• শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
সিরিয়ার দীর্ঘ ৫৪ বছরের পতন আসাদের পলায়ন ভোলার স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান “পরিবর্তন যুব উন্নয়ন সংস্থার” সনদপত্র অর্জন ভিয়েনা বিশ্বের মানুষের বাসযোগ্য শ্রেষ্ঠ শহর থেকে একধাপ সরে এলো মারাত্মক বন্যার কবলে মালয়েশিয়া মধ্যপ্রাচ্যে অস্ট্রিয়ার মানবিক সহায়তা সাড়ে সাত মিলিয়ন ইউরো জার্মানির অভিবাসন নীতি বদলে ফেলার বিপক্ষে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস অভ্যুত্থান পরবর্তী লুটপাট বন্ধ হওয়ায় ভারত বাংলাদেশে আগ্রাসন চালাতে চায়:রিজভী ভোলার বীর সন্তান শহীদ শাকিল কে স্মরণীয় রাখতে ডিসি কে স্মারকলিপি প্রদান দেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে চাই:জামায়াত ঝালকাঠি তে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ক্যাবের মানববন্ধন

সুন্নী কনফারেন্সে আল্লামা দুবাগী কিবলার পুস্তক ‘মীলাদে বেনযীর’ পর্যালোচনা

প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী
আপডেট : সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২০

সুন্নী কনফারেন্সে হযরত আল্লামা দুবাগী ছাহেব কিবলাহ (রহঃ) এর রচিত পুস্তক ‘মীলাদে বেনযীর’ পর্যালোচনা

শুক্রবার ১৩ ই নভেম্বর ঈদে -এ মীলাদুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষে সিলেটের বিয়ানী বাজার পৌরসভা অডিটরিয়াম হলে রাহবার কাফেলার উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় মাওলানা আব্দুল বাছিত আরিফীর সভাপতিত্বে ও মোঃ ইকবাল হোসেনের পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, রাখালগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুফতি শিহাব উদ্দিন আলিপুরি, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিয়ানী বাজার পৌরসভার মেয়র জনাব আব্দুস শুকুর, আরো বক্তব্য রাখেন চান্দগ্রাম আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা ওহিদুজ্জামান চৌধুরী খসরু, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমিন, ইউকে আল ইসলাহ নেতা মাওলানা সেলিম উদ্দিন, ইউএসএ আল ইসলাহ নেতা মাওলানা হাফিজ আহমদ লোদী, সৌদি আল ইসলাহ নেতা মাওলানা আব্দুল মালিক, চান্দগ্রাম আলিয়া মাদ্রাসার মুফতি আসহাব উদ্দিন, রায়গড় আলিয়া মাদ্রাসার সহ সুপার মাও আছাদ উদ্দিন ফারুকী, আছিরগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসার প্রভাষক মাও হোসাইন আহমদ, দুবাগ স্কুল এন্ড কলেজ প্রভাষক সাইফ উদ্দিন, শিক্ষক নেতা আলি হোসেন মুন্না, আকমল হোসেন, মাও সালমান হোসাইন, পাহাড়িবহর আলিয়া মাদ্রাসার সহ সুপার মাও আমির উদ্দিন, বিশিষ্ট মুরুব্বি জনাব শাহাবুদ্দিন মাওলা, জনাব আব্দুল হান্নান মেম্বার, মাথিউরা দ্বিপাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহ প্রধান শিক্ষক জনাব খছরুল ইসলাম, পাতন আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাও শাহিন আহমদ, সিরাজামমুনিরা হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাও শরিফ উদ্দিন, আল ইসলাহ নেতা হাফিজ মাও রায়হান হোসেন, দারুন্নাজাত ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্রনেতা মাও রিপন আহমদ, হাঃ হোসাইন আহমদ প্রমুখ।

সভায়, বক্তারা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ, বিশিষ্ট লিখক-গবেষক, মুনাজিরে আজম, রাহবারে শরীয়ত, পীরে তরিক্বত, মুফতিয়ে আজম, হযরত আল্লামা মুজাহিদ উদ্দীন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব কিবলাহ (রহ.) এর রচিত বিশ্ববিখ্যাত পুস্তক ‘মীলাদে বেনযীর’ সর্বতোভাবে পর্যালোচনা করেন। বক্তারা বলেন, মীলাদ সম্মন্ধে নানা প্রশ্ন ও তাগিদের ফলেই নবী প্রেমে আসক্ত হযরত আল্লামা দুবাগী ছাহেব (রহ.) নির্ভরযোগ্য কিতাবদির প্রমাণ তত্ব তল্লাশ করে কোরআন, হাদীস, তাফসীর, ইজমায়ে উম্মাত, ফিকাহ, উছুলে ফিকাহ ছিয়র এবং ইতিহাস ইত্যাদি কিতাবাদি দ্বারা প্রমাণ করেন যে, মীলাদ শরীফের প্রামাণিক তথ্য এ সমস্ত কিতাবে ভরপুর।

তাছাড়া মুজাদ্দিদীনে কেরাম মীলাদের পক্ষে স্বীকৃতি প্রদান করতঃ এর স্বপক্ষে বহু কিতাবাদি লিখেছেন। এতদ্ব্যতীত জগদ্বিখ্যাত উলামায়ে কেরাম, মুফতীয়ানে ইজাম, মুজতাহিদীন এবং প্রখ্যাত ইমামগণ যাদের তুলনার আলিম আজ জগতে নেই, তাঁরাও মীলাদ শরীফ উদযাপন করেছেন এবং নির্ভরযোগ্য কিতাবাদি লেখে গেছেন বলে অত্র কিতাবে দলিল দ্বারা সাব্যস্ত করা হয়েছে। ফলে নিশ্চিতভাবে প্রতীয়মান হয় যে, মীলাদ শরীফ শিরিক, বিদ’আত নয় বরং মুস্তাহাব।

হযরত আল্লামা দুবাগী ছাহেব (রহ.) তাঁর দাবীর সমর্থনে আরবী, ফারসী ও উর্দূ ভাষায় রচিত বিশ্ববিখ্যাত উলামা তথা মোহাদ্দেসীন ফোকাহা, মোফাসসিরীন, মুজতাহিদীন প্রভৃতি উলামায়ে হক্কানীর মতামত অভিমত অতি চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেছেন এবং সাথে সাথে উদ্ধৃতাংশগুলোর যথার্থ রেফারেন্স বরাতও প্রদান করেছেন।

তিনি প্রতিপক্ষের যুক্তি-প্রমাণ খন্ডণ করে স্বীয় অভিমত সুপ্রতিষ্ঠিত করতে প্রয়োজনে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও দার্শনিক যুক্তি প্রমাণ পেশ করেছেন এবং এতে পুস্তকের বিশ্বস্ততা ও গ্রহণযোগ্যতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, উপমহাদেশের সর্বজনমান্য বিভিন্ন যুগের প্রখ্যাত উলামায়ে কেরাম ছাড়াও আরব বিশ্বের শ্রেষ্ঠ উলামা মোহাদ্দেসীন, মুফতিয়ানে কেরামের অভিমত ফতোয়া ইত্যাদি হযরত আল্লামা দুবাগী ছাহেব (রহ.) এর দাবীর সমর্থনে উপষ্থাপিত হয়েছে। বিশেষতঃ দেওবন্দের আকাবির অর্থাৎ শীর্ষস্থানীয় খ্যাতনামা বহু উলামায়ে কেরাম পবিত্র মীলাদ মাহফিল অনুষ্ঠান করা এবং গুরুত্ব সহকারে এগুলোতে অংশ গ্রহণের কথাও উল্লেখ আছে।

প্রমাণ-পঞ্জীতে হযরত আল্লামা দুবাগী ছাহেব (রহ.) ২৩০টি গ্রন্থের নাম উল্লেখ করেছেন এবং এগুলোর প্রত্যেকটি তিনি পাঠ করেছেন। এতে প্রমাণিত হয় যে, মীলাদে বেনযীর বাংলা ভাষায় এমন একটি অসাধারণ গ্রন্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বাস্তবিকই যা তুলনাবিহীন। বিষয়বস্তুর দিক দিয়ে অতি আকর্ষণীয়, মনোমুগ্ধকর ও অকাট্য প্রমাণাদিতে পরিপূর্ণ বিষয়ের উপর এক বিরল দৃষ্টান্ত।

বক্তারা আরো বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর উপর বাংলা ভাষায় এ যাবৎ রচিত প্রকাশিত বই পুস্তকের সংখ্যা কম নয়। তবে মীলাদুন্নবীর উপর তাত্তিক ও গবেষনাধর্মী বই-পুস্তক খুব কমই দেখা যায়। মিলাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য যথাযর্থভাবে তুলে ধরার গবেষণাধর্মী ও দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রয়াস বাংলা ভাষায় তেমন দেখা যায় না। যুগ চাহিদার তাগিদে এবং এই অভাব পূরণে কঠোর শ্রম, সাধনা ও গবেষণাধর্মী মনোভাব এবং নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মুহাক্কিক আলেমে দ্বীন হযরত আল্লামা দুবাগী ছাহেব (রহ.) লন্ডনের মত দূরদেশে অবস্থান করেও এক্ষেত্রে যে অপূর্ব খেদমত আনজাম দিয়েছেন তা রীতিমত বিস্ময়কর, অবাক করার মত। তাঁর এ মহামূল্যবান গ্রন্থের নাম যথার্থই ‘মীলাদে বেনযীর’-বাংলা ভাষায় এটি সর্বপ্রথম নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ গণ্য হয়েছে।

স্বীয় পীর-মুর্শিদ শামছুল উলামা হযরত আল্লামা ফুলতলী সাহেব কিবলাহ (রহঃ) সহ উপমহাদেশ এবং আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বহু পণ্ডিত, মনীষী তথা খ্যাতনামা ওলামায়ে কেরাম হযরত আল্লামা মুফতী মুজাহিদ উদ্দিন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব (রহঃ) এর রচিত গবেষণাধর্মী তথ্যবহুল কালজয়ী এই গ্রন্থ দেখে তাঁর ইলমি পাণ্ডিত্যে এতই অভিভূত ও মুগ্ধ হয়েছেন যে, তাঁরা তাঁদের প্রেরিত শুভেচ্ছাবাণী ও মূল্যবান অভিমতগুলোতে আল্লামা দুবাগী ছাহেব (রহঃ) কে মোবারকবাদ এবং সাধুবাদ জানিয়েছেন [১৯ পৃষ্ঠা হতে ৫৫ পৃষ্ঠা পর্যন্ত]।

মীলাদে বেনযীরের অধ্যায়

৬০০ পৃষ্ঠা সম্বলিত ‘মীলাদে বেনযীর’ গ্রন্থে রয়েছে ছয়টি অধ্যায়। প্রথম অধ্যায়ে বিদআত প্রসঙ্গ আলোচিত হয়েছে। এই অধ্যায়ে বিদআতের পরিচয়, বিদআতের বিভাগ, বিদআতের প্রকার ইত্যাদি বিষয়ের প্রমাণ্য আলোচনা এবং মীলাদকে যারা বিদআত বলেন ও মীলাদ সম্পর্কে আপত্তি উত্থাপন করেন, তাদের আপত্তির দলীল সহকারে দাঁতভাঙ্গা জবাব প্রদান করা হয়েছে [৫৮ পৃষ্ঠা হতে ৮১ পৃষ্ঠা পর্যন্ত]।

দ্বিতীয় অধ্যায়টিতে মীলাদ বিষয়ক আলোচনা স্থান লাভ করেছে। এতে মীলাদের অর্থ, প্রতিশ্রুত পয়গাম্বর, বেদ পুরাণে, বৌদ্ধ শাস্ত্রে, পার্সী ধর্ম শাস্ত্রে, তওরাতে, বাইবেলে প্রতিশ্রুত পয়গাম্বর প্রসঙ্গ, সর্বপ্রথম সৃষ্টি, নিখিল সৃষ্টির বিকাশ, উর্ধ্বজগতে হযরতের নবুয়্যত প্রাপ্তি, নূরে মোহাম্মদীর বয়ান, হযরত ইসমাইল (আঃ)এর গর্দান না কাটার কারণ, হযরত ইব্রাহিম (আঃ) কে অগ্নি স্পর্শ না করার কারণ, ইমাম আযম (রহঃ) এর নবী প্রশংসা, মাওলানা জামি (রহঃ) কর্তৃক প্রশংসা, আবরাহার কাবা গৃহ আক্রমণ, অসংখ্য অলৌকিক ঘটনাবলী [৮৫ পৃষ্ঠা হতে ১৭৭ পৃষ্ঠা পর্যন্ত]।

কোরান পাকে মীলাদ শরীফের ছুবুত, অন্যান্য নবী রসূলের মীলাদের যিকির, হাদীস শরীফে মীলাদুন্নবীর প্রমান, মীলাদ শরীফ সাহাবাদের সুন্নত, মীলাদ শরীফ উদযাপন করা মুস্তাহব, খায়রুল কুরুণে মীলাদ মাহফিল, নির্ভরযোগ্য কিতাবাদিতে মীলাদ শরীফের ছুবুত (মা সাবাতা বিস্ সুন্নাহ, তাওয়ারিখে হাবীব এলাহ, শামাইমে ইমদাদিয়া, ইয়াযদাহ মজলিস, বাহারে শরীয়ত, মিরকাত শরহে মিসকাত, মাওয়াহিবুল-লাদুনিয়া, মাওলুদে বরযিনজী, মাওয়াইযে মাযহারী, মাজমুয়ায়ে ফাতাওয়া, মদখল, ফায়সালায়ে হাফত মাসয়ালা, মীলাদে পাঠের দরকার কেন?), ফোকাহার দৃষ্টিতে মীলাদ শরীফ, মৌলুদ শরীফের অবজ্ঞা নবীজীরই অবজ্ঞা [১৭৮ পৃষ্ঠা হতে ৩১৬ পৃষ্ঠা পর্যন্ত]।

মীলাদ শরীফ সম্পর্কে ভারত উপমহাদেশের বুজুর্গানের দ্বীনের মন্তব্য [৩৪২ পৃষ্ঠা হতে ৩৬৭ পৃষ্ঠা পর্যন্ত] ইত্যাদি বিষয়াদির আলোচনা স্থান পেয়েছে।

তৃতীয় অধ্যায়ে মীলাদ শরীফের কিয়াম বিষয়ক আলোচনা বর্ণিত হয়েছে। এই অধ্যায়ে কিয়াম বিরোধীদের অপব্যাখ্যার জবাব দেয়া হয়েছে এবং ৩৩২ পৃষ্ঠা হতে ৪৩০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত কিয়াম এর প্রমাণাদি অত্যন্ত সুন্দরভাবে সন্নিবেশিত হয়েছে এবং মক্কা মোয়াজ্জমা ও মদীনা মুনাওয়ারার ওলামায়ে কেরামের ফাতাওয়ার উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে।

চতুর্থ অধ্যায়ে ‘ইয়া’ দ্বারা সম্বোধন করার প্রমাণ ৪৮০ পৃষ্ঠা হতে ৫২৪ পৃষ্ঠা পর্যন্ত উপস্থাপন করা হয়েছে এবং বিরুদ্ধবাদীদের অভিমতের অসারতা প্রতিপন্ন করা হয়েছে। এই অধ্যায়েও দলিল প্রমাণাদি পেশ করা হয়েছে এবং যুক্তিপূর্ণভাবে সবকিছুর বিবরণ প্রদান করা হয়েছে, যা খুবই মনোহর ও চিত্তাকর্ষক।

পঞ্চম অধ্যায়ে ‘হায়াতুন্নবী’ প্রসঙ্গটি বিস্তারিতভাবে আলোচিত হয়েছে। এই অধ্যায়টি ৫২৭ পৃষ্ঠা হতে ৫৫৭ পৃষ্ঠা পর্যন্ত প্রলম্বিত। এখানে প্রায় বিশ জন ইমাম ও মুজতাহেদের মতামত তুলে ধরা হয়েছে।

আর ষষ্ঠ অধ্যায়ে মীলাদ পাঠ বিষয়ক আলোচনা স্থান লাভ করেছে। এতে মীলাদ পাঠের নিয়ম, তাওয়াল্লুদ শরীফ, ক্বছিদায়ে সালাম দ্বিতীয়, ক্বছিদায়ে সালাম তৃতীয়, মোনাজাতের নিয়ম বর্ণিত হয়েছে। সর্বোপরী ৫৮৩ পৃষ্ঠা হতে ৫৯১ পৃষ্ঠা পর্যন্ত প্রমাণ-পঞ্জী উপস্থাপন করা হয়েছে।

বিজ্ঞ প্রাজ্ঞ বিশ্ব বরেণ্য আলেমে দ্বীন হযরত আল্লামা মুফতী মুজাহিদ উদ্দিন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব (রহঃ) প্রণীত ‘মীলাদে বেনযীর’সত্যিই ‘বেনযীর’এ গ্রন্থ। বিশ্বের অসংখ্য সুপ্রসিদ্ধ মনীষী উলামার অভিমত ও বহু অজ্ঞাত সূত্র পুস্তকের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কালজয়ী এ পুস্তকের সূচিপত্র পাঠ করলে তা সহজে অনুমান করা যায়। এর আগে এ বিষয়ের ওপরে কোন ভাষাতেই এতো অধিক দলিল প্রমাণ, তথ্য-তত্ত্ব, রেফারেন্স সমৃদ্ধ কোনো গ্রন্থ নজরে পড়েনি। উলূমুল কোরআন, হাদীস, তাফসীর, ফিকহ, সীরাতসহ বিভিন্ন বিষয়ে অসংখ্য গ্রন্থ মন্থন করে লেখক উপস্থাপন করেছেন স্বপক্ষের দলিল প্রমাণাদি, খণ্ডন করেছেন বিরুদ্ধবাদীদের সকল দাবী। অত্যন্ত বলিষ্ঠভাবে, অপূর্ব দক্ষতার সাথে। সুতরাং মুমিন মুসলমান বান্দাদেরকে অবগত করতঃ সিরাতে মুস্তাকিম বা সঠিক পথের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখার জন্যই আল্লামা দুবাগী ছাহেব (রহ.)’র এই তত্বানুসন্ধান।

পান্ডিত্যপূর্ণ গবেষণাধর্মী তথ্যসমৃদ্ধ এই পুস্তকটি পাঠ করার পর বিনা-দ্বিধায় বলা যায়, শত শত বছর ধরে বহুল আলোচিত ‘মীলাদ’সংক্রান্ত বাংলাভাষায় এটি প্রথম পুস্তক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। নির্দ্বিধায় একথা বলা যায় আল্লামা মুফতী মুজাহিদ উদ্দিন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব কিবলাহ (রহঃ) এর রচিত ‘মীলাদে বেনযীর’ নামক গ্রন্থটি মীলাদ বিষয়ক একটি কালজয়ী ইতিহাস, একটি প্রমাণ্য দলিল। নিঃসন্দেহে বাংলাভাষী পাঠকদের জন্য এ এক অনন্য উপহার।

পরিশেষে, মাহফিলে মীলাদ পাঠান্তে আল্লাহ রাব্বুল আলআমিনের দরবারে দোয়া করা হয় তিনি যেন স্বীয় হাবীব (সঃ) এর তোফায়লে এই মহান ওলির মর্যাদা বুলন্দ করে জান্নাতের সু -উচ্চস্থান দান করেন৷ আমিন ছুম্মা আমিন৷
বিডিনিউজ ইউরোপ/৩০ নভেম্বর/ জই


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ