ধর্ষণের শিকার কিশোরীর অন্তঃসত্ত্বার অভিযোগ
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নের টিলারচর গ্রামের এক কিশোরী (১৩) প্রতিবেশী যুবকের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। উক্ত কিশোরী পার্শ্ববর্তী সবুল্ল্যা শিকদার ডাঙ্গি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী।
প্রায় তিন মাস আগে এক দুপুরে প্রতিবেশী যুবক মৃত শেখ আজিজের ছেলে শেখ আতাহার (২৩) কিশোরীকে ডেকে নিয়ে নিজ বাড়িতে ধর্ষণ করার পর ঘটনা ফাঁস না করার জন্য শাসিয়ে দেয়। ঘটনাটি চাপা থাকার ফলে সকলের অজান্তে ওই কিশোরী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। এ ধর্ষণের ঘটনাটি গত কয়েক দিন পর্যন্ত স্থানীয় মাতব্বররা আপস-মীমাংসার চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন বলে সোমবার বিকেলে জানিয়েছেন। ফলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া হেসেন জানান, এখন পর্যন্ত উক্ত কিশোরী বা তার পিতা-মাতা কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে আসেনি।
চরভদ্রাসন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজাদ খান বলেন, কিশোরীকে ধর্ষণের বিষয়টি নিয়ে দুপক্ষই আমার কাছে এসেছিল। গত কয়েক দিন পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে বারবার চেষ্টা করেও পক্ষদ্বয় আপস হতে পারেনি। তাই বাধ্য হয়ে বাদীপক্ষ মামলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
নির্যাতিত কিশোরীর বাড়িতে সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, একমাত্র মেয়ের জীবনে কালো মেঘ নেমে আসার কারণে কিশোরীর পিতা-মাতা আর্তনাদ করে চলেছেন। কিশোরীর মা জানান, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার সংসার। উক্ত কিশোরী সংসারের বড় সন্তান। কিছুদিন ধরে কিশোরী মেয়ে বারবার অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাক্তারি পরীক্ষা করার পর তিন মাসের গর্ভবতী ধরা পড়েছে।
কিশোরীর পিতা জানান, প্রতিবেশী আতাহার শেখ দুবাই দেশ থেকে ফেরত আসার পর এক বছর ধরে বাড়িতেই থাকে। ওই লম্পট আমার মেয়েকে একাধিক দিন ধর্ষণ করার পর প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ঘটনা চাপা রেখেছে। এখন আমার কিশোরী মেয়ে গর্ভবতী হওয়ার ফলে আমার পুরো পরিবারটি ধ্বংস হতে বসেছে।
অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী জানায়, আমাদের বাড়ির সাথে লাগনা আতাহারের বাড়ি। প্রায় তিন মাস আগে এক দুপুরে ওদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। সে আমার হাত ধরে টেনে নিজের ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করার পর কাউকে না বলার জন্য শাসিয়ে দেয়। ওই দিন আতাহারের বাড়িতে কেউ ছিল না। এরপর আরো দুদিন সে আমাকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। আমি ভয়ে এবং লজ্জায় ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানােইনি। এতে আমার শরীর দিন দিন অসুস্থ হওয়ার পর পারিবারিকভাবে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়।
এদিকে, ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর গত কয়েক দিন ধরে ওই যুবক আতাহার শেখ গা-ঢাকা দিয়েছে। আতাহার শেখের বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে মুঠোফোনে কিশোরীকে ধর্ষণের কথা জিজ্ঞাসা করলে আতাহার শেখ জানায়, যেহেতু এলাকায় আমার নাম প্রকাশ হয়েছে। তাই অপকর্ম করলেও করেছি, না করলেও করেছি। এলকার মুরব্বিরা যদি ওই কিশোরীর সাথে আমার বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়, তাতেই আমি রাজি আছি।
আতাহার শেখের মা মমতাজ বেগম জানান, ধর্ষনের ঘটনা ঘটে থাকলে ওই কিশোরীর সাথে ছেলের বিয়ে দিয়ে দেব।
বিডিনিউজইউরোপটোয়েন্টিফোরডটকম/৫জুলাই/জই