বরফের উপর দিয়ে গ্রিসে ঢুকতে যেয়ে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায়
বাংলাদেশী যুবকের মৃত্যু
স্বপ্নের ইউরোপে আর প্রবেশ করা হল না ফেনীর
নজরুল ইসলাম শাহিনের। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় তুরস্ক ও গ্রিসের দুর্গম সীমান্তে আরও একজন অভিবাসন প্রত্যাশী বাংলাদেশী যুবকের মৃত্যু।বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে,অবৈধভাবে ইউরোপ প্রবেশ করতে গিয়ে আবারও একজন বাংলাদেশী যুবকের মৃত্যু হয়েছে। অবৈধভাবে তুরস্ক সীমান্ত পাড়ি দিয়ে গ্রীসে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন নজরুল ইসলাম শাহীন। তার বাড়ি বাংলাদেশের ফেনী জেলায়। তার বয়স আনুমানিক২৮ বছর। তিনি ওমান থেকে তুরস্ক হয়ে ইউরোপ প্রবেশ করতে গিয়ে তীব্র তুষারপাতের কবলে পড়ে মারা যান।অবৈধভাবে ইউরোপ প্রবেশ করতে গিয়ে প্রায়ই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ছেন বাংলাদেশের তরুণরা। শুধু সমুদ্রপথে নয়, সড়ক পথেও তাদেরকে মৃত্যুর মুখে পড়তে হচ্ছে। বারবার এনিয়ে খবর প্রকাশের পরও বন্ধ হচ্ছে না এই মৃত্যুযাত্রা।
মৃত শাহীনের ফুফাতো ভাই ফেনীর নাসির উদ্দিন মানিক ভয়েস অফ আমেরিকা সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে জানান,নিহত শাহীন ফেনী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বারাহীপুর এলাকার মাস্টারবাড়ির মিজানুর রহমানের ছেলে। ফেনীর শহীদ মেজর সালাহ উদ্দিন মমতাজ বীর উত্তম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে এসএসসি পাস করেন। ২০১৯ সালে জীবিকার তাগিদে তিনি দেশ ছেড়ে ওমান যান। দুই বছর ওমানে থাকার পর তিনি গত বছর তুরস্কে যান। সেখান থেকে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করেন। গত সপ্তাহে সর্বশেষ গ্রীসে প্রবেশের সময় তুষারপাতের কবলে পড়েন। তীব্র শীত ও খোলা আকাশের নীচে টানা দীর্ঘসময় থাকার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। শাহীনের পরিবারের সদস্যরা তুরস্কে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে লাশ উদ্ধার করে দেশে আনার চেষ্টা করছেন।
এদিকে ইউরোপের বাংলাদেশের কমিউনিটির জন্য কাজ করা প্রবাসী বাংলাদেশি আফজাল হোসেন
ভয়েস অফ আমেরিকা সহ বিভিন্ন বাংলাদেশী সংবাদ
মাধ্যমকে এই বিষয়ে বলেন, “লিবিয়া থেকে অবৈধভাবে নৌ পথে সবচেয়ে বেশী বাংলাদেশি ইউরোপে প্রবেশ করে। গত কয়েক বছর ছোট নৌযানে করে প্রবেশের সময় বারবার দুর্ঘটনায় বাংলাদেশীদের মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হচ্ছে। তারপরও অবৈধভাবে ইউরোপ প্রবেশের চেষ্টা করা বন্ধ হয়নি। এই ব্যাপারে আমাদের আরও সচেতনতা তৈরি করতে হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশের একজন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত সরোয়ার হোসেন ভয়েস অফ আমেরিকার বাংলা বিভাগকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে
বলেন, “ঘটনাগুলো দুঃখজনক হলেও বাংলাদেশে এ ব্যাপারে এখনও সচেতনতা বাড়েনি। এইভাবে অবৈধবাবে যারা ইউরোপে লোক পাঠাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। আমাদের তুরস্ক, লিবিয়া দূতাবাসকে আরও দৃষ্টি রাখতে হবে এই বিষয়ে। প্রয়োজনে সরকার বিশেষ সেল তৈরি করতে পারে দূতাবাসে বলে জানান তিনি।
বিডিনিউজ ইউরোপ২৪ডটকম/১৭ফেব্রুয়ারি/জই