• শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
সিরিয়ার দীর্ঘ ৫৪ বছরের পতন আসাদের পলায়ন ভোলার স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান “পরিবর্তন যুব উন্নয়ন সংস্থার” সনদপত্র অর্জন ভিয়েনা বিশ্বের মানুষের বাসযোগ্য শ্রেষ্ঠ শহর থেকে একধাপ সরে এলো মারাত্মক বন্যার কবলে মালয়েশিয়া মধ্যপ্রাচ্যে অস্ট্রিয়ার মানবিক সহায়তা সাড়ে সাত মিলিয়ন ইউরো জার্মানির অভিবাসন নীতি বদলে ফেলার বিপক্ষে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস অভ্যুত্থান পরবর্তী লুটপাট বন্ধ হওয়ায় ভারত বাংলাদেশে আগ্রাসন চালাতে চায়:রিজভী ভোলার বীর সন্তান শহীদ শাকিল কে স্মরণীয় রাখতে ডিসি কে স্মারকলিপি প্রদান দেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে চাই:জামায়াত ঝালকাঠি তে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ক্যাবের মানববন্ধন

ন্যাটোর ঐক্যবদ্ধতাকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন

কবির আহমেদ কূটনৈতিক বিশ্লেষক আন্তর্জাতিক ডেক্স থেকে বিডিনিউজ ইউরোপ
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৩

ন্যাটোর ঐক্যবদ্ধতাকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন ।ইউক্রেনের পাশে থাকার অঙ্গীকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের।বুধবার (১২ জুলাই) লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে ন্যাটো জোটের শীর্ষ সম্মেলনে ন্যাটোর ঐক্যবদ্ধতাকে স্বাগত জানিয়ে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পাশে ন্যাটো জোটের থাকার অঙ্গীকার করেন।ভয়েস অফ আমেরিকার খবরে বলা হয়েছে,যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের জন্য আশাবাদী সংকল্প এবং মস্কোর প্রতি কঠোর সতর্কতাসহ এবারের নেটো শীর্ষ সম্মেলনকে একটি ঐতিহাসিক সম্মেলন হিসাবে বর্ণনা করেছেন। লিথুয়ানিয়ার রাজধানীতে দু’দিনের ওই বৈঠকে ইউক্রেনের জোটে যোগদানের ব্যাপারে নতুন করে সমর্থন দেখা গেছে, কিন্তু ইউক্রেন যে নির্দিষ্ট সময়সীমা চেয়েছিল, সে ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্তে আসেননি নেতারা।

ভিলনিয়াস বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়ো হওয়া হাজার হাজার জনতার উদ্দেশ্যে দুবার পুনরাবৃত্তি করে বাইডেন বলেন, “আমরা এক চুলও নড়ব না।” ভিলনিয়াস বিশ্ববিদ্যালয়টি বল্টিক জাতির চার শতক পুরানো একটি প্রতিষ্ঠান, যেটি পূর্বে পোলিশ, রাশিয়ান, সোভিয়েত এবং জার্মান বাহিনীর দ্বারা দখলদারিত্বের শিকার হয়েছে।

বাইডেন বলেন, “ইউক্রেনের প্রতি আমাদের দেয়া প্রতিশ্রুতির কোনও ব্যত্যয় হবে না। আমরা আজ, আগামীকাল এবং যতদিন লাগুক, ইউক্রেনের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের পক্ষে দাঁড়াব।”তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কড়া হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত, রাশিয়া এখন পর্যন্ত কূটনৈতিক সমাধানে কোনো আগ্রহ দেখায়নি। পুতিন এখনও ভুলভাল বিশ্বাস করেন যে, তিনি ইউক্রেনকে সম্পূর্ণ পর্যুদস্ত করতে পারবেন। তিনি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারেন না এটা তাদের ভূমি, তাদের দেশ, তাদের ভবিষ্যত। এবং এতদিন পরও, আমাদের ক্ষমতা নিয়ে পুতিন সন্দেহ পোষণ করেন। তিনি এখনও একটি ভয়ংকর বাজি খেলায় মেতে আছেন।”

ও দিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি বুধবার কিয়েভকে ক্লাস্টার বা গুচ্ছ বোমা সরবরাহ করার বিষয়ে বাইডেন প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। যদিও ১২০ টিরও বেশি দেশ নির্বিচারে মানুষ হত্যার এই ভয়ংকর মারণাস্ত্র নিষিদ্ধ করেছে, তবুও তিনি বলেছেন, এটি রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে ইউক্রেনকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে সাক্ষাতের সময় জেলেন্সকি সংবাদদাতাদের বলেন, “ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্রের সমালোচনা করা খুবই সহজ। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত আমাদের প্রাণ বাঁচাতে সাহায্য করবে।”ওয়াশিংটনের ইউক্রেনকে ক্লাস্টার বোমা দেয়ার সিদ্ধান্তে কিছু নেটো মিত্রদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করেছে, যাদের মধ্যে অনেকেই এই অস্ত্র নিষিদ্ধ করার কনভেনশনের স্বাক্ষরকারী দেশ।

ইউক্রেনীয় নেতা উল্লেখ করেছেন, মস্কো যুদ্ধক্ষেত্রে ক্লাস্টার অস্ত্র ব্যবহার করে। “আমি শুনিনি আপনাদের মধ্যে কোনও দেশ এতে রাশিয়ার সমালোচনা করেছে।”
প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং জেলেন্সকি বুধবার লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে জোটের শীর্ষ সম্মেলনের বাইরে, এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। কিয়েভকে সর্বোপরি সমর্থন করা ছাড়া জোটে যোগদানের ব্যাপারে কোন রকম সিদ্ধান্ত ছাড়াই সমাপ্ত হয় সম্মেলন। এছাড়া জেলেনস্কি যে কোনও নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি বা সময়সীমা চেয়েছিলেন, সে ব্যাপারেও কোন সিদ্ধান্ত নেননি জোট নেতারা।

নেটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ, বলেন, “আজ, আমরা সবাই এক সমান হিসেবে এখানে মিলিত হয়েছি, একদিন ইউক্রেনকে নেটো মিত্র হিসেবে দেখবো, সেই দিনের প্রতীক্ষায় আছি।” মঙ্গলবার এক লিখিত ঘোষণায়, নেতারা বলেন, “যখন মিত্ররা সবাই সম্মত হবে এবং সব শর্ত পূরণ করা হবে, তখনই ইউক্রেনকে জোটে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানোর পরিস্থিতি তৈরি হবে।”

রাশিয়ার আক্রমণের মাঝামাঝি সময়ে কিয়েভের নেটো সদস্যপদ পাওয়ার জন্য মিত্রদেরকে ব্লকের অনুচ্ছেদ-৫ অনুযায়ী, “একের উপর আক্রমণ সকলের উপর আক্রমণ” নীতিটি প্রয়োগ করতে হবে, ফলে সদস্যদের মস্কোর সাথে সরাসরি সংঘর্ষে নিয়ে যাবে। জেলেন্সকির সাথে কথা বলতে গিয়ে, স্টলটেনবার্গ ইউক্রেনকে সমর্থন করার পরিণতি সম্পর্কে রাশিয়ার দেয়া নতুন হুমকি উড়িয়ে দিয়েছেন।

স্টলটেনবার্গ বলেছেন, “অবশ্যই, গ্যারান্টি, নথিপত্র, কাউন্সিল মিটিং অতি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখন সবচেয়ে জরুরী কাজ হল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেন্সকি এবং তার সশস্ত্র বাহিনীর জন্য পর্যাপ্ত অস্ত্র নিশ্চিত করা।” ক্রেমলিন অতি দ্রুত এর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা টেলিগ্রামের মাধ্যমে বলেছেন, “পশ্চিমাদের জন্য কাউকে রক্ষা করার চেয়ে হত্যা করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”

জেলেন্সকির পাশাপাশি, সাতটি ধনী গণতন্ত্রের গ্রুপ অর্থাত্ গ্রুপ অফ সেভেন ‘এর নেতারা পৃথক দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদানের জন্য একটি নতুন পরিকাঠামো ঘোষণা করেছেন।

পরিকাঠামোটিকে “ইউক্রেনের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির একটি শক্তিশালী বিবৃতি” বলে অভিহিত করে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, জি-৭ মিত্ররা “ইউক্রেনকে স্থল, আকাশ এবং সমুদ্র জুড়ে একটি শক্তিশালী সক্ষম প্রতিরক্ষা গড়ে তুলতে সহায়তা করবে, যাতে এ অঞ্চলে তারা স্থিতিশীলতার শক্তি হয়ে ওঠে এবং যে কোনও ধরনের হুমকি মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়।”

সংবাদদাতাদের ব্রিফিংকালে, ইউরোপের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সিনিয়র ডিরেক্টর আমান্ডা স্লোট বলেছেন, বহুপাক্ষিক ঘোষণা “রাশিয়াকে একটি উল্লেখযোগ্য সংকেত পাঠাবে যে, সময় এখন আর তার পক্ষে নেই।”

বুধবার সন্ধ্যায় সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবার পরপরই, বাইডেন ফিনল্যান্ড, সুইডেন, নরওয়ে, আইসল্যান্ড এবং ডেনমার্কের নেতাদের সাথে দেখা করতে হেলসিঙ্কির উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। যেহেতু সুইডেন নেটোতে যোগদান করবে, তাই পাঁচটি নর্ডিক দেশই এখন সামরিক জোটের অংশ।
বিডিনিউজ ইউরোপ/১৩জুলাই/জই/ন্যাটো


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ