• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ধারাভাষ্যে সাকিব কে নিয়ে তামিমের যত কথা ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা; পাঁচ শিক্ষার্থী গ্রেফতার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দুই মাসের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যৌথ-বাহিনীর অভিযানে কল্লাকাটা মিজান’সহ ৭ সন্ত্রাসী আটক পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দু’জনকে কুপিয়ে জখম, দুই পক্ষের ৪ জন হাসপাতালে ভর্তি অস্ট্রিয়ায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ অস্ট্রিয়াসহ পূর্ব ইউরোপের কয়েকটি দেশ প্রচণ্ড বৈরী আবহাওয়ার কবলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে বছরে লোকসান ৬৬ কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে মার্কিন প্রতি‌নি‌ধিদলের সাথে আলোচনা গ্রিসের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার বন্ধ ঘোষণা
বিজ্ঞপ্তি
প্রিয় পাঠক আমাদের সাইটে আপনাকে স্বাগতম এই সাইটি নতুন ভাবে করা হয়েছে। তাই ১৫ই অক্টোবর ২০২০ সাল এর আগের নিউজ গুলো দেখতে ভিজিট করুন : old.bdnewseu24.com

মিস করছি ক্যাম্পাসের চায়ের আড্ডা:করোনায় বিচ্ছিন্ন ক্যাম্পাস

মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ জবি প্রতিনিধি ঢাকা
আপডেট : বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২০

মিস করছি ক্যাম্পাসের চায়ের আড্ডাঃ করোনায় বিছিন্ন ক্যাম্পাস

ক্যাম্পাসের আড্ডার সঙ্গী প্রিয় চা। চায়ের আড্ডায় ভরপুর হয়ে উঠে পুরো ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসে সবার সাথে সবার যোগাযোগ ধরে রাখার মাধ্যম হচ্ছে চায়ের কাপের আড্ডা। চায়ের কাপের আড্ডায় থাকে না কোনো সিনিয়র জুনিয়র ভেদাভেদ। সবাই একসাথে মেতে উঠে আড্ডায়। ক্যাম্পাসে সদ্য আসা জুনিয়র থেকে মাস্টার্স পাশ অথবা চাকুরী ক্ষেত্রে প্রবেশ করা সিনিয়র সবার সাথে সম্পর্কের সুতো বেঁধে দেয় এই চায়ের কাপের আড্ডা। প্রতিটি ক্যাম্পাসের মোড়ে মোড়ে কিংবা চত্বরের চায়ের দোকান গুলোতে গড়ে ওঠে বছর চারেক হাজারো স্মৃতি হাজারো গল্প। করোনায় ঘরবন্দী অবস্থায় তাই যেনো শিক্ষার্থীদের মনে সেই চায়ের আড্ডার স্মৃতিগুলো নাড়া দিয়ে উঠে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে ক্যাম্পাসের চায়ের আড্ডার স্মৃতিচারণ গুলো তুলে ধরেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিক মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির স্বপন মামা’র চায়ের দোকানের ‘চা’ খেয়ে আমার সকাল শুরু হয়। সারাদিনের ব্যস্ততার অবসান ঘটিয়ে হলের দিকে রওয়ানা হওয়ার সময়ও এই ‘চা’- ই পরম উপদেয়! দীর্ঘ ছুটিতে ক্যাম্পাসের কাটানো মুহূর্তগুলোর সাথে ‘চা’ খাওয়া ও মিস করছি। বন্ধু-বান্ধবের সাথে গল্পের সাথী এই ‘চা’। ক্যাম্পাস সময়ে চা’য়ের সাথে চলে রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি আর তত্ত্ব নিয়েই আলোচনা। কোভিডের অবসান ঘটিয়ে কখন আবার সেই পরম উপাদেয় পানীয়ের সাথে সকাল হবে! সেই সকালের অপেক্ষার প্রহর গুনছি।

ছিদ্দিক ফারুক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

মানুষের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ন সময় হলো ক্যাম্পাস লাইফ। যা তার সারা জীবনের স্মৃতি হয়ে থাকে। আর এর মধ্যে অন্যতম হলো ক্যাম্পাসের চায়ের আড্ডা। মানুষের সুস্থ থাকার জন্য আড্ডা আর একরাশ হাসি, যে কোন দামী ওষুধের থেকে বেশি কার্যকরী। যখন একটা গুমোট, গোমড়া পরিবেশ নিজের চারিদিকে তৈরি হয় তখন সেটা শরীর, মন দুটোর উপরেই প্রভাব ফেলে। মানুষের মন এমনই অদ্ভুত।সারাদিন ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট, পরীক্ষা ও ভাইভা শেষে মনটাকে সতেজ করার জন্য বালুর মাঠে হাফিজ মামার চায়ের দোকানে এক কাপ চা যেনো সব ক্লান্তি দূর করে। ভোর ছয়টা থেকে রাত বারোটা পর্যন্ত বালুর মাঠে সারি বদ্ধ চায়ের দোকানে হাজারো স্বপ্নের আড্ডা হয় এছাড়াও রয়েছে লিপুস ক্যান্টিন ও বাধণ চত্বর। করোনার কারনে বন্ধুদের সাথে দেখা, আড্ডা ও গল্পের সাথে চায়ের কাপে চুমুক দেয়া যা আজ ঘরবন্দী জীবনে সবচেয়ে বেশি মিস করছি।

রাজু আহমেদ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

অদৃশ্য এক পরজীবি এসে ক্যাম্পাসের উন্মুক্ত জীবণযাপনকে করলো ঘরবন্দী। প্রতিদিনের কোলাহল, আড্ডা, খুনসুটি তর্ক-বিতর্ক সব কেড়ে নিলো। জীবনকে করে তুললো আত্মকেন্দ্রিক। এতে মনের ভিতর বাসা বেঁধে নিলো হাহাকারের। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিদিনে রুটিন মাফিক ক্লাসের মত সপ্তাহের বিভিন্ন দিন বিভিন্ন চায়ের স্টলে আর বসা হয়না। ক্যাম্পাসের গণতান্ত্রিক স্থান এনামুল ভাইয়ের চায়ের দোকানে আর রাজনৈতিক-সাংস্কৃতি আলাপ হয় না, যুগলদের প্রিয় স্থান নাসির ভাইয়ের স্টলে বসে আর কোন অপরিচিতার সাথে চা পান করা হয়না। টুকিটাকিতে ক্লাস নোট নিয়ে কোন বন্ধুদের সাথেও আর বসা হয় না। ক্যাম্পাসের মিনি পার্লামেন্ট সব বন্ধ হয়ে গেছে। সেই সাথে হারিয়ে গেছে সংসদের সদস্যরাও। সব যেনো দীর্ঘ অতীত হয়ে গেছে। পরিস্থিতি সবার স্বাস্থ্যের অনূকুলে আসলে অতি দ্রুতই যেনো সবার আগে ক্যাম্পাস খোলা হয়। প্রতিটি দিন কাটে আবারও কবে চায়ের চায়ের কাপ নিয়ে সবার সাথে বসতে পারবো।

আব্দুস সবুর লোটাস
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কের পার্কের মোড় এলাকায় রাস্তার দুইধারে তাকালেই দেখা যাবে কিছু টং দোকানে বসে ধোয়া উঠা চায়ে চুমুক দিতে দিতেই বিশ্বরাজনীতি আর জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা ক্ষেত্রে বিচরণ করছে কিছু তরুণ-তরুণী। আর একদল আবার গিটারের টুংটাং শব্দে মিশে গেছে এক অন্য ভূবনে, তাদেরও সঙ্গী এক কাপ চা। বলছিলাম বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুর এর ২নং গেট সংলগ্ন পার্কের মোড় এলাকার কথা। তরুণ এসব শিক্ষার্থীদের নিত্যদিনের সঙ্গী চায়ের আড্ডা, এটা ছাড়া যেন দিনটি প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠে এই মেধাবীদের কাছে। ক্লাস, পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশনসহ নানা ব্যস্ততায় মানসিক অবসাদ কাটাতে সেই আড্ডায় এক কাপ চা এনে দেয় অন্যমাত্রা। ক্যাম্পাস জীবনে এই চায়ের আড্ডা ছাড়া জীবন অলস ও অসাড় মনে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাফেটেরিয়া কিংবা টংয়ের দোকানে কাটানো সেই সময়ে এক কাপ চা যেন একটা ক্লান্ত প্রাণকে মুহুর্তেই করে সতেজ, সজীব। করোনার এই ভয়াল গ্রাসে থেমে গেছে এসব প্রাণবন্ত আড্ডাগুলা। পৃথিবী সুস্থ হলে আবার দেখা মিলবে এই প্রানের আড্ডাগুলো, সরব হয়ে উঠবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ এই প্রত্যাশায় দিনগুনছে অধিকাংশ শিক্ষার্থী।

রবিউল হাসান সাকীব
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর
বিডিনিউজ ইউরোপ/২৫ নভেম্বর/ জই


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ