• বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
বিজ্ঞপ্তি
প্রিয় পাঠক আমাদের সাইটে আপনাকে স্বাগতম এই সাইটি নতুন ভাবে করা হয়েছে। তাই ১৫ই অক্টোবর ২০২০ সাল এর আগের নিউজ গুলো দেখতে ভিজিট করুন : old.bdnewseu24.com

আশ্রয়প্রার্থীদের ভাসমান বার্জে রাখবে যুক্তরাজ্য

কবির আহমেদ কূটনৈতিক বিশ্লেষক আন্তর্জাতিক ডেক্স থেকে বিডিনিউজ ইউরোপ
আপডেট : রবিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৩

আশ্রয়প্রার্থীদের ভাসমান বার্জে রাখবে যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাজ্য (ইউকে) জানিয়েছে দক্ষিণ ইংল্যান্ডের পোর্টল্যান্ড বন্দরে একটি ভাসমান বার্জে প্রায় ৫০০ পুরুষ অভিবাসীকে রাখতে চায় তারা।গত বুধবার (৫ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃটিশ সরকার জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো আশ্রয়প্রার্থীদের আবাসনে “বার্থড ভেসেল” ব্যবহার করবে যুক্তরাজ্য। সরকার বলেছে, এর মধ্য দিয়ে হোটেলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেবে৷ আরো সুশৃঙ্খল, সাশ্রয়ী এবং টেকসই আবাসন ব্যবস্থা তৈরি হবে। ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে, দক্ষিণ ইংল্যান্ডের ডরসেটের পোর্টল্যান্ড বন্দরে বার্জটির নোঙর ফেলা হবে।বৃটিশ গণমাধ্যম জানিয়েছে, বৃটিশ অভিবাসনমন্ত্রী রবার্ট জেনরিক বলেন, ‘‘হোটেলকে বাসস্থান হিসেবে ব্যবহারে সরকারের চাপ কমিয়ে দেবে বার্জটি৷ প্রায় ৫০ হাজার আশ্রয়প্রার্থীকে বাসস্থান দিতে যুক্তরাজ্য প্রতিদিন ৬০ লাখ পাউন্ড (প্রায় ৭০ লাখ ইউরো) খরচ করে৷ সরকার অবশ্য জানায়নি বার্জ ব্যবহারের মোট খরচ কত হবে।

সংবাদমাধ্যম টাইমস অনুমান করেছে, বিবি স্টকহোম নামের জাহাজটি ভাড়া করতে এবং নোঙর বসিয়ে রাখতে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার পাউন্ড (প্রায় ২২ হাজার ৮০০ ইউরো) খরচ হবে।আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য খাদ্য ও বিদ্যুৎ সরবরাহের পাশাপাশি নিরাপত্তা দেয়া এবং বার্জটি পরিচালনায় কর্মীদের নিয়োগসহ আরো খরচ আরো বাড়বে।

হোটেলের বিকল্প:

জেনরিক বলেন, “ব্যয়বহুল হোটেলের বদলে বিকল্প, সুরক্ষিত আবাসন পরিকল্পনার অংশ হিসাবে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল৷” যুক্তরাজ্য সরকার বলেছে, বার্জটি ” কার্যকরী আবাসন প্রদান করবে৷ স্থানীয় সম্প্রদায়ের সমস্যা কমানোর জন্য সেখানে স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা, খাবারের সুবিধা এবং সারাদিন নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।”

বিবি স্টকহোম জাহাজটি আশ্রয়প্রার্থীদের রাখার কাজে ব্যবহার করেছে ডাচ সরকার। এছাড়াও বিদ্যুৎ খাতের কর্মীদের জন্যও এটি ব্যবহার করা হবে। পোর্টল্যান্ড বন্দরে কাজ করেছেন এমন সূত্র টাইমস পত্রিকাকে বলেছে, বন্দরে প্রবেশ করা এবং বাইরে যাওয়া একটি বিমানবন্দরে প্রবেশ করার মতো৷ ফলে সবাই অত্যন্ত নিরাপদ৷ তবে যখন খুশি যাতায়াত করা যাবে না৷ কাজেই আশ্রয়প্রার্থীরা মুক্ত থাকবেন এমনটা নয়৷

জেনরিক আরও বলেছেন, “সমস্ত বাসস্থান আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করবে৷ আর্থিক সহায়তাসহ তাদের দুশ্চিন্তা সমাধান করতে স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে।”পোর্টল্যান্ড বন্দরের প্রধান নির্বাহী বিল রিভস বলেন, “আবাসন প্রয়োজন এমন হাজার হাজার মানুষ এখানে রয়েছেন৷ তাদের যথাসাধ্য সাহায্য করবে আমাদের কর্মীরা৷।” রিভস আরও বলেন, “সমাজের প্রত্যেককে খোলা মনে এ বিষয়ে যোগাযোগ করতে হবে৷ অভিবাসী এবং স্থানীয় সম্প্রদায় উভয়ের জন্য এই ধরনের উদ্যোগ কতটা সফল হতে পারে তা বোঝা সহজ হবে।”

সরকার বলেছে, তারা বিবি স্টকহোমকে কমপক্ষে ১৮ মাসের জন্য চালু রাখতে চায়৷ এই সময় জাহাজটি ওই বন্দরে নোঙর ফেলা থাকবে৷ এদিকে
বৃটিশ সংবাদ সংস্থা বিবিসি বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) জানিয়েছে, তারা ভেবেছিল এই বছরের জুন বা জুলাইয়ে আশ্রয়প্রার্থীরা বার্জে আসতে শুরু করবে। কনজারভেটিভ পার্টির স্থানীয় এমপি রিচার্ড ড্রাক্স অবশ্য ইতিমধ্যেই এর বিরোধিতা করেছেন। সোমবার (৩ এপ্রিল) ওয়েবসাইটে এই ধারণাটিকে “অকার্যকর” বলে উল্লেখ করেন৷ তিনি বলেন, ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিবকে বলেছি পরিকল্পনা কার্যকর না হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে।

তিন দিন (৪ এপ্রিল) আগে ড্রাক্স বলেন, “এমন ঘোষণা দেয়ার আগে আমাদের সঙ্গে পরামর্শ করার সৌজন্যটুকু অন্তত দেখানো উচিত ছিল সরকারের।’’ এমপি হওয়ার আগে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে কাজ করেছিলেন ড্রাক্স৷ সাংবাদিক হিসাবেও কাজ করেছেন তিনি৷ ডরসেট কাউন্সিল এবং পুলিশ এবং অপরাধদমন কমিশনারের সঙ্গে কাজ করছেন৷ তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

অন্যদিকে শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের নিয়ে কাজ করে এমন বিভিন্ন এনজিও ও সংস্থা সরকারের নতুন আবাসন পরিকল্পনার সমালোচনা করেছে। শরণার্থী কাউন্সিলসহ প্রায় ১৭১টি সংস্থা প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে “কমন সেন্স” ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে৷ ৬ এপ্রিল দ্য গার্ডিয়ান এ কথা জানিয়েছে। এনজিওগুলির প্রস্তাব, সরকার আশ্রয়প্রার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার পরিবর্তে আশ্রয়ের ‘ব্যাকলগ’ থেকে পরিত্রাণ পেতে আরো বেশি মরিয়া৷

বৃটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী সুনাককে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, “হোটেলের ব্যবহার বন্ধ করা এবং আবাসন সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে নিরাপদ, দ্রুত, সাশ্রয়ী উপায় হলো আশ্রয় আবেদন নিয়ে ন্যায্য এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়া৷’’ শরণার্থী কাউন্সিলের সিইও, এনভার সলোমন, বিবিসির নিউজনাইট প্রোগ্রামকে বলেন, তিনি দেখতে চান “মানুষকে নিরাপদ কোনো রুট দেওয়া হোক যাতে প্রাণহানির ভয় নেই৷ নিরাপদে তারা যাতে এখানে আসতে পারে। সরকারের সহানুভূতিশীল ব্যবহার দেখতে চাই। ”

সলোমনের দাবি, যুক্তরাজ্যে প্রবেশকারী সমস্ত লোককে আশ্রয় আবেদনের নির্দিষ্ট কারণ বা তাদের দেশ ছেড়ে আসার কারণ ব্যাখ্যা করতে “ন্যায্য শুনানি” দেওয়া উচিত৷ ব্রিটেনে অভিবাসীদের প্রবেশকে “অবৈধ” হিসাবে চিহ্নিত করার পরিবর্তে ভেবে দেখা উচিত সরকারের৷

বিডিনিউজ ইউরোপ২৪ডটকম/৯এপ্রিল/জই


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ