• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
সিরিয়ার দীর্ঘ ৫৪ বছরের পতন আসাদের পলায়ন ভোলার স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান “পরিবর্তন যুব উন্নয়ন সংস্থার” সনদপত্র অর্জন ভিয়েনা বিশ্বের মানুষের বাসযোগ্য শ্রেষ্ঠ শহর থেকে একধাপ সরে এলো মারাত্মক বন্যার কবলে মালয়েশিয়া মধ্যপ্রাচ্যে অস্ট্রিয়ার মানবিক সহায়তা সাড়ে সাত মিলিয়ন ইউরো জার্মানির অভিবাসন নীতি বদলে ফেলার বিপক্ষে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস অভ্যুত্থান পরবর্তী লুটপাট বন্ধ হওয়ায় ভারত বাংলাদেশে আগ্রাসন চালাতে চায়:রিজভী ভোলার বীর সন্তান শহীদ শাকিল কে স্মরণীয় রাখতে ডিসি কে স্মারকলিপি প্রদান দেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে চাই:জামায়াত ঝালকাঠি তে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ক্যাবের মানববন্ধন

জেলা প্রশাসককে ফোন করে পাকা বাড়ি পাচ্ছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সাজু মিয়া

মিজানুর রহমান লালমনিরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২০

জেলা প্রশাসককে ফোন করে পাকা বাড়ি পাচ্ছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সাজু মিয়া

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা তীরের উত্তর সির্ন্দুনা গ্রামের দিনমজুর নুর ইসলামের দুই ছেলে জন্মের পর থেকেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। তার বড় ছেলের নাম শাহিন মিয়া (৩০) ও ছোট ছেলে সাজু মিয়া (২০)। বড় ছেলে শাহিন মিয়ার স্ত্রীও প্রতিবন্ধী।

তাদের বাবা নুর ইসলাম একজন পেশায় দিনমজুর। নদীতে সব জমি বিলিন হয়ে মাত্র ১৫ শত জমির ওপর তাদের বসতবাড়ি। দিনমজুরি ও অন্যের জমি চাষ করে কোনোমতে অতিকষ্টে সংসার চলে তাদের। মা ছালেমা বেগম গৃহিণী।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সাজু মিয়া ও শাহিন মিয়া প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী। তারপরেও অতি কষ্টে চলছে তাদের সংসার। দিনমজুরি আর ভাতার সামান্য টাকা দিয়েই কোনোরকমে কাটছে দিনরাত।

সংসারের যখন এই অবস্থা তখন থাকার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে ফোন দিয়ে একটি বাড়ি চেয়েছিলেন ছোট ছেলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সাজু। সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে তার জন্য একটি পাকা বাড়ি তৈরি করে দিচ্ছেন জেলা প্রশাসক আবু জাফর। ‘জমি আছে ঘর নেই’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ প্রকল্পের আওতায় তাকে এ ঘর তৈরি করে দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে বসতবাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তিস্তা নদীর তীর ঘেঁষে দুই কক্ষবিশিষ্ট পাকা বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সাজু মিয়ার জন্য। বাড়ি পেয়ে খুশি পরিবারের সবাই। তার মা ছেলেমা বেগম (৪৭) বলেন, ‘আল্লাহ এবার হামাক মুখ তুলি দেখছে। পাকা ঘরত থাকির পামো। ছোয়া (ছেলে) দুইটার একটা কাজ থাকলে আর হামাক কামলা (দিনমজুর) দিয়া খাইতে হইতো না।’

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সাজুর বড় ভাই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শাহিন বলেন, ‘আমার ছোট ভাই যেভাবে পাকা ঘর পাইছে, আমিও ঘর পেতে চাই। আমিও প্রতিবন্ধী। আমার স্ত্রীও প্রতিবন্ধী। আমার এক সন্তান আছে। আমি সরকারের কাছে একটা কাজ চাই-এটাই আমার দাবি।’

সাজু মিয়া বলেন, ‘অনেক দিন মেম্বার-চেয়ারম্যানদের বাড়ি বাড়ি ঘুরেও সরকারি ঘর পাইনি। প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থার মুক্তা আপার মাধ্যমে ডিসি স্যার আমাদের ঘর করে দেয়ার আশ্বাস দেন। ডিসি স্যার আমাদের একটা পাকা বাড়ি উপহার দিয়েছেন। এজন্য স্যারের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আমারা দুই ভাই বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিয়েছি। যদি কেউ একটা কাজ দিতেন, তাহলে আমরা কর্ম করে খাইতাম।’

প্রতিবন্ধী প্রশিক্ষক ও গবেষক রুকশাহানারা সুলতানা মুক্তা বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠিত সারপুকুর ইউনিয়ন প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থা জেলা প্রশাসকের সহযোগিতা নিয়ে জেলার প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসনের জন্য কাজ করছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শাহিন ও সাজু মুদির দোকান ও গাভি পালন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন সহযোগিতা করলে তাদের পুনর্বাসন করা সম্ভব।’

হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আহম্মেদ বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তিস্তাপাড়ের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সাজুর বাড়ি নির্মাণের কাজ চলছে ‘

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, ‘দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না বলে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সাজুর ফোন পেয়ে উপজেলা প্রশাসনকে তদন্ত করে পাকা বাড়ি নির্মাণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
বিডিনিউজ ইউরোপ/২৪ নভেম্বর/ জই


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ