বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কিংবদন্তি ফুটবলার আর্জেন্টিনার ম্যারাডোনার হার্ট এটাকে মৃত্যুবরণ!
সারা বিশ্বের ফুটবল প্রেমিদের মাঝে শোকের ছায়া নেমেছে আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি বিশ্বকাপ বিজয়ী ফুটবলার দিয়াগো ম্যারাডোনা মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি আজ নিজের বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি বেশ কিছুদিন যাবত অসুস্থ অবস্থায় বাসায় অবস্থান করছিলেন। তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি।
মুহুর্তের মধ্যে তার মৃত্যুর সংবাদ ব্রেকিং নিউজ আকারে বিশ্বের সকল সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। মৃত্যুকালে ম্যারাডোনার বয়স হয়েছিল ৬০ বৎসর। ম্যারাডোনা বল খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর বেশ মোটা হয়ে গিয়েছিলেন। তাই তিনি স্থূলকার জন্য সব সময়ই নানান অসুখে ভুগছিলেন এবং প্রায়ই হাসপাতালে ভর্তি হতেন। গত মাসে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছিলেন ম্যারাডোনা।
আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেসের হাসপাতালে তার মস্তিষ্কে জরুরী অস্ত্রোপচার করা হয়। মস্তিষ্কে জমাট বেঁধে থাকা রক্ত অপসারণ করা হয়েছিল। তখন তিনি মাদকাসক্তি নিয়ে ভীষণ সমস্যায় ভুগছিলেন। একবার মাদক সেবন ও সংরক্ষণের জন্য আর্জেন্টিনার পুলিশ তাকে গ্রেফতারও করেছিলেন। অনেক বিশেষজ্ঞ, ফুটবল সমালোচক, সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড় এবং ফুটবল সমর্থক তাকে সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে গণ্য করেন।
তিনি বিশ্বফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ফিফার বিংশ শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় পেলের সঙ্গে যৌথভাবে বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবল খেলোয়ার হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেছিলেন। ম্যারাডোনাই একমাত্র খেলোয়াড় যিনি দুইবার ক্লাব স্থানান্তর অর্থের ক্ষেত্রে বিশ্বরেকর্ড গড়েন। সেই আশির দশকে প্রথমবার বার্সেলোনায় স্থানান্তরের সময় ৫ মিলিয়ন ইউরো এবং দ্বিতীয়বার নাপোলিতে স্থানান্তরের সময় ৬.৯ মিলিয়ন ইউরো। পেশাদার ক্যারিয়ারে ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনার জুনিয়র্স, বোকা জুনিয়র্স,স্পেনের বার্সেলোনা,সেভিয়া, ইতালির নাপোলি এবং বৃটেনের নিওয়েলস ওল্ড বয়েজের হয়ে খেলেছেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আর্জেন্টিনার হয়ে তিনি ৯১ খেলায় ৩৪ গোল করেন। তিনি চারটি ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে ছিল ১৯৮৬ বিশ্বকাপ, যেখানে তিনি আর্জেন্টিনার অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং দলকে বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দেন। প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় হিসেবে স্বর্ণপদক লাভ করেন। তিনি কিছুদিন আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের ম্যানেজারের দায়িত্বও পালন করেছিলেন। কিন্ত ম্যানেজার হিসেবে খুব কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও ২০০৮ সালের নভেম্বরে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব দেয়া হয় ম্যারাডোনাকে।
২০১০ বিশ্বকাপের পর চুক্তি শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি আঠারো মাস এই দায়িত্বে ছিলেন। আশির দশকের সেই ম্যারাডোনার যাদু নৈপূর্ণ ফুটবল খেলার জন্যই বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। বাংলাদেশের কোটি কোটি ম্যারাডোনা ও আর্জেন্টিনা ভক্তদের সাথে আমরা বিডিনিউজ ইউরোপ পরিবারও এই বিশ্ব ফুটবলারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছি।
বিডিনিউজ ইউরোপ/২৬ নভেম্বর/ জই