• রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ভিয়েনা ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনার আয়োজন করতে প্রস্তুত – চ্যান্সেলর কার্ল সমুদ্রে উদ্ধার কাজ অনিয়মিত অভিবাসনকে উৎসাহিত করে না: ফ্রন্টেক্স প্রধান ভোলায় আজকের পত্রিকার পাঠক বন্ধুর কমিটি গঠন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা দেশজুড়ে ছাত্র- জনতার ‘শহীদী মার্চ’ ভোলায় র‍্যালি নারী ও শিশুসহ আটককৃত নিরাপরাধ “বম” দের মুক্তি দাবি দেশের ৫৫ নাগরিকের সেনা নিরাপত্তায় গাজীপুরে পোশাক কারখানা চালু দেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার সহ বাকী চার কমিশনারের পদত্যাগ দেশের বন্যার ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহযোগিতা প্রদান করার আশ্বাস দিয়েছে জাপান বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করেছেন বৃটিশ হাইকমিশনার বৈষম্য বিরোধী ও ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ৮০০ শহীদের নাম পাওয়া গেছে
বিজ্ঞপ্তি
প্রিয় পাঠক আমাদের সাইটে আপনাকে স্বাগতম এই সাইটি নতুন ভাবে করা হয়েছে। তাই ১৫ই অক্টোবর ২০২০ সাল এর আগের নিউজ গুলো দেখতে ভিজিট করুন : old.bdnewseu24.com

তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে আছে শরণার্থীরাও

কবির আহমেদ কূটনীতিক প্রতিবেদক আন্তর্জাতিক ডেক্স থেকে বিডিনিউজ ইউরোপ
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে আছে শরণার্থীরাও।তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলের স্মরণকলের ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১১হাজার ছাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) তুরস্ক ও সিরিয়া থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী গত সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সংগঠিত গত এক দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছে ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ৷ মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত অভিবাসন সংক্রান্ত অনলাইন পোর্টাল ইনফোমাই গ্র্যান্টসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সংখ্যা নির্দিষ্ট করা সম্ভব না হলেও নিহতদের মধ্যে আছে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থানরত অসংখ্য উদ্বাস্তু৷ ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞে ঘর-বাড়ি ছাড়া হয়েছে লাখো মানুষ, যাদের অধিকাংশই আগে থেকেই বাস্তুচ্যুত৷ এই দুর্যোগে সবচেয়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় পড়েছেন যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত ও শরণার্থীরা৷

সোমবার ভূমিকম্প আঘাত হানার পর থেকে উদ্ধারকর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছেন৷ কিন্তু তীব্র ঠাণ্ডার কারণে উদ্ধার কাজও ব্যহত হচ্ছে৷ আবার যারা বিভিন্ন ভবন বা অবকাঠামোয় চাপা পড়ে মৃত্যুর সঙ্গে প্রাণপণ লড়াই করছে, তারা কতোখানি ঠিকে থাকতে পারবেন তা নিয়েও দেখা দিয়েছ সংশয়৷

নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল (এনআরসি) ধারণা করছে, তুরস্কের গাজিয়ানটেপ শহরে ক্ষতিগ্রস্ত দশ লাখ মানুষের একটি বড় অংশই হলো শরণার্থী৷ ফ্রান্স ২৪ বলছে, শরণার্থীর সংখ্যা অন্তত পাঁচ লাখ হতে পারে৷ সিরিয়ায় যুদ্ধসহ নানা কারণে দেশেই মধ্যেই বাস্তুচ্যুত ৬০ লাখ মানুষের মধ্য অন্তত ৩০ লাখ মানুষের বসতি ছিল দেশটির আলেপ্পো এবং ইদলিবে৷ সিরিয়ার সিভিল ডিফেন্স ফোর্সের পরিচালক রায়েদ আল-সালেহ সোমবার ইনফোমাইগ্রেন্টসকে বলেন, ‘‘ভূমিকম্পের কারণে হাজার হাজার পরিবার এখন ঘর ছাড়া হয়েছে।’’

উত্তর সিরিয়ার পরিস্থিতি বেশ জটিল৷ কারণ এটি এমন এক এলাকা যেখানে যুদ্ধের কারণে অবস্থান করছেন বাস্তুচ্যুতদের বড় একটি অংশ৷ আর ওই এলাকাটি পুরোপুরি প্রেসিডেন্ট আসাদের নিয়ন্ত্রণেও নেই। এ পরিস্থিতিতে সিরিয়ার সরকারের কাছে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা পৌঁছালেও তা এই বিধ্বস্ত এলাকায় পৌঁছাবে কি-না তা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়৷

ভূমিকম্প আক্রান্ত সিরিয়া জুড়ে কাজ করছে নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের (এনআরসি) স্বেচ্ছাসেবক দল৷ তারা সেখানে আক্রান্ত মানুষকে ত্রাণ, সুপেয় পানিসহ আশ্রয় সহায়তা দিচ্ছে৷এনআরসির আহমেদ বায়রাম ফ্রান্স ভিত্তিক ইউরোপের অভিবাসন সংক্রান্ত পোর্টাল ইনফোমাইগ্রেন্টসকে বলেন, ‘‘সিরিয়ায় যুদ্ধের সময় ধ্বংস হওয়া যে ভবনগুলো পুনরায় নির্মাণ করা হয়েছে তার বেশিরভাগই ছিল নড়বড়ে৷ ফলে তুরস্ক সীমান্তের চেয়ে সিরিয়ার ধ্বংসযজ্ঞ আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে৷’’

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পরিচিতির সঙ্গে আলাপের পর বায়রাম বলেন, ‘‘অবকাঠামোগুলো নিঃশেষ হয়ে গেছে। ধরেন সেখানে আপনার একটি বাড়ি আছে, সেটিও যেকোনো সময় ধ্বংস হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে৷’’ এদিকেণজার্মানির পাবলিক নিউজ চ্যানেল জেডডিএফ(ZDF) জানিয়েছে, কয়েকটি বাদে, সবকটি হাসপাতালের করিডোরে আক্ষরিক অর্থে স্তুপ করা মরদেহ পড়ে আছে৷ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বায়রাম বলেন, ‘‘সিরিয়ায় যারা তাঁবুতে আছেন, এখন তারা বরং নিজেদের ভাগ্যবান বলতে পারেন৷ কারণ মাথার ওপর কোনো কিছু ধসে পড়ার আশঙ্কা নেই৷’’ভূমিকম্পে এই অঞ্চল জুড়ে প্রায় ছয় হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে লেবানন ও সাইপ্রাসেও৷

ঘটনার দিন অর্থাৎ সোমবার একটি বিশেষ সভায় বসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্বাহী বোর্ড৷ বিশেষত শরণার্থী, অভিবাসী এবং বাস্তুচ্যুত মানুষের সহায়তা দেয়াটা এই বিশ্ব সংস্থার মূল উদ্দেশ্য৷ ডব্লিউএইচওর (WHO) মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসিসের বরাত দিয়ে স্বাধীন সংবাদমাধ্যম হেলথ পলিসি ওয়াচ জানিয়েছে, তুরস্ক ও সিরিয়ায় আঘাত হানা ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা দিতে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা টিমকে সক্রিয় করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, শরণার্থী এবং অভিবাসীরা সমাজের সবচেয়ে দুর্বল অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়৷ তাদের প্রায় বিদেশ ভীতি, বৈষম্য, দরিদ্র জীবনযাপনের মুখোমুখি হতে হয়৷ ঘন ঘন শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার পরেও পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সেবা থেকে তারা বঞ্চিত হয়৷

তবে এই দুর্যোগের মধ্যেও সিরিয়ায় প্রবেশের সীমান্ত পথটি অক্ষত থাকায় অন্তত সহযোগিতা পৌঁছাতে বেগ পোহাতে হবে না বলে আশা করা হচ্ছে৷ ৬ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের মানবিক সহযোগিতা সমন্বয় কার্যালয় ওসিএইচএ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই সীমান্ত পারাপার সিরিয়ার জন্য একটি ‘লাইফলাইন’৷

সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে সাত হাজার ৫৬৬টি রসদ বোঝাই ট্রাক তুরস্ক হয়ে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় ঢুকেছে, যা প্রতি মাসে গড়ে ২৭ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে৷ জাতিসংঘ সীমান্ত পারাপার অক্ষত থাকার কথা বললেও এনআরসি বলছে, এটি খুব দ্রুত চালু হবে৷
সিরিয়ার উত্তরে ইদলিব, হোমস, আলেপ্পো, হামস এবং লাত্তাকিয়ার আশেপাশের এলাকায় হাজারো বাস্তুচ্যুত মানুষের বসতি৷ যুদ্ধের সময় যারা দেশ ছেড়েছেন তাদের বসতি তুরস্কের সীমান্ত এলাকায়৷ ২০১১ সালে সিরিয়ায় যুদ্ধ শুরু হলে দেশটির ৩০ লাখেরও বেশি নাগরিককে আশ্রয় দেয় তুরস্ক৷

এছাড়া, আফগানিস্তান থেকে ইরান-ইয়েমেন হয়ে পূর্বের অন্য দেশগুলো থেকেও অভিবাসনপ্রত্যাশীরা ইউরোপ ঢোকার আশায় তুরস্কে পাড়ি জমায়৷ সিরীয় উদ্বাস্তু আবু আহমেদ মূলত আলেপ্পোর বাসিন্দা৷ ভূমিকম্পের দিন অর্থাৎ সোমবার পর্যন্ত তুরস্কেই ছিলেন৷ ইদলিব অঞ্চলে স্থানীয় এনজিওগুলোর সহযোগিতা নিতে সিরিয়ায় ফিরে যাচ্ছেন তিনি৷

তিনি সংবাদ মাধ্যমকে আরও বলেন, ‘‘তুরস্কের আন্তাকিয়ার যে ভবনটিতে আমরা থাকতাম এবং যেখানে আমার আত্মীয় স্বজনরা ছিলেন সেটি ধসে পড়েছে। ভাগ্য ভালো যে আমরা নিরাপদ আছি৷ কিন্তু আমাদের এখন আর কোনো বাড়ি নেই। আমরা ইদলিবের দিকের রাস্তায় চলেছি। এটাই সবচেয়ে কাছের জায়গা। আমাদের আশা, সেখানে গেলে সিরিয়ার এনজিওগুলো আমাদের সহযোগিতা করবে৷’’

বিডিনিউজ ইউরোপ২৪ডটকম/১৬ ফেব্রুয়ারি/জই


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ