• শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২০ অপরাহ্ন
শিরোনাম
সিরিয়ার দীর্ঘ ৫৪ বছরের পতন আসাদের পলায়ন ভোলার স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান “পরিবর্তন যুব উন্নয়ন সংস্থার” সনদপত্র অর্জন ভিয়েনা বিশ্বের মানুষের বাসযোগ্য শ্রেষ্ঠ শহর থেকে একধাপ সরে এলো মারাত্মক বন্যার কবলে মালয়েশিয়া মধ্যপ্রাচ্যে অস্ট্রিয়ার মানবিক সহায়তা সাড়ে সাত মিলিয়ন ইউরো জার্মানির অভিবাসন নীতি বদলে ফেলার বিপক্ষে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস অভ্যুত্থান পরবর্তী লুটপাট বন্ধ হওয়ায় ভারত বাংলাদেশে আগ্রাসন চালাতে চায়:রিজভী ভোলার বীর সন্তান শহীদ শাকিল কে স্মরণীয় রাখতে ডিসি কে স্মারকলিপি প্রদান দেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে চাই:জামায়াত ঝালকাঠি তে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ক্যাবের মানববন্ধন

ইইউর অভিন্ন আশ্রয়নীতি ‘একটি বড় অগ্রগতি’ – জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস

কবির আহমেদ কূটনৈতিক বিশ্লেষক আন্তর্জাতিক ডেক্স থেকে বিডিনিউজ ইউরোপ
আপডেট : রবিবার, ২ জুলাই, ২০২৩

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিন্ন আশ্রয়নীতি ‘একটি বড় অগ্রগতি’ – জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস৷
হাঙ্গেরি এবং পোল্যান্ডের তীব্র আপত্তি ও সমালোচনার মুখেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিন্ন আশ্রয়নীতি প্রণয়নে নেয়া সিদ্ধান্তকে ‘একটি বড় অগ্রগতি’ হিসেবে দেখছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস৷ইউরোপের বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত অনলাইন পোর্টাল ইনফোমাইগ্র্যান্টস তাদের এক প্রতিবেদনে এতথ্য জানিয়েছে। জার্মানির চ্যান্সেলর গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান,এই চুক্তির মধ্য দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হলো৷ এই চুক্তি কার্যকর হলে, আশ্রয়প্রার্থীরা কারো একক বোঝা না হয়ে, সবাই সে দায় ভাগ করে নেবে৷ এর মধ্য দিয়ে জোটের সব দেশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে বলেও মনে করেন তিনি৷

বছরের পর বছর ধরে ঝুলে থাকা ইউরোপের অভিন্ন অভিবাসন ও আশ্রয় নীতি গত ৮ জুন আলোর মুখ দেখে৷ ওইদিন লুক্সেমবার্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷এখন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আইন অনুমোদন করে সেই বোঝাপড়া কার্যকর করার কথা ভাবছেন সংশ্লিষ্টরা৷ আগামী বছর ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগেই সেই আইন পাস করার দিকে মনোযোগী ইউরোপীয় নেতারা৷

তবে অভিন্ন এই নীতি কার্যকর হলে বিপদে পড়তে পারেন বাংলাদেশ, আলজেরিয়া, মরক্কো, তিউনিশিয়া, সেনেগাল ও পাকিস্তানের দেশ থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীরা৷ কারণ নতুন নিয়মে আশ্রয় আবেদনগুলো ইইউর বহিঃসীমান্তেই নাকচ হতে পারে৷ আবার যারা ইউরোপের মূল ভূখণ্ডে ঢুকতে পারবেন, তাদেরও অন্য দেশে স্থানান্তরিত করা যাবে৷

এই সিদ্ধান্ত নেয়ার দুই সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে শুরু হয়েছে দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলন৷ সেখানে যোগ দিয়েছেন ওলাফ শলৎসসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানেরা৷এই নীতি বাস্তবায়ন হলে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের আশ্রয়প্রার্থীদের বোঝা সব দেশ মিলে ভাগ করা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ জোটভুক্ত যে দেশ শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে অনীহা দেখাবে, সেই দেশকে অভিবাসী প্রতি ২০ হাজার ইউরো অর্থ দিতে হবে৷

এটা নিয়েই আপত্তি করে আসছে পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরি৷ শীর্ষ সম্মেলনের আগে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাভিয়েৎসকি বলেন, তার দেশ এবং তার দল ল অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি (পিআইএস) এই সংহতি প্রক্রিয়া প্রত্যাখ্যান করেছে৷ পোল্যান্ডের ইউরোপীয় সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী সিমন সিনকোভস্কি ভেল সেক বলেন, আশ্রয়প্রার্থীদের ব্যয় নির্বাহ করার জন্য জোটের সদস্য রাষ্ট্র থেকে অর্থ আদায়ের সিদ্ধান্ত ওই দেশটির ‘সার্বভৌম অধিকার’ ক্ষুণ্ণ করার শামিল৷

তিনি বলেন, ‘‘একটি দেশ থেকে অভিবাসী প্রতি ২০ হাজার ইউরো দাবি করা প্রকৃত অর্থে শাস্তি দেয়া ছাড়া অন্য কিছু নয়৷’’ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট রবের্তা মেটসোলা ব্রাসেলসে শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে অভিবাসন ইস্যুতে বিতর্ক তৈরি না করে, এটিকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন৷

সাম্প্রতিক নৌকাডুবির প্রসঙ্গটি সামনে এনে তিনি বলেন, ‘‘ইউরোপে আসার চেষ্টায় ইউরোপীয় জলসীমায় কোন পুরুষ, নারী কিংবা শিশুর মৃত্যু মোটেও কাম্য নয়৷’’ ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাট-এর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে জোটভুক্ত দেশগুলোতে মোট আট লাখ ৮১ হাজার ২০০টি আশ্রয় আবেদন জমা হয়৷ যা ২০২১ সালের তুলনায় ৬৪ ভাগ বেশি৷

এদিকে জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, চলতি বছর ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে দুই হাজার ৪০০ মানুষ মারা গেছেন৷
সপ্তাহ দুয়েক আগে, লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে গ্রিস উপকূলে একটি মাছ ধরার নৌকা ডুবে যায়৷ এ দুর্ঘটনায় শত শত মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন বা মারা গেছেন৷ ধারণা করা হচ্ছে, এটি ভূমধ্যসাগরে স্মরণ কালের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনায় রূপ নেবে৷ ফলে ভূমধ্যসাগরে করণীয় নির্ধারণেও নেতারা আলাপ করেছেন বলে জানা গেছে৷

তিউনিশিয়ার অর্থনৈতিক সংকট দূর করা এবং অভিবাসীর চাপ কমাতে জোটের পক্ষ থেকে ১০ কোটি ইউরো অর্থ সহায়তার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করেছেন ইউরোপীয় নেতারা৷ কারণ, ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে অভিবাসনের জন্য তিউনিশিয়া বর্তমানে প্রধান ট্রানজিট দেশ৷

বিডিনিউজ ইউরোপ/২জুলাই/জই/জার্মান


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ