• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম
সিরিয়ার দীর্ঘ ৫৪ বছরের পতন আসাদের পলায়ন ভোলার স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান “পরিবর্তন যুব উন্নয়ন সংস্থার” সনদপত্র অর্জন ভিয়েনা বিশ্বের মানুষের বাসযোগ্য শ্রেষ্ঠ শহর থেকে একধাপ সরে এলো মারাত্মক বন্যার কবলে মালয়েশিয়া মধ্যপ্রাচ্যে অস্ট্রিয়ার মানবিক সহায়তা সাড়ে সাত মিলিয়ন ইউরো জার্মানির অভিবাসন নীতি বদলে ফেলার বিপক্ষে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস অভ্যুত্থান পরবর্তী লুটপাট বন্ধ হওয়ায় ভারত বাংলাদেশে আগ্রাসন চালাতে চায়:রিজভী ভোলার বীর সন্তান শহীদ শাকিল কে স্মরণীয় রাখতে ডিসি কে স্মারকলিপি প্রদান দেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে চাই:জামায়াত ঝালকাঠি তে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ক্যাবের মানববন্ধন

দীর্ঘ অপেক্ষার পর চার্লসের মাথায় উঠল বৃটিশ রাজমুকুট

কবির আহমেদ কূটনৈতিক বিশ্লেষক আন্তর্জাতিক ডেক্স থেকে বিডিনিউজ ইউরোপ
আপডেট : শনিবার, ৬ মে, ২০২৩

দীর্ঘ অপেক্ষার পর চার্লসের মাথায় উঠল বৃটিশ রাজমুকুট।ব্রিটেনের ৪০তম রাজা হিসেবে দীর্ঘ প্রায় ৭০ বছর যাবত উত্তরাধিকারী হিসাবে অপেক্ষায় থাকা চার্লসের মাথায় উঠল বৃটিশ রাজমুকুট।শনিবার (৬ মে) বৃটেনের রাজা হিসাবে রাজা তৃতীয় চার্লসের মাথায় রাজমুকুট পরিয়ে দেন ক্যান্টারবারির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবি।এর আগে, রাজমুকুটে সার্বভৌম ক্ষমতার প্রতিনিধিত্বকারী অর্ব পরিয়ে দেন আর্মাঘের আর্চবিশপ। এছাড়া রাজার হাতে স্বর্ণখচিত তরবারি তুলে দেন আর্চবিশপ ক্যান্টারবারি।

এসময় ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপ তাকে বলেন, বিচার করতে, অন্যায়ের বৃদ্ধি বন্ধ করতে, ঈশ্বরের পবিত্র গির্জা এবং সকল শুভাকাঙ্খী মানুষকে রক্ষা করতে’ এই তরবারি ব্যবহার করতে বলেন।বৃটিশ সংবাদ সংস্থা বিবিসি সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানায়,গ্রিনিচ মান সময় সকাল ৯টা ২০ মিনিটে শোভাযাত্রা নিয়ে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে আসেন রাজা চার্লস এবং রানি ক্যামেলিয়া। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় রাজার অভিষেক অনুষ্ঠান।

এই জমকালো ও জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বের প্রায় দুই শতাধিক দেশের দুই হাজারের বেশি আমন্ত্রিত অতিথি ও রাজপরিষদ।ক্যান্টারবারির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবি তার ভাষণের মধ্য দিয়ে রাজার অভিষেক অনুষ্ঠান শুরু করেন।

বৃটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেকে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার রাতে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে লন্ডন এসে পৌঁছেছেন। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ৪ মে রাত ১১টা ৪৯ মিনিটে (স্থানীয় সময়) লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

এর আগে, ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ওয়াশিংটন ডিসির ডুলেস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যায়।প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রীর একমাত্র বোন শেখ রেহানা। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। আগামী ৯ মে লন্ডন থেকে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।

বিবিসি জানায় যুক্তরাজ্যের (ব্রিটেন)রাজা হিসেবে শপথ নিয়েছেন তৃতীয় চার্লস। যুক্তরাজ্যের রাজতন্ত্রের ৪০তম সিংহাসন আরোহী হিসেবে আজ শনিবার তিনি শপথ নেন। একই সঙ্গে রাজ্যাভিষেক হয়েছে চার্লসের স্ত্রী কুইন কনসোর্ট ক্যামিলারও।

ক্যান্টারবুরির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবি রাজা চার্লসের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, রাজ্যাভিষেক শপথের আইনি প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।রাজাকে আর্চবিশপ বলেন, নতুন রাজা যেন তাঁর শাসনকালে আইনের শাসন ও চার্চ অব ইংল্যান্ডের মর্যাদা সমুন্নত রাখেন।

রাজা তৃতীয় চার্লস পবিত্র গসপেলে হাত রেখে শপথ নেন এবং আইনের শাসন ও চার্চ অব ইংল্যান্ডের মর্যাদা সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার করেন।
এ ছাড়া একজন ‘একনিষ্ঠ প্রোটেস্ট্যান্ট’ হিসেবে দ্বিতীয় শপথও নেন রাজা তৃতীয় চার্লস।

এর আগে রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যুক্তরাজ্যের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে পৌঁছেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস এবং তাঁর স্ত্রী কুইন কনসোর্ট ক্যামিলা। বাকিংহাম প্যালেস থেকে একটি ঘোড়ার গাড়িতে করে শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে পৌঁছান তাঁরা।

রাজা চার্লসের রাজ্যাভিষেকে যোগ দিতে দেশ-বিদেশের নেতা ও তারকারাও ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে জোড় হয়েছেন। বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এবং বিশ্বের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য যে,গত বছরের সেপ্টেম্বরে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর তাঁর বড় ছেলে চার্লস যুক্তরাজ্য এবং আরও ১৫টি দেশের রাজা হন।
রাজ পরিবারের প্রথা মাফিক ক্যান্টারবুরির আর্চবিশপ তাঁকে মুকুট পরিয়ে দেবেন। পরে গোল্ড স্টেট কোচ নামের স্বর্ণখচিত ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে এক মাইল দীর্ঘ শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন তিনি। এই শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে বাকিংহাম প্যালেসে ফিরবেন রাজা চার্লস এবং রানি ক্যামিলা। এরপর তাঁরা বাকিংহাম প্যালেসের বারান্দায় দাঁড়িয়ে উদ্‌যাপনমূলক ফ্লাইপাস্ট (বিমানের মহড়া) দেখবেন।

এক নজরে যুক্তরাজ্য ও কমনওয়েলথ রাষ্ট্রসমূহের রাজা তৃতীয় চার্লসের জীবনী:

রাজা চার্লস ফিলিপ আর্থার জর্জ ( Charles Philip Arthur GeorgeKing), ১৯৪৮ সালের
১৪ নভেম্বর লন্ডনের বাকিংহাম প্রাসাদে জন্মগ্রহণ
করেন। তিনি প্রয়াত ব্রিটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও প্রিন্স ফিলিপ দম্পতির জ্যেষ্ঠ পুত্র।তিনি প্রিন্স অব ওয়েলস এন্ড আর্ল অব চেস্টার পদবীটি ১৯৫৮ সাল থেকে ধারণ করে আছেন। এছাড়াও তিনি বিবাহ-বিচ্ছেদকৃত ডায়ানা ও পরবর্তীকালে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ ক্যামিলার স্বামী।

তিনি প্রথম স্ত্রী ডায়ানা, প্রিন্সেস অব ওয়েলসের
সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ১৯৮১ সালে এবং
তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় ১৯৯৬ সালে।
তারপর তিনি রাণী ক্যামিলা, ডাচেস অব কর্নওয়াল
এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ২০০৫ সালে।
তিনি দুই ছেলে সন্তানের জনক (প্রিন্সেস ডায়ানার সাথে দাম্পত্য জীবনে)। প্রিন্স উইলিয়াম, প্রিন্স অফ ওয়েলস এবং প্রিন্স হ্যারি, ডিউক অফ সাসেক্স।

রাজা তৃতীয় চার্লসের জন্মের পূর্বেই ২২ অক্টোবর, ১৯৪৮ তারিখে রাজা ষষ্ঠ জর্জের রাজাজ্ঞা পত্রের মাধ্যমে ঘোষিত হয়েছিল যে, প্রিন্সেস এলিজাবেথ এবং ডিউক অব এডিনবরার কোন সন্তান জন্মগ্রহণ করলেই সন্তানটি রাজকুমার হিসেবে বিবেচিত হবে। সেইসূত্রে চার্লস জন্মকালীন সময় থেকেই প্রিন্সের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন।

১৯৫৫ সালে বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে ঘোষণা করা হয় যে, চার্লস গৃহ অভ্যন্তরে পড়াশোনা করবেন ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষালাভের অধিকারী হবেন। এরফলে তিনিই প্রথম রাজসিংহাসনের দাবীদার হিসেবে প্রথম এ ধরনের শিক্ষার সুযোগ লাভ করেন। বাকিংহাম প্রাসাদের অভ্যন্তরে গৃহশিক্ষা লাভের পর তিনি লন্ডন, হ্যাম্পশায়ার এবং স্কটল্যান্ডে পড়াশোনা করেন। এরপর ১৯৬৭ সালে কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে ভর্তি হন। ১৯৭১ সালে সেখান থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।

এছাড়াও তিনি অ্যাবেরিস্টিথ ইউনিভার্সিটি কলেজ অব ওয়েলসে অধ্যয়ন করেন। এরপর রয়্যাল এয়ারফোর্স কলেজ ও ডার্টমাউথের রয়্যাল নেভাল কলেজে ভর্তি হন। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৬ মেয়াদকালের রয়্যাল নেভিতে সফরকালীন দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীকালে আধুনিক স্থাপত্যবিদ্যার সমালোচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন চার্লস। ১৯৮৯ সালে এ ভিশন অব ব্রিটেন নামীয় সাময়িকীতে তিনি এ সম্পর্কীয় মতামত প্রতিফলন করেন। ১৯৯২ সালে তিনি প্রিন্স অব ওয়েলস ইনস্টিটিউট অব আর্কটেকচার নামীয় প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। এ প্রতিষ্ঠানটি পরবর্তীতে শহর পুণর্গঠন ও উন্নয়ন প্রকল্প হিসেবে পরিচিত বিআরই ট্রাস্টের সাথে জড়িত হয়।

তথ্যসূত্র: বিবিসি, উইকিপিডিয়া

বিডিনিউজ ইউরোপ২৪ডটকম/৬মে/জই


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ