হাঙ্গেরি-পোল্যান্ডের কঠোর সমালোচনায় পেত্রা ফিয়ালা।ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিন্ন আশ্রয়নীতি নিয়ে পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরির কঠোর অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করেছেন চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী পেত্রা ফিয়ালা৷ইউরোপের বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত অভিবাসন সংক্রান্ত অনলাইন পোর্টাল ইনফোমাইগ্র্যান্টস তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। গত মঙ্গলবার দেশটির রাজধানী প্রাগে প্রতিবেশী দেশ দুইটির কড়া সমালোচনা করে এই মধ্যপন্থি রাজনীতিবিদ বলেন, ‘‘এখানে প্রাগের কোন স্বার্থ নেই, কিন্তু তাই বলে দায়িত্ব এড়ানো যায় না৷’’
পেত্রা ফিয়ালা আরও বলেন, যেসব দেশ ইউক্রেনীয় নাগরিকেদর বেশি আশ্রয় দিয়েছে, তাদের অর্থনৈতিক সহযোগিতা দিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছিল, ওয়ারশ এবং বুদাপেস্টের সাম্প্রতিক অবস্থান সেই প্রক্রিয়াকেও ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে৷ তিনি আরও জানান, আশ্রয় আবেদন বাতিলের পর অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণে ‘অবশেষে’ একমত হওয়া সম্ভব হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্মেলনে৷
তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন অভিবাসীদের আরও ন্যায্যভাবে বন্টনে নেয়া পরিকল্পনার বিরোধিতা করছে পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরি৷ ফলে, গত শুক্রবার জোটের নেতারা ব্লকের আশ্রয় নীতিতে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছেন৷ এমন বাস্তবতায় চেক প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠে হাঙ্গেরি-পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে সমালোচনা কিছুটা খটকা তৈরি করেছে৷ কারণ, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়ার সঙ্গে চার দেশীয় রাজনৈতিক জোট ভিসেগ্রাদ নিয়ে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে চেক প্রজাতন্ত্র৷
দীর্ঘ অপেক্ষার পর ইউরোপের অভিন্ন অভিবাসন ও আশ্রয় নীতি নিয়ে গত ৮ জুনে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে ইউরোপীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা৷ এখন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আইন অনুমোদন করে সেই বোঝাপড়া কার্যকর করার কথা ভাবছেন সংশ্লিষ্টরা৷ আগামী বছর ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগে, অর্থাৎ এ বছরের শেষ নাগাদ হলেও আইনটি পাস করার দিকে মনোযোগী ইউরোপীয় নেতারা৷
নতুন নিয়মে আশ্রয় আবেদনগুলো ইইউর বহিঃ সীমান্তেই নাকচ হতে পারে৷ আবার যারা ইউরোপের মূল ভূখণ্ডে ঢুকতে পারবেন, তাদেরও অন্য দেশে স্থানান্তরিত করা যাবে৷ এই নীতি বাস্তবায়ন হলে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের আশ্রয়প্রার্থীদের বোঝা সব দেশ মিলে ভাগ করা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ জোটভুক্ত যে দেশ শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে অনীহা দেখাবে, সেই দেশকে অভিবাসী প্রতি ২০ হাজার ইউরো অর্থ দিতে হবে৷ আর এই ইস্যুতে আপত্তি জানিয়ে আসছে পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরি৷
অভিবাসনপ্রত্যাশীরা উত্তর আফ্রিকা বা তুরস্ক থেকে সমুদ্রপথে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন৷ এর অর্থ হলো পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরির মতো উত্তরের দেশগুলোর তুলনায় ইটালি এবং গ্রিসের মতো দেশগুলোকে অভিবাসীদের চাপ সামাল দিতে হয়৷
বিডিনিউজ ইউরোপ/৭জুলাই/জই/হাঙ্গেরি