পুরো বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে। দেশটির জনগণ তো বটেই বিশ্বজুড়ে সবার কৌতূহল কে হচ্ছেন আগামী চার বছরের জন্য হোয়াইট হাউজের অধিকর্তা।
বিভিন্ন জরিপ মতে, এবারই সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং অনিশ্চয়তায় ভরা এক নির্বাচন হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। পূর্বাভাস, কেন্দ্র ফেরত জরিপ কিংবা পূর্বানুমান যেমনই হোক না কেন দেশটির কিছু রাজ্য একেবারেই ঘুরিয়ে দিতে পারে নির্বাচনের ফলাফল।
এবারের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে ডেমোক্র্যাট পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আর প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান পার্টির হয়ে আছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
দেশটির অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে অন্তত ছয়টি রাজ্য এবারের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শেষ মুহূর্তে সকল সমীকরণ উলটে দিতে পারে অ্যারিজোনা, পেনসিলভানিয়া, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া এবং উইসকনসিন।
এছাড়াও আলোচনায় থাকছে নর্থ ক্যারোলিনা এবং মিশিগানের মতো রাজ্য।
অ্যারিজোনা
১৯৫২ সালের পর বিল ক্লিনটন একমাত্র ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ছিলেন যিনি এই রাজ্যে বিজয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। সবশেষ ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই রাজ্যে বিজয়ী হয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কাজেই বাইডেনের জন্য এই রাজ্য জয় মোটেও সহজ হবে না। যদিও নির্বাচন পূর্ববর্তী জরিপে এক শতাংশে এগিয়ে আছেন বাইডেন।
পেনসিলভানিয়া
পেনসিলভানিয়া রাজ্যটিকে মনে করা হচ্ছে ফলাফলের ‘ট্রাম্প কার্ড’। ধারণা করা হচ্ছে এই রাজ্যের বিজয়ী প্রার্থীই শেষ পর্যন্ত হোয়াইট হাউজে থিতু হবেন। ২০১৬ সালে নির্বাচনে এই রাজ্য থেকেও বিজয়ী হয়েছিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাজ্যটিতে ২০টি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে।
নর্থ ক্যারোলিনা
১৫ ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের নর্থ ক্যারোলিনায় পরিসংখ্যানের হিসাবে বেশ পিছিয়ে আছেন ডেমোক্র্যাটরা। সবশেষ ২০০৮ সালে বারাক ওবামা এই রাজ্যে বিজয়ী হয়ে ১৯৭৬ সালে জিমি কার্টারের পর আর কোনো ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর এই আসনে জয় না আসার খরা দূর করেন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ৩.১৬ শতাংশ বেশি ভোট পেয়ে এই রাজ্যে জয়ী হয়েছিলেন ট্রাম্প।
টেক্সাস
মেক্সিকোর সঙ্গে সীমান্ত থাকা এই রাজ্যটি সাধারণত রিপাবলিকানদের বলেই ধরে নেওয়া হয়। সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া ট্রাম্প এই রাজ্যে বিজয়ী হবেন বলেই এখনও ধরে নেওয়া হচ্ছে। রাজ্যটিতে ৩৮টি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে।
ফ্লোরিডা
২৯ ইলেকটোরাল ভোট থাকা ফ্লোরিডা জয় করা কারও জন্যই সহজ হবে না। ২০১৮ পর্যন্ত রাজ্যটিতে ডেমোক্র্যাটদের প্রাধান্য থাকলেও বর্তমানে রাজ্যটির গভর্নর রিপাবলিকান দলের। ২০০০ সালের নির্বাচনেও বেশ বিতর্ক এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্ম দিয়েছিল রাজ্যটি। রাজ্যটির নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণে দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়েছিল।
জর্জিয়া
ফলাফল নির্ধারণে যে রাজ্যগুলোকে ‘টস আপ টেরিটরি’ হিসেবে বিবেচনা করা হয় তার মধ্যে জর্জিয়া অন্যতম। ১৯৭২ সাল পর্যন্ত রাজ্যটিতে ডেমোক্র্যাটদের জয়কার থাকলেও পরবর্তীতে এটি রিপাবলিকানদের দখলে চলে যায়। তবে শেষ মুহূর্তের ফলাফলে চমক দেখাতে পারে জর্জিয়া।
উইসকনসিন
চিজ এবং বিয়ার উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ উইসকনসিনে ১০টি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে। সবশেষ নির্বাচনে মাত্র শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ পপুলার ভোটের ব্যবধানে রাজ্যটিতে জয়ী হয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে জরিপ বলছে, এবারের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের পতাকা তুলতে পারে রাজ্যটির বাসিন্দারা।