অভিনব কায়দায় প্ল্যাকার্ড টাঙিয়ে দোয়া চাইলো ৫ এসএসসি পরীক্ষার্থীনিজেদের ।ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড টাঙিয়ে এসএসসি পরীক্ষার জন্য দোয় চেয়েছে পাবনার বেড়া উপজেলার কাশিনাথপুর বিজ্ঞান স্কুলের পাঁচ শিক্ষার্থী। তাদের এই অভিনব ও ব্যতিক্রমী কর্মকাণ্ড ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম জাগো নিউজের ।এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,৫ জন এস এস সি পরীক্ষার্থী প্ল্যাকার্ডে তাদের নামও লিখে দিয়েছে। তাদের টাঙানো প্ল্যাকার্ডের ছবি গত দুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তাদের এমন অভিনব কাজ নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। তবে বেশিরভাগ মানুষ তাদের এ কাজকে সৃজনশীলতার দৃষ্টান্ত হিসেবে মত দিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার (৭ জুন) কাশিনাথপুর মোড়ে গিয়ে দেখা গেছে, খুঁটিতে পাঁচজনের ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড টাঙানো। এতে তাদের নামও রয়েছে। লেখা আছে- দোয়া প্রার্থী এসএসসি পরীক্ষার্থী। এ পাঁচ পরীক্ষার্থীরা হলেন- মাশরাফি, সাহেদ, নাহিদ, রাফিদ ও সামি। এ নিয়ে সমালোচনা হলেও অধিকাংশ মানুষ ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন।
প্ল্যাকার্ড টাঙানো পাঁচ শিক্ষার্থীর একজন খন্দকার মাশরাফি জানায়, তারা কারও কাছে শুনে এটি করেনি। পাঁচ বন্ধু হঠাৎ করেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তারা কাশিনাথপুর মোড়ে তিনটি প্ল্যাকার্ড টাঙিয়েছে। তবে তাদের ছবিটি স্কুলের পাশে দাঁড়িয়ে তুললে ভালো হতো বলেও জানায় সে।
স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাথে এক সাক্ষাৎকারে
প্ল্যাকার্ড টাঙানোর প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক বলেন, এটা কিশোর মনের আবেগ বা আনন্দের বহিঃপ্রকাশ। তারা তো অন্যায় কিছু করেনি। তারা মানুষের কাছে দোয়া চেয়েছে মাত্র।
পরীক্ষার আগে বড়দের কাছে দোয়া চাওয়া আমাদের দেশে একটি অনেক পুরনো রেওয়াজ। এটি পারিবারিক, সামাজিক-রীতির একটি অংশ হিসাবেপরিগণিত হয়ে আসছে। তবে পাবনার কাশিনাথপুর বিজ্ঞান স্কুলের এই পাঁচ শিক্ষার্থীর দোয়া চাওয়ার ঘটনায় তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বিষয়টিকে কেউ বলছেন ‘সৃজনশীল’, কেউ বলছেন ‘অভিনব’। বলা যায় পুরো ঘটনা এখন ভাইরাল!
দোয়া প্রার্থী শিক্ষার্থীরা হলেন, যথাক্রমে বেড়া উপজেলার কাবাসকান্দা গ্রামের ইফতেখার উদ্দিনের ছেলে সাহেদ, একই গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে অমিত হাসান, নয়াবাড়ি গ্রামের মোহন মোল্লার ছেলে নাহিদ হাসান, দ্বারিয়াপুর গ্রামের খন্দকার শহিদুল্লার ছেলে সামি খন্দকার ও খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুনের ছেলে খন্দকার মাশরাফি।
বিজ্ঞান বিভাগের ওই পাঁচ শিক্ষার্থী পরস্পর বন্ধু বলে জানা গেছে। আগামী ১৯ জুন থেকে তাদের এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। শিক্ষার্থীদের একজন নাহিদ হাসান জানায়, তাদের কোনো পূর্ব পরিকল্পনা ছিল না। ৪ জুন একটা প্রেসের সামনে দাঁড়িয়ে পাঁচ বন্ধু কথা বলার সময় সেখানে একটি ডিজিটাল বিলবোর্ড দেখে তারা এই পরিকল্পনা করে।
এ প্রসঙ্গে অমিত হাসানের ভাষ্য- ‘যেহেতু আমরা রাজনীতি করি না, সেহেতু কি উদ্দেশ্যে বিলবোর্ড বানানো যায় সেই চিন্তা করি। তখন আমাদের মাথায় আসে পরীক্ষার কথা। আমরা ভাবি, সবার কাছে দোয়া চেয়ে আমরা একটা বিলবোর্ড বানাতেই পারি।’
সেই ভাবনা থেকেই ৩টি বিলবোর্ড বানানো হয়। এ জন্য খরচ হয় ১ হাজার টাকা। ৫ জুন কাশিনাথপুর মোড়ে পুলিশ বক্সের পাশে, ফুলবাগান চত্বরে ও বিজ্ঞান স্কুলের সামনে তিনটা বিলাবোর্ড টাঙানো হয়। ‘এরপরই দ্রুত বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে’ উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের একজন সাহেদ জানায়, তারা কেউ ফেসবুকে বিলবোর্ডের ছবি পোস্ট করেনি। তবে ফেসবুকে কেউ একজন বিলবোর্ডের ছবি শেয়ার করলে বিষয়টি ভাইরাল হয়। এরপর অনেক নেতিবাচক মন্তব্য দেখে গত ৭ জুন বিলবোর্ডগুলো নামিয়ে ফেলে তারা।
স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আমিরুল ইসলাম সানু বলেন, আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষ অনভিজ্ঞতার কারণে এ ঘটনায় কিছুটা বিব্রত হয়েছি। তবে তারা অন্যায় কিছু করেনি বলেই আমি মনে করি। এটিকে আমরা সৃজনশীলতার দৃষ্টান্ত হিসেবেই দেখতে চাই।
বিডিনিউজ ইউরোপ২৪ডটকম/১৩জুন/জই