠামো গড়ে তোল। এস,এস,সি পর্যন্ত মাতৃভাষায় শিক্ষা ও সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই পাঠ্যক্রম চালু করতে হবে।
খ) মিডডে মিল চলুসহ অন্তত ৫০ হাজার নতুন সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় তৈরি করতে হবে।
গ) শিক্ষক- শিক্ষার্থী অনুপাত ৩০-১ করতে হবে।
ঘ) শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্য বিমা এবং শিক্ষকদের মর্যাদাপূর্ণ বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
ঙ) সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল চালু করতে হবে।
চ) স্কুল- কলেজ গুলোতে প্রশাসনিক দলীয় করণ বন্ধ করে হবে। ছাত্র- শিক্ষক- অভিভাবক’দের সমন্বয়ে স্কুল/কলেজ পরিচালনা কমিটি গঠন করতে হবে।
৩. ক) ইউজিসির কৌশল-পত্র বাতিল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারি হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। সকল বিশ্ববিদ্যালয়’কে স্বায়ত্তশাসিত ঘোষণা করে একজন শিক্ষাবিদকে আচার্য নিয়োগ দিতে হবে।
খ) ডাকসু সহ সকল শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে হবে।
গ) প্রথম বর্ষ থেকে বৈধ সিট/আবাসন নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানে হলে সিট বন্টন নিশ্চিত করতে হবে। গণরুম-গেস্টরুম নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।
ঘ) পরিবহণ ও চিকিৎসা সুবিধার পাশা-পাশি হলে বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। আবাসন ও অন্যান্য সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় অব-কাঠামো নির্মাণ করতে হবে।
ঙ) শিক্ষক নিয়োগ সহ পাবলিক ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।
চ) শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাস ও দখল দার মুক্ত করতে সন্ত্রাসী, নির্যাতক ও যৌন নিপীড়কদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান বন্ধ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাবি অধিভুক্ত কলেজে সারা বছর ক্লাস চালু রেখে নির্দিষ্ট সময়ে কোর্স সম্পন্ন করে পরীক্ষা গ্রহণে কর্মসূচি চালু করতে হবে। অনিয়ম তান্ত্রিক উপায়ে পরীক্ষা পদ্ধতি বছর বছর বদলানো যাবে না। স্বতন্ত্র পরীক্ষা হল ও পর্যাপ্ত শ্রেণীকক্ষ তৈরি করতে হবে। একাডেমিক ক্যালেণ্ডার প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৫. ডুয়েট’সহ সকল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পলিটেকনিক ও ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে।
৬. সারা দেশে গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফপাস বাস্তবায়ন করতে হবে। পরিবহন শ্রমিকদের ট্রিপভিত্তিক ব্যবস্থা বাতিল করে বেতন ও কর্মঘন্টা নিশ্চিত করতে হবে।
৭. বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভ্যাট
(মূল্য সংযোজনী কর) আরোপ করা চলবে না। বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বেতন-ফি কমা ও এবং অভিন্ন নীতিমালা ও বেতন কাঠামো নির্ধারণ কর।
৮. সাইবার নিরাপত্তা আইন, ওটিটি নিয়ন্ত্রন নীতিমালা’সহ সকল গণবিরোধি ও অগণতান্ত্রিক আইন বাতিল কর। সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং রাজ-বন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি দাও।
৯. শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি ও কৃষকের উৎপাদিত ফসলের লাভ জনক মূল্য নিশ্চিত কর। প্রাণ-প্রকৃতি বিনাশী সকল প্রকল্প বাতিল করে প্রকৃতি ও পরিবেশ বান্ধব প্রকল্প বাস্তবায়নের নীতি মালা গ্রহণ কর।
বিডিনিউজ ইউরোপ/১৪ সেপ্টেম্বর/জই/রাজনীতি