ভোলার কৃষকরা সোনালী ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছে
দ্বীপজেলা ভোলার সর্বত্রই এখন চলছে কৃষকের সোনালী রঙের নতুন ধানকাটার ব্যস্ততা।করোনা মহামারীর ধাক্কা তাদের জীবন যাত্রায় ব্যঘাত ঘটাতে পারেনি। জীবন সংগ্রামী খেটে খাওয়া বাঙ্গালীরা দৃঢ় আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে এগিয়ে যাচ্ছে হাতে হাত ধরে। গ্রামের পথে প্রান্তরে এসময় যেদিকেই চোখ যায় দেখা যায় পাকা ধানের গন্ধে চারদিক যেন মৌ মৌ করছে। বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে সোনালী ধানের সমারোহ যে কারো মনকে আনন্দে ভরিয়ে দিবে। গ্রামের পথে প্রান্তরে যেদিকেই চোখ যায় দেখা যায় কৃষকেরা ধান কাটাতে ব্যস্ত সময় পার করছে। সকাল হতেনা হতেই তারা কাস্তে নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে সোনালী ধান কাটার জন্য।
কৃষকদের মুখেও এবার সফলতার হাসি। কারণ এবার যে ধানের ন্যায্য দাম তারা পাচ্ছে। প্রতি বছর ধানের দাম কম থাকায় অধিকাংশ কৃষকদের মাঝেই হতাশা নিয়ে ধান কাটতে নামতে হয়। কিন্তু এবছর তারা এক বুক আশা নিয়ে খুশি মনে ধান কাটছে। প্রতি বছর যেখানে খরচের টাকা তুলতেই অনেক কৃষককে হিমশিম খেতে হয় এবার ন্যায্য মুল্যে ধানের দাম থাকায় সেই হতাশা তাদের মাঝে আর নেই।
লালমোহন উপজেলার কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, “হত্যেক বছর আমগো চিন্তা থাকে যে টেহা আমরা খরচ করছি তা উডাতে পারুম কিনা। কিন্তু এবছর আল্লায় দিলে ধানের বাজারড্ডা আগের চেয়ে অনেকটা ভালা। আমগোর মাঝে আগে যেই হতাশা আছিলো এহন আর নাই। বউ বাচ্চা নিয়ে এহন দুই চারডা ভালা মন্দ খাতি পারমু।”
অন্যদিকে দেখা যায় অনেক কৃষক আবার ধানের চারা রোপণের জন্য বীজতলা প্রস্তুত করায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কারণ ধান তো শুধু কাটলেই হবেনা। আবার সময়মতো যেন ধানের চারা রোপণ করতে পারে সেদিকেও তাদের খেয়াল রয়েছে। অনেকে শীতকালিন সবজি চাষ নিয়েও পরিকল্পনা করছেন। দৌলতখান উপজেলার কৃষক ইউনুস বলেন, ‘করোনার কারনে আয়-রোজগার কমে যাওয়ায় সংসার চালাতে কস্ট হয় তাই বসে থাকার সময় নাই। আমন দান কাইটা সেই জমিতেই আবার ধুলট(শীতকালীন সবজি) চাষ করমু’। কৃষকদের এই হাসিমাখা মুখ দেখে কবি দ্বিজেন্দ্র লাল রায়ের সেই বিখ্যাত কবিতা মনে পড়ে গেলো- ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা’ তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা। হ্যাঁ, আমাদের দেশ সকল দেশের সেরা। কারণ এই দেশের মতো এত সুন্দর দেশ পৃথিবীর অন্য কোথাও খুঁজে পাওয়া সম্ভব না। যেখানে সকল ধর্মের মানুষ কাঁধে কাঁধ রেখে নিত্যদিন তাদের কাজ-কর্ম করে থাকে। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প এদেশের মানুষের মাঝে নেই। তারা দুবেলা দু’মুঠো খেয়ে বেঁচে থাকতে পারলেই খুশি থাকে।
বিডিনিউজ ইউরোপ/২৩ নভেম্বর/ জই